অর্থকষ্টে জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন, টিকিট ছাড়াই ট্রেনে চেপে বসা ছিল নিয়মিত ঘটনা। পরে সিনেমায় অভিনয়ের স্বপ্ন নিয়ে মুম্বাই এসেও শুরুতে সুযোগ হয়নি। কখনো কখনো সুযোগ মিলত এক্সট্রা চরিত্রে, পারিশ্রমিক হিসেবে যা মিলত, বেশির ভাগই দিয়ে দিতে হতো কাস্টিং সমন্বয়কারীদের। অথচ তাঁর এখন মুম্বাইয়ের বুকে রাজপ্রাসদসম বাড়ি। হচ্ছিল হিন্দি সিনেমার এই সময়ের অন্যতম শীর্ষ অভিনেতা নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকীর কথা। ১৯ মে অভিনেতার জন্মদিন। এ উপলক্ষে জেনে নেওয়া যাক অভিনেতার জীবনের নানা জানা-অজানা কথা।

নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী। এএনআই.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন মোর্শেদ অমর্ত্য

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম। অমর্ত্যর পক্ষে তাঁর আইনজীবী আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আজ সোমবার আপিলটি করেন।

মোর্শেদ অমর্ত্যর আইনজীবী মো. আজিজুর রহমান দুলু প্রথম আলোকে বলেন, আপিলে হাইকোর্টের রায় বাতিল চাওয়া হয়েছে। অমর্ত্যকে খালাস দেওয়ার আরজি রয়েছে।

এর আগে আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখে গত ১৬ মার্চ হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন। হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখেন। গত মাসের শেষ দিকে ১৩১ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।

আপিলের উল্লেখযোগ্য যুক্তি সম্পর্কে আইনজীবী বলেন, অমর্ত্যকে কোনো বিশেষজ্ঞ সাক্ষী শনাক্ত করেননি। ফলে মামলার ঘটনাস্থলে তাঁর উপস্থিতি সুনিশ্চিত নয়, বরং সন্দেহপূর্ণ; চার সাক্ষীর কেউই বলেননি যে অমর্ত্য হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ ও আঘাত করেছেন। অথচ ট্রাইব্যুনালের রায়ে বলা হয়েছে, অংশগ্রহণ করেছেন, যা জালিয়াতির শামিল। ট্রাইব্যুনালের দেওয়া এ রায়ের বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ে কোনো আলোচনা করা হয়নি; অর্মত্য কোনো দোষ স্বীকার করেননি অথচ তাঁকে দোষ স্বীকারোক্তি প্রদানকারী আসামি হিসেবে উল্লেখ করে রায় বহাল রাখা হয়। মামলায় অমর্ত্য ঘটনায় জড়িত, তা কোনোভাবে প্রমাণিত হয়নি বলে আপিলে যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে।

সাড়ে পাঁচ বছর আগে বুয়েটের একটি হলে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডে দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের সবাই ছিলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের (এখন নিষিদ্ধ সংগঠন) নেতা-কর্মী। এ ঘটনায় করা মামলায় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রায় দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। বিচারিক আদালতের রায়ে ২০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরপর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন), আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত ১৬ মার্চ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন বহাল থাকা আসামি

মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা ২০ আসামির সবাই বুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তাঁরা হলেন মেহেদী হাসান (রাসেল), মো. অনিক সরকার, মেহেদী হাসান (রবিন), ইফতি মোশাররফ, মো. মনিরুজ্জামান, মো. মেফতাহুল ইসলাম, মো. মাজেদুর রহমান, মো. মুজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাককারুল ইসলাম, হোসাইন মোহাম্মদ তোহা, মো. শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, মুনতাসির আল (জেমি), মো. শামসুল আরেফিন, মো. মিজানুর রহমান, এস এম মাহমুদ, মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল, এহতেশামুল রাব্বি ও মুজতবা রাফিদ।

এই ২০ জনের মধ্যে বিচারিক আদালতের রায়ের সময় থেকেই তিনজন পলাতক। তাঁরা হলেন মোর্শেদ-উজ-জামান, এহতেশামুল রাব্বি ও মুজতবা রাফিদ।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরেক আসামি মুনতাসির আল (জেমি) গত বছরের ৬ আগস্ট গাজীপুরের হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে যান। বিষয়টি গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায় কারা কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল থাকা আসামিরা হলেন মুহতাসিম ফুয়াদ হোসেন, মো. আকাশ হোসেন, মুয়াজ আবু হুরায়রা, অমিত সাহা ও ইশতিয়াক আহমেদ। এ মামলায় সব মিলিয়ে দণ্ডিত ২৫ আসামির মধ্যে ৪ জন পলাতক বলে রায় ঘোষণার দিন (গত ১৬ মার্চ) জানিয়েছিল রাষ্ট্রপক্ষ।

খন্দকার তাবাককারুল ইসলামসহ মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা সাত আসামির অন্যতম আইনজীবী মাসুদ হাসান চৌধুরী আজ প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের রায়ের নকল (প্রত্যায়িত অনুলিপি) হাতে পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হয়। কোনো আসামির ক্ষেত্রে নকল পেয়েছেন। অপর আসামিদের ক্ষেত্রে অনুলিপি এখনো হাতে আসেনি। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আপিল করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ