দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয়—এমন ব্যাংকের মধ্যে যারা এখনো বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করতে পারেনি, তাদের নিরীক্ষা প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার সময় বাড়ানো হয়েছে। সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর বাংলাদেশ ব্যাংক আইনি বাধ্যবাধকতা শিথিল করে এ–সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে।

গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ প্রজ্ঞাপনে জারি করে। তাতে যেসব ব্যাংক গত বছরের চূড়ান্ত নিরীক্ষা প্রতিবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয়নি, তাদের এই প্রতিবেদন জমার সময় ৩১ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে এসব ব্যাংককে তাদের বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংককে জমা দিতে হবে। ব্যাংকগুলো এই সময় দেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি বাধ্যবাধকতা থেকে ব্যাংকগুলোকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, সরকারের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী, আর্থিক বছর শেষ হওয়ার চার মাস বা ১২০ দিনের মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বছর শেষের নিরীক্ষিত আর্থিক হিসাব চূড়ান্ত করা হয়। এই হিসাব চূড়ান্ত করার আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হয়। একইভাবে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোকে হিসাব বছর শেষ হওয়ার ১২০ দিনের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ ঘোষণাসহ নিরীক্ষিত আর্থিক হিসাবের তথ্য জানাতে হয়। এত দিন নিয়ম মেনে এই ধারা অব্যাহত ছিল। বেশির ভাগ ব্যাংক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের বার্ষিক নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে লভ্যাংশ ঘোষণা করে আসছিল। এ বছর এসে তাতে কিছুটা বিপত্তি দেখা দিয়েছে।

আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মনীতি পরিপালন করতে গিয়ে দেশের বেসরকারি খাতের অর্ধেকের বেশি ব্যাংকের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন আটকে গেছে। একই অবস্থা রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোরও। ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কোনো কোনো ব্যাংক আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তি পায়নি। আবার কোনো কোনো ব্যাংককে অনাপত্তি দেওয়ার পর শেষ মুহূর্তে সেটি প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে অনেক ব্যাংক আর্থিক হিসাব চূড়ান্ত করতে পর্ষদ সভা ডেকেও পর তা বাতিল করে।

জানা যায়, গত মার্চে ব্যাংকগুলোর লভ্যাংশ ঘোষণা–সংক্রান্ত নতুন নীতিমালা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে বলা হয়, নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণে বা যথাযথ প্রভিশনিংয়ে ব্যর্থ যেসব ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিলম্ব সুবিধা নিয়েছে, তারা ২০২৪ সালের জন্য কোনো লভ্যাংশ দিতে পারবে না। এই শর্তের বেড়াজালে আটকে গেছে বেশির ভাগ ব্যাংকের লভ্যাংশ। এ ছাড়া গত ৫ আগস্টের পর মালিকানা-ব্যবস্থাপনা পরিবর্তিত হওয়া ব্যাংকগুলোর লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ, নিরাপত্তা সঞ্চিতিসহ আর্থিক বিভিন্ন সূচকের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বনিবনা হয়নি। এ কারণে এসব ব্যাংক আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে পারছে না। এ কারণে এসব ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে চলতি মাসের ৩১ মে পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ ড় ন ত করত ক আর থ ক

এছাড়াও পড়ুন:

‘সর্বদলীয় কনভেনশন’ ডেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি এবি পার্টির

‘সর্বদলীয় কনভেনশন’ ডেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আহ্বান জানিয়েছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান (মঞ্জু)। তিনি বলেছেন, পতিত স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সামাজিক, রাজনৈতিক, আইনি ও সাংবিধানিকভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।

শুক্রবার বিকেলে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন মজিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘গুম, খুন, গণহত্যা ও সীমাহীন লুটপাটসহ সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ। তারা নির্বাচনব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে হত্যা করে জনগণের বাক্‌স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিল।’

সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে বিদেশে যেতে সহায়তাকারী সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে মজিবুর রহমান বলেন, সব নাগরিককে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে ইমিগ্রেশন পার হতে দেওয়া হয়। তাহলে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বেলায় শৈথিল্য কেন? তিন দিনের মধ্যে এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

৫ আগস্টের পর দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে সামাজিকভাবে ‘বয়কট’ করেছে দাবি করে এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে প্রথমে বিএনপি ও জামায়াতের মতো বড় দলগুলো নীতিগতভাবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক চায়নি। দেশে পতিত স্বৈরাচার গুম, খুন ও ধর্ষণ করেছে। তবুও আমরা আওয়ামী প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না কেন?’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান দিদারুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, নাসরিন সুলতানা মিলি, সানি আবদুল হক, আলতাফ হোসাইন, শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, কেন্দ্রীয় শ্রমবিষয়ক সম্পাদক শাহ আবদুর রহমান, সড়ক ও জনকল্যাণ সহসম্পাদক মতিয়ার রহমান উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া এবি যুব পার্টির সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা) শাহজাহান বেপারী, স্বেচ্ছাসেবক ও জনকল্যাণবিষয়ক সহসম্পাদক তোফাজ্জল হোসাইন রমিজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব বারকাজ নাসির আহমাদ, নারী উন্নয়নবিষয়ক সহসম্পাদক শাহিনুর আক্তার শিলা, আমেনা বেগম, শিক্ষাবিষয়ক সহসম্পাদক ফয়সাল মনির, সহপ্রচার সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ, রিপন মাহমুদ, সহদপ্তর সম্পাদক শরন চৌধুরী, মশিউর রহমান মিলু, যুব পার্টির দপ্তর সম্পাদক আমানুল্লাহ সরকার রাসেল, যুবনেতা মাহমুদ আজাদ, রাশেদ, পল্টন থানার আহ্বায়ক আবদুল কাদের মুন্সী, যাত্রাবাড়ী থানার আহ্বায়ক আরিফ সুলতান রাফিউর রহমান ফাত্তাহ, মাহমুদুল হাসান আসিফ, সোলাইমান আল হাবিব, ফারহানুল ইসলাম ইফতি, সায়েমুল ইসলাম, জাওয়াদ হামিম, মাশরুর ইসলাম মাহিন, মেহরাজুল ইসলাম আদরসহ কেন্দ্রীয়, মহানগরী, যুব পার্টি ও ছাত্রপক্ষের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ