রাজশাহীতে গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়েছে। এটি দেশের প্রথম ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্র। উদ্বোধন করেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বনসংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী। এ সময় নতুন এই প্রজনন কেন্দ্রে গাজীপুর সাফারি পার্ক থেকে নিয়ে আসা হয়েছে নতুন ঘড়িয়াল জুটিকে। 
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বন বিভাগের প্রকল্প পরিচালক ও উপপ্রধান বনসংরক্ষক গোবিন্দ রায়, বন বিভাগের ঢাকা অঞ্চলের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বনসংরক্ষক মো.

ছানাউল্ল্যা পাটওয়ারী, বগুড়া সামাজিক বন অঞ্চলের বনসংরক্ষক মো. সুবেদার ইসলাম, রাজশাহী সামাজিক বন বিভাগ ও বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রফিকুজ্জামান শাহ্, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এ এম সালেহ রেজা, আইইউসিএন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর এ বি এম সরোয়ার আলম, রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান শাহ্।
বন বিভাগের পবা নার্সারির রেসকিউ সেন্টারে ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্রটি করা হয়েছে। শহীদ জিয়া শিশু পার্ক রোডে এর অবস্থান। ঘড়িয়ালের নিরাপত্তায় নতুন প্রজনন কেন্দ্রটির সামনে একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে ঘড়িয়াল সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য লেখা রয়েছে। 
বন অধিদপ্তরের প্রধান বনসংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘নদীদূষণ, নাব্য হ্রাস, অতিরিক্ত মাছ আহরণ, অবৈধ শিকার, পাচার, ডিম নষ্ট হওয়া ও খাদ্য সংকটের কারণে ঘড়িয়ালের প্রজননে ব্যাঘাত ঘটে। এসব কারণে আজ তারা বিলুপ্তির পথে। এ কারণে প্রজনন কেন্দ্রে  ঘড়িয়ালের বংশ বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’ 
ঘড়িয়াল সংরক্ষণে এ উদ্যোগ নতুন নয়। ২০১৭ সালের ১৩ আগস্ট রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার একটি পুকুরে ঘড়িয়াল প্রজননের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে সময় চিড়িয়াখানায় দুটি স্ত্রী ঘড়িয়াল ছিল। একটিকে পাঠানো হয় ঢাকা চিড়িয়াখানায়, নাম রাখা হয় ‘যমুনা’। ঢাকায় ছিল চারটি পুরুষ ঘড়িয়াল। অন্যদিকে ঢাকা থেকে একটি পুরুষ ঘড়িয়াল এনে রাজশাহীর পুকুরে ছাড়া হয়, নাম দেওয়া
হয় ‘গড়াই’। রাজশাহীতে আগে থেকে থাকা স্ত্রী ঘড়িয়ালটির নাম হয় ‘পদ্মা’।
এই আন্তঃচিড়িয়াখানা বিনিময়ের মাধ্যমে ‘যমুনা’ ঢাকা চিড়িয়াখানায় তিনটি পুরুষ সঙ্গী পায়, আর রাজশাহীর ‘পদ্মা’ পায় ‘গড়াই’-কে। তবে আট বছরেও তাদের কোনো বাচ্চা হয়নি। কারণ ছিল প্রজননের অনুপযোগী পরিবেশ। এবার আইইউসিএন এবং সামাজিক বন বিভাগের যৌথ উদ্যোগে রাজশাহীতে গড়ে তোলা হলো ঘড়িয়ালের উপযোগী প্রজনন কেন্দ্র। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নদ ল প রজনন ক ন দ র বন ব ভ গ র

এছাড়াও পড়ুন:

করমজলে বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের ৬৫ বাচ্চার জন্ম

সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে মহাবিপন্ন বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপের ডিম ফুটে ৬৫টি বাচ্চা জন্ম নিয়েছে।

সোমবার (৫ মে) সকালে ডিম থেকে বাচ্চাগুলো ফুটে বের হয়। পরে সেগুলোকে কেন্দ্রের কচ্ছপ সংরক্ষণ প্যানে রাখা হয়েছে।

করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রজনন কেন্দ্রের একটি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ ৮২টি ডিম দেয়। সেগুলো বালুর নিচে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে সোমবার সকালে ৬৫টি বাচ্চা ডিম থেকে ফুটে বের হয়। বর্তমানে এসব বাচ্চাকে প্যানে রেখে লালন-পালন করা হচ্ছে। পরে এসব কচ্ছপকে বড় পুকুরে স্থানান্তর করা হবে।

আরো পড়ুন:

সুন্দরবন থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে ‘শিল্প বা প্রকল্প নয়’

সুন্দরবনে আগুন লেগে সাড়ে ৫ একর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত

তিনি আরো জানান, করমজলে ২০১৪ সালে বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপের প্রজনন কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে মাত্র ৮টি কচ্ছপ নিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে এ পর্যন্ত ৫২১টি ডিম থেকে মোট ৪৭৫টি কচ্ছপ বাচ্চা জন্ম নিয়েছে। বর্তমানে এই প্রজনন কেন্দ্রে ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৫৮টি বাটাশুর বাসকা কচ্ছপ রয়েছে।

ঢাকা/শহিদুল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • করমজলে ফুটেছে কাইট্টা কচ্ছপের ৬৫ ছানা
  • করমজলে বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের ৬৫ বাচ্চার জন্ম
  • বাংলাদেশে উল্লুক ও চশমাপরা হনুমান বিলুপ্তির ঝুঁকিতে
  • প্রজনন মৌসুমে হালদায় মরে ভেসে উঠল মা কাতলা মাছ
  • যমুনার ধারে দেখা পাখিটি