ঘটনায় জড়িত কারা এই সশস্ত্র বিএলএ যোদ্ধা
Published: 13th, March 2025 GMT
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে সাম্প্রতিক ট্রেন হাইজ্যাকের ঘটনায় নতুন করে আলোচনায় এসেছে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। মঙ্গলবার জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি কোয়েটা থেকে পেশাওয়ার যাওয়ার পথে বেলুচিস্তানের একটি পাহাড়ি টানেলের কাছে সশস্ত্র বিএলএ যোদ্ধারা ট্রেনটি হাইজ্যাক করে।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী কয়েক ঘণ্টার সামরিক অভিযানের পর ট্রেনের ৩৪৬ যাত্রীকে উদ্ধার করে এবং ৩৩ জন হামলাকারীকে হত্যা করে। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক জেনারেল আহমেদ শরীফ জানায়, এই অভিযানে ২৭ জন সাধারণ নাগরিক, ট্রেনের চালক এবং একজন আধা-সামরিক বাহিনীর সেনা সদস্য নিহত হন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিএলএ তাদের হামলার মাত্রা ক্রমাগত বাড়িয়েছে। ২০২৩ সালে সংগঠনটি ১৫০টিরও বেশি হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে বেশিরভাগই পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী ও চীনা নাগরিকদের লক্ষ্য করে করা হয়েছে। তবে এই ট্রেন হাইজ্যাক ছিল সংগঠনটির অন্যতম বড় ও প্রকাশ্য হামলা।
বিএলএ কী এবং কেন এই হামলা?
বেলুচিস্তান,পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় কিন্তু সবচেয়ে কম জনবসতিপূর্ণ প্রদেশ যা বহু বছর ধরেই বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। প্রদেশটি খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ, যার মধ্যে রয়েছে কয়লা, সোনা, তামা ও প্রাকৃতিক গ্যাস। তবুও এটি পাকিস্তানের সবচেয়ে দরিদ্র অঞ্চলগুলোর একটি।
বিএলএ পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন, যা সম্পূর্ণ স্বাধীন বেলুচিস্তান রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছে। সংগঠনটি ১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে আত্মপ্রকাশ করে এবং ২০০০-এর দশকে তারা আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তাদের দাবি, পাকিস্তান রাষ্ট্র বেলুচিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদ শোষণ করছে এবং স্থানীয় জনগণকে বঞ্চিত করছে।
বিএলএ-এর মূল দাবি ও লক্ষ্য
বিএলএ বরাবরই বলেছে যে তারা পাকিস্তান থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা চায়। যেখানে অন্যান্য বেলুচ জাতীয়তাবাদী দল প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন চায় সেখানে বিএলএ সম্পূর্ণ বিপরীত দিকে।
পাকিস্তান সরকারের কাছে তারা সম্পূর্ণ স্বাধীন বেলুচিস্তান দাবি করে। তারা চায় পাকিস্তানের অধীন থেকে বেরিয়ে এসে একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র গঠন করতে।
প্রাকৃতিক সম্পদের মালিকানা। সংগঠনটির মতে, বেলুচিস্তানের বিপুল খনিজ সম্পদ যেমন তামা, সোনা, গ্যাস, কয়লা ও অন্যান্য খনিজ সম্পদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বেলুচ জনগণের হাতে থাকা উচিত।
চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (CPEC) ও গওয়াদার প্রকল্পের বিরোধিতা করেও তারা কাজ করছে। চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের যৌথ উন্নয়ন প্রকল্প বিএলএ-এর অন্যতম প্রধান শত্রু। তারা মনে করে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে চীন ও পাকিস্তান যৌথভাবে বেলুচিস্তানের সম্পদ লুট করছে।
এবং পাকিস্তানি সামরিক অভিযানের প্রতিশোধ নিতেও তারা বদ্ধ পরিকর। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বহু বছর ধরে বেলুচিস্তানে সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে, যার ফলে অনেক বেলুচ নাগরিক নিখোঁজ বা নিহত হয়েছে। বিএলএ এই দমননীতির জবাব সশস্ত্র প্রতিরোধের মাধ্যমে দিচ্ছে।
কারা দিচ্ছে বিএলএ-এর নেতৃত্ব?
প্রথম দিকে বিএলএ-এর নেতৃত্ব ছিল বেলুচ উপজাতির মাররি গোষ্ঠীর হাতে। তবে বর্তমানে সংগঠনটি শিক্ষিত বেলুচদের নেতৃত্বে চলছে। বিএলএ বর্তমান প্রধান বশির জায়ব বালোচ। যিনি ২০১৮ সালে আসলাম বালোচ নিহত হওয়ার পর নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। এরপর যার নাম জানা যায় তিনি হলেন হাম্মাল রেহান। তিনি মজিদ ব্রিগেড নামক আত্মঘাতী ইউনিটের প্রধান, যা চীনা নাগরিক ও পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর হামলা পরিচালনা করে।
এবং রেহমান গুল যিনি বালোচ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য। রেহমান বিদ্রোহীদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেন এবং তাদের আক্রমণের কৌশলগত দক্ষতা বাড়ান।
বিএলএ-এর অর্থায়নের মূলে কারা?
বিএলএ-এর অর্থায়নের মূল উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া কঠিন হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তারা বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে। মাদক পাচার ও চোরাচালান, কয়লা খনির থেকে অবৈধ টোল আদায়, বিচ্ছিন্নতাবাদী বেলুচ অভিবাসীদের অনুদান, চীনা প্রকল্পের ঠিকাদার ও কর্মকর্তাদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়।
তবে পাকিস্তান সরকার বারবার অভিযোগ করেছে যে ভারত বিএলএ-কে সমর্থন ও অর্থায়ন করে। যদিও এই দাবির পক্ষে শক্ত কোন প্রমাণ নেই।
কিভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই বিএলএ?
বিএলএ স্বাভাবিকভাবে তরুণ বেলুচদের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। তারা উচ্চশিক্ষিত বেলুচদের সংগঠনে যুক্ত করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তানি সরকারের অব্যবস্থাপনা, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং বেলুচ জনগণের প্রতি বঞ্চনামূলক নিপীড়ননীতি এই সংগঠনের প্রতি বেলুচদের সমর্থন বৃদ্ধি করছে। যদিও বেলুচ নিখোঁজ ব্যক্তিদের আন্দোলনের ফলে অনেক তরুণ সশস্ত্র সংগ্রামের পথে যাচ্ছে। বিএলএ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সক্রিয়ভাবে প্রচার চালায় এবং তাদের হামলার ভিডিও ও বিবৃতি প্রকাশ করে তরুণদের মধ্যে নিজেদের সংগঠনের শক্তিশালী ভাবমূর্তি তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে।
কেমন হতে পারে বিএলএ-এর ভবিষ্যৎ?
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিএলএ বিচ্ছিন্নভাবে হামলা করেই চলেছে বাড়িয়েছে। তারা পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ছাড়াও চীনা প্রকল্পগুলোকেও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। তবে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বিএলএ দমনে কঠোর অভিযান চালাচ্ছে, যার ফলে সংগঠনটির অস্তিত্ব রক্ষা করা কঠিন হয়ে উঠছে। তবে, পাকিস্তান সরকারের দমনমূলক নীতি অব্যাহত থাকলে এবং বেলুচিস্তানের জনগণের জন্য প্রকৃত উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ না নেওয়া হলে, বিএলএ-এর মতো সংগঠনের প্রতি সহানুভূতি আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিএলএ বর্তমানে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর অন্যতম প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে। এর আগে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিএলএ বিদ্রোহীরা এক বাস থামিয়ে সাতজন পাঞ্জাবি যাত্রীকে হত্যা করে। ২০২৩ সালে সংগঠনের চালানো সমন্বিত হামলায় অন্তত ৩৯ জন নিহত হয়েছিল, যাদের বেশিরভাগই জাতিগত পাঞ্জাবি ছিলেন। গত নভেম্বরে কোয়েটার প্রধান রেলস্টেশনে এক বোমা হামলার দায়ও বিএলএ স্বীকার করেছিল, যেখানে ১৪ জন সেনাসদস্যসহ মোট ২৬ জন নিহত হন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, তারা এখন আরও সংগঠিত ও দক্ষতার সাথে হামলা চালাচ্ছে এবং চীনা নাগরিকদের ওপর হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাদের দাবি তুলে ধরার চেষ্টা করছে। তবে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কঠোর অভিযানের মাধ্যমে সংগঠনটিকে নির্মূল করতে চাইছে। সেনাবাহিনীর দাবি তারা বিএলএ-এর শক্তি দুর্বল করতে সক্ষম হচ্ছে।
তবে যদি পাকিস্তান সরকার বেলুচিস্তানের উন্নয়ন, মানবাধিকার রক্ষা এবং বেলুচ জনগণের রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করতে না পারে তাহলে ভবিষ্যতে বিএলএ-এর মতো সংগঠন আরও শক্তিশালী হতে পারে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সশস ত র স গঠন প ক স ত ন সরক র প রকল প ব এলএ ব সশস ত র ব এলএ স স গঠন র স গঠনট জনগণ র
এছাড়াও পড়ুন:
আমরা ধর্মকে কখনো ব্যবহার করিনি, করব না: জামায়াতের আমির
‘আমরা ধর্মকে কখনো ব্যবহার করিনি, করব না’—এই দাবি করে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘ধর্ম আমাদের চিন্তার অঙ্গ, আমাদের কলিজার অংশ। আমরা ধর্ম নিয়েই কাজ করি, ধর্মকে ব্যবহার করি না।’
কারা ধর্মকে ব্যবহার করেন, সে প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, ‘নির্বাচনের সময় নতুন করে যাঁরা বেশি বেশি নামাজ শুরু করেন, টুপি পরেন, তসবিহ হাতে নিয়ে ঘোরেন, ধর্মকে তাঁরাই বোধ হয় সম্ভবত ব্যবহার করেন। আমরা কিন্তু সারা বছর তসবিহ হাতে নিয়ে ঘুরাই না, তসবিহ বুকে নিয়ে ঘুরাই। আমরা আমাদের কাজগুলো আমাদের বিশ্বাসের আওতায় করতে চাই। এখন যে যেভাবে বোঝেন, এটা তাঁদের ব্যাপার।’
জামায়াত ও তাদের মিত্র দলগুলো ধর্মকে ব্যবহার করছে—বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে এমন ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন শফিকুর রহমান। আজ সোমবার ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দূতাবাসে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউর উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
জাতীয় নির্বাচন পেছানোর কোনো শঙ্কা দেখেন কি না– এ প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা নির্বাচন পেছানোর কোনো সুযোগ আছে বলে মনে করি না। এটা উচিত নয় বলে মনে করি। আমরা মনে করি, ফেব্রুয়ারির ঘোষিত সময়সীমার ভেতরে নির্বাচন হওয়াই দেশের জন্য একান্ত প্রয়োজন। এর সামান্য কোনো ব্যত্যয় ঘটলে দেশ দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারও দ্বারাই দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হোক, তা আমরা চাই না। আমরা দল বা ব্যক্তির জন্য রাজনীতি করি না। আমাদের রাজনীতি জনগণের জন্য। কথায় নয়, কাজে আমরা এটার প্রমাণ দিতে চাই।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কারণে রাজনীতিতে কোনো সংকট দেখছেন কি না, জামায়াত আমিরকে এমন প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা। জবাবে তিনি বলেন, ‘সুস্থতা-অসুস্থতা আল্লাহ তাআলার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল। দেশবাসী তাঁর অসুস্থতার জন্য তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে দোয়া করছে। কিন্তু আমিও তো মরব। আমরা কেউ তো চিরদিন থাকব না। আমাদের এই দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হবে। আমাদের বিদায় নেওয়ার সঙ্গে সমাজের চাকা চলা-অচল হওয়ার সম্পর্ক থাকা উচিত নয়। তবে যাঁর যেটুকু শ্রদ্ধা-ভালোবাসা পাওয়ার, সে যেন সেটা পায় সেদিকে সবার খেয়াল রাখা উচিত।’
আরও পড়ুন’৭১-এ জামায়াত কী কী করেছিল, মনে রাখতে বললেন তারেক রহমান০৭ ডিসেম্বর ২০২৫‘২০০ আসনে জিতলেও জাতীয় সরকার করবে জামায়াত’ইইউ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব কীভাবে হবে, সব মানুষের নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত হবে, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান কীভাবে হবে—এসব বিষয়ে জামায়াতের চিন্তাভাবনা জানতে চাওয়া হয় বৈঠকে। জামায়াত নির্বাচিত হলে প্রথম ১০০ দিনে জনগণের প্রতি তাদের কী বক্তব্য বা করণীয় থাকবে, সে ব্যাপারেও জানতে চাওয়া হয়।
‘আমরা বলেছি, আমাদের সবকিছুই ফ্রেম করা আছে। যখন যেটা প্রযোজ্য, সেটা আমরা সামনে রিলিজ (প্রকাশ) করব,’ বলেন জামায়াত আমির।
আরও পড়ুনধর্মের নামে ট্যাবলেট বিক্রি করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণার পরিকল্পনা চলছে: সালাহউদ্দিন আহমদ৭ ঘণ্টা আগেইইউর প্রতিনিধিরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ দেখতে চান উল্লেখ করে শফিকুল রহমান বলেন, ‘আমরা বলেছি, আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা ও দেশের জনগণের ভালোবাসায় আমরা নির্বাচিত হলে সেই অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশই আমরা গড়ব, ইনশাআল্লাহ। আমরা কোনো দলকেই বাদ দেব না। আমরা দেশের স্বার্থে দারুণভাবে অনুভব করি যে অন্তত আগামী পাঁচটা বছর দেশের স্থিতিশীলতা, অর্থনীতি ফিরিয়ে আনা, সমাজে আইনের শাসন কায়েম করা এবং সমাজ থেকে দুর্নীতিকে নির্মূল করা বা বিদায় দেওয়ার জন্য প্রয়োজন একটি জাতীয় সরকারের। আমরা নির্বাচিত হলে সেই সরকারটাই গঠন করব।’
জামায়াতের সঙ্গে জাতীয় সরকারে যাঁরা থাকবেন, তাঁদের কাছে দুটি প্রত্যাশার কথাও উল্লেখ করেন শফিকুর রহমান। এগুলো হলো—এক, কেউ নিজে দুর্নীতি করবেন না এবং দুর্নীতিকে কোনোভাবে প্রশ্রয় দেবেন না; দুই, সবার জন্য সমান বিচার নিশ্চিত করা, এ ব্যাপারে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ না করা। কমপক্ষে এই দুটি ব্যাপারে যাঁরা একমত হবেন, তাঁদের নিয়ে সরকার গঠন করতে আগ্রহী জামায়াত। শফিকুর রহমান বলেন, ‘এমনকি আল্লাহর যদি ইচ্ছা হয় যে ২০০ আসনেও আমরা বিজয়ী হয়ে যাই, তারপরও আমরা এটা করব, ইনশাআল্লাহ।’
একই দিনে সাধারণ নির্বাচন ও গণভোট সম্পর্কে জামায়াত আমির ইইউর প্রতিনিধিদের বলেছেন, একই দিনে দুটো নির্বাচন হলে দুটো নির্বাচনই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে। ভোটার টার্নওভার কম হতে পারে। সেজন্য জামায়াত দুটো নির্বাচন আলাদা আলাদা করার দাবি জানিয়েছিল বলেও তিনি বৈঠকে উল্লেখ করেন।
এর বাইরে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতির নির্বাচন, দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অভিবাসন, শিক্ষা বিনিময়, অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ইত্যাদি বিষয়েও ইইউ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানান জামায়াতের আমির।