সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলন এক দিনের জন্য স্থগিত করেছে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকfলে সচিবালয়ে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে আগামীকাল বুধবার সচিবালয়ের কার্যক্রম চলবে স্বাভাবিক নিয়মে।
আন্দোলনকারী নেতারা বলছেন, সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনাকারী সচিবরা বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশিদকে আন্দোলনকারীদের দাবি-দাওয়া অবহিত করবেন। আন্দোলনকারী সংগঠনগুলোর প্রত্যাশা, সরকারের উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি আলোচিত হলে আশানুরূপ সমাধান মিলবে।
এর আগে মঙ্গলবার সকালেই সচিবালয়ে এক জরুরি বৈঠক করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশিদ। বৈঠকে বেশ কয়েকজন সচিব উপস্থিত ছিলেন। ওই সভায় সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে আলোচনার দায়িত্ব দেওয়া হয় ভূমি সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদকে।
আরো পড়ুন:
সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলন স্থগিত
আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সচিবদের বৈঠক শুরু
এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার বিকাল পৌনে ৩টায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে শুরু হয় আলোচনা। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ভূমি সচিব নিজে। সরকারের পক্ষে আলোচনায় অংশ নেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব।
অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের পক্ষে অংশ নেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের দুই পক্ষের শীর্ষ নেতারা। উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সভাপতি মো.
মঙ্গলবার ছিল আন্দোলনের চতুর্থ দিন। গত শনিবার (২৪ মে) থেকে সচিবালয়ের কর্মচারীরা কালো ব্যাজ ধারণ, কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। তাদের প্রধান দাবি সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ সম্পূর্ণরূপে বাতিল করতে হবে। কর্মচারীদের অভিযোগ, এই অধ্যাদেশ তাদের প্রশাসনিক নিরাপত্তা হ্রাস করবে এবং স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ সৃষ্টি করবে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া সচিবরা বুধবার বিষয়টি মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে জানাবেন। এরপরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানা যাবে বলে জানিয়েছে আন্দোলনরত সংগঠন। তবে আন্দোলনকারীরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, আশানুরূপ অগ্রগতি না হলে আন্দোলন আরো বৃহত্তর রূপ পাবে।
সরকারি চাকরিজীবীদের এই আন্দোলন সচিবালয়ের ভেতরে প্রশাসনিক কাজে বড় প্রভাব ফেলেছে। যদিও বুধবারের জন্য কর্মসূচি স্থগিত থাকছে, তবু সংশ্লিষ্ট মহলে স্পষ্ট আন্দোলনের মূল প্রশ্নটি এখনো অমীমাংসিত।
ঢাকা/এএএম/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত সরক র র মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
আগামীকালও সচিবালয়ে বিক্ষোভ, দেশব্যাপী সরকারি দপ্তরেও একই কর্মসূচি পালনের আহ্বান
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রত্যাহারের দাবিতে আগামীকাল মঙ্গলবার আবারও বিক্ষোভ-মিছিলের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ। একইসঙ্গে একই ধরনের কর্মসূচি পালনের জন্য সারা দেশের সরকারি দপ্তরের কর্মচারীদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে সংগঠনটি।
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো.বাদিউল কবীর সমকালকে বলেন, আগামীকাল সারাদেশের দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একই কর্মসূচি পালনের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে দপ্তর-সংস্থার বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠনের সঙ্গে আজ রাতের মধ্যে বৈঠক হবে।
তিনি আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে মিছিল নিয়ে সচিবালয় চত্বরের বাদামতলায় সমবেত হওয়ার আহ্বান জানান।
আজকে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে উপদেষ্টা রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ত থাকায় আজ সেই বৈঠকটি সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান বাদিউল কবীর। আবার বৈঠকের সময় ঠিক হলে তা সাংবাদিকদের জানিয়ে দেওয়া হবে বলেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধন করে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ -এর খসড়া অনুমোদনের পর গতকাল অধ্যাদেশ জারি করা হয়। কর্মচারীদের অভিযোগ, সাড়ে চার দশক আগের বিশেষ বিধানের কিছু ‘নিবর্তনমূলক ধারা’ সংযোজন করে অধ্যাদেশটি করা হয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে খসড়াটি অনুমোদনের পর থেকেই এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। তারা এই অধ্যাদেশকে ‘নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।