আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেল সংযোগ নির্মাণের ব্যয় ৯ কোটি ১৪ লাখ ৬২ হাজার ৯৫৩ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেই সঙ্গে জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশনের ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণ সংক্রান্ত কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের আওতায় ১৪১ কোটি ৩ লাখ ৬১ হাজার ৮০০ টাকায় পরমর্শক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড.

সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দুই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে ‘আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেল সংযোগ নির্মাণ (বাংলাদেশ অংশ) প্রথম সংশোধিত’ প্রকল্পের একটি প্যাকেজের পূর্ত কাজের দ্বিতীয় ভেরিয়েশনের প্রস্তাব নিয়ে আসা হলে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রস্তাবটি অনুমোদন দিয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনে ‘আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেল সংযোগ নির্মাণ (বাংলাদেশ অংশ)’ প্রকল্পের প্যাকেজ ডব্লিউডি-১ এর পূর্ত কাজ ২৪০ কোটি ৯০ লাখ ৬৩ হাজার ৫০১ টাকায় টেক্সম্যাকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড থেকে ক্রয়ের চুক্তি করা হয়।

পরবর্তীতে প্রথম ভেরিয়েশনে চুক্তিমূল্য কমিয়ে ২২৬ কোটি ৭৩ লাখ ৫৩ হাজার ৫৩৮ টাকা করা হয়। কিন্তু দ্বিতীয় ভেরিয়েশনে ১৫টি নন-সিডিউল আইটেম যুক্ত হওয়ায় অতিরিক্ত ৯ কোটি ১৪ লাখ ৬২ হাজার ৯৫৩ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রয়োজন পড়ে। তার প্রেক্ষিতেই এই ব্যয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এই প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৯ দশমিক ৫০ শতাংশ। আর আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৮০ দশমিক ৫০ শতাংশ।

এদিকে ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশনের ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণ (প্রকৌশল সেবা) সংক্রান্ত কারিগরি সহায়তা’ প্রকল্পের আওতায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের ক্রয় পস্তাব দেয় রেলপথ মন্ত্রণালয়। এই প্রস্তাবটিও অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।

জানা গেছে, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশনের ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণ (প্রকৌশল সেবা) সংক্রান্ত কারিগরি সহায়তা’ প্রকল্পের আওতায় পরামর্শক সেবা ক্রয়ের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত ৩টি প্রতিষ্ঠানের নিকট রিকুয়েস্ট ফর প্রপোজাল ইস্যু করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠানই কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাব দাখিল করে।

তিনটি প্রস্তাব কারিগরিভাবে যোগ্য বিবেচিত হয়। প্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে পিইসির নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে সুপারিশ করা সর্বোচ্চ স্কোর অর্জনকারী দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে ওসিজি, সিএইচওডিএআই, জেআইসি, এসএমইসি, এসিই এবং ডিডিসি-কে ১৪১ কোটি ৩ লাখ ৬১ হাজার ৮০০ টাকায় প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

প্রকল্পটি একনেক থেকে অনুমোদিত হয় ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর। এর মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

ঢাকা/হাসনাত/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প র প রস ত ব উপদ ষ ট অন ম দ মন ত র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ