সেন্টমার্টিনে পর্যটক বন্ধের সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ীদের হতাশা
Published: 29th, January 2025 GMT
আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে দেশের একমাত্র প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৩১ জানুয়ারির পর পর্যটকবাহী কোনো জাহাজ সেখানে যেতে পারবে না।
এমন সিদ্ধান্তে দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দারা ও পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পর্যটন মৌসুমের মাঝপথে এমন নিষেধাজ্ঞা তাদের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন তারা।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় জানানো হয়েছে, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মাসের জন্য অর্থাৎ অক্টোবর পর্যন্ত সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। এ কারণে ৩১ জানুয়ারির পর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।
আরো পড়ুন:
সাজেকে গাড়ি উল্টে ৬ পর্যটক আহত
পঁচিশের সূর্যোদয় দেখা হলো না কুয়াকাটার পর্যটকদের
সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ চলাচল ও পর্যটন নিয়ন্ত্রণ কমিটির আহ্বায়ক এবং কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পর্যটকরা সেন্টমার্টিনে যেতে পারবেন। এরপর আর কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ চলবে না।
সেন্টমার্টিনের পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা এ সিদ্ধান্তে হতাশ হয়ে পড়েছেন। হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি এম এ রহিম জিহাদী জানান, অতীতে এমন পরিস্থিতি কখনো হয়নি। যদি পর্যটক আসা বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে দ্বীপের হাজার হাজার মানুষ সংকটে পড়বে। মানবিক বিবেচনায় অন্তত ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত পর্যটকদের আসার সুযোগ দেওয়া উচিত।
সি-ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুরও একই দাবি জানিয়ে জানান, অন্তত ফেব্রুয়ারি মাসটা পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হোক। এতে ব্যবসায়ীরা কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মালেক জানান, শুধু দুই মাসের আয় দিয়ে পুরো বছর চলা সম্ভব নয়। অন্তত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপে পর্যটক প্রবেশের অনুমতি চান তিনি।
এ বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান হোসাইন সজীব জানান, ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করবে। এরপর আর কোনো জাহাজ সেন্টমার্টিনে যাবে না। তবে সরকার যদি সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সেন্টমার্টিনের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা ও অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণের জন্যই মূলত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে নাফ নদীতে নাব্য সংকট ও মিয়ানমার সীমান্তে সংঘর্ষের কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথ বন্ধ রাখা হয়েছে। বর্তমানে কক্সবাজার থেকে ছয়টি জাহাজ পর্যটক পরিবহন করছিল, যা ৩১ জানুয়ারির পর বন্ধ হয়ে যাবে।
ঢাকা/তারেকুর/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৩১ জ ন য় র র জন য ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেট, মিরাজ ধন্যবাদ দিলেন ৬ জনকে
এক দিনেই কত কীর্তি গড়লেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর তাঁকে ছেড়ে একা আর সংবাদ সম্মেলনে আসতে চাইলেন না অধিনায়ক নাজমুল হোসেন।
মিরাজ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের পর ফটোগ্রাফারদের আবদার মেটাতে ব্যস্ত বলে কিছুটা অপেক্ষাও করলেন। এরপর মিরাজের তাড়া ছিল নামাজে যাওয়ারও, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া শেষে তাই একরকম দৌড়ে যান ড্রেসিংরুমে।
এর আগে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গেছেন ছয়জনকে। মিরাজ দিনের শুরুটা করেছিলেন ব্যাটিংয়ে, শেষটা করেছেন বোলিংয়ে। ব্যাটিং, বোলিং মিলিয়ে চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনে একটার পর একটা রেকর্ড গড়েছেন মিরাজ।
ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি করেছেন, সেঞ্চুরির পথে দুই হাজার রানের মাইলফলক ছুয়েছেন; দুই শ উইকেট আর দুই হাজার রানের কীর্তিতে নাম লিখিয়েছেন সাকিবের পাশে, যদিও ম্যাচ একটি কমও খেলেছেন।
আবার বল হাতে জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন ৫ উইকেট। একই ম্যাচে সেঞ্চুরির সঙ্গে ৫ উইকেটের কীর্তিতে সাকিব আর সোহাগ গাজীর সঙ্গে এখন তাঁর নামও। এত সব কীর্তি গড়ার পর সংবাদ সম্মেলনে এসে মিরাজ বললেন, ‘শুরুতে আমি দুইটা মানুষকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’ ওই দুটি ধন্যবাদই ছিল ব্যাটিংয়ের জন্য।
বিসিবির কোচ মিজানুর রহমানকে ধন্যবাদ দিয়েছেন ‘অনেক দিন ধরে কাজ করা’ ব্যাটিংয়ে উন্নতিতে অবদানের জন্য। মিরাজের পরের কৃতজ্ঞতাটা শুনুন তাঁর মুখেই, ‘আমাদের দলের যে ম্যানেজার আছেন, নাফিস ইকবাল ভাই আমাকে সব সময় বুস্টআপ করে। আজকেও যখন ব্যাটিংয়ে যাচ্ছিলাম, বারবার একটা কথা বলছিল, মিরাজ, তুই কিন্তু প্রপার ব্যাটসম্যান, তোর কিন্তু এক শ আছে। দুইটা মানুষকে (মিজান ও নাফিস) অবশ্যই মনের ভেতর থেকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’
কিন্তু মিরাজের সব কীর্তি তো আর ব্যাটিংয়ে নয়। বোলিংয়েও ৫ উইকেট পেয়েছেন। সিলেটে আগের ম্যাচে উইকেট পেয়েছিলেন ১০টি। এ কৃতজ্ঞতাও একজনের জন্য রাখলেন মিরাজ, ‘বোলিংটা খুব ভালো হয়েছে। বোলিং তো আমার দলের সঙ্গেই আছে, আমার গুরু যে সোহেল ইসলাম (জাতীয় দলের স্পিন বোলিং কোচ)। অবশ্যই এই তিনটা মানুষকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’
ধন্যবাদ দেওয়ার সংখ্যাটা তিনে গিয়েই থামেনি মিরাজের। আজকে যে তিনি সেঞ্চুরিটা পেলেন, তাতে তো অবদান আছে তাঁর সঙ্গীদেরও। তাইজুল ইসলাম ৪৫ বলে ২০, তানজিম হাসান ৮০ বলে ৪১ আর রান না করতে পারলেও হাসান মাহমুদ ১৬ বল খেলেছেন বলেই না সেঞ্চুরি করার সময়টা পেলেন মিরাজ।
একসময় সেঞ্চুরিটাকে ‘কপালের ওপর’ ছেড়ে দেওয়া মিরাজ ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁদেরও, ‘হাসান অনেক ভালো সমর্থন দিয়েছে, তানজিমও অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে, তাইজুল ভাইও। আমি অবশ্যই এই তিনজনকে ধন্যবাদ দিতে চাই। ওরা যেভাবে আমাকে সমর্থন দিয়েছে, ওদের জন্যই আমি এক শ করতে পেরেছি।’