গত বছর মুক্তি পায় সঞ্জয় লীলা বানসালি নির্মিত ‘হীরামান্ডি: ডায়মন্ড বাজার’। ‘হীরামান্ডি’ অবিভক্ত ভারতের লাহোরের এক গণিকালয়ের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে এটি। যে গণিকালয়ের গল্পের চরিত্রদের হাত ধরে উঠে এসেছে— প্রেম, ক্ষমতা, বিশ্বাসঘাতকতা, উত্তরাধিকার এবং রাজনীতি।
পাকিস্তানের লাহোরের এই নিষিদ্ধপল্লী থেকে উঠে আসা এক যৌনকর্মী ষাটের দশকে রুপালি জগতে হিল্লোল তুলেছিলেন। পাঞ্জাবি, উর্দু ভাষার সিনেমায় অভিনয় করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নামি অভিনেত্রীদের একজন হিসেবে জায়গা করে নেন। তাকে নিজ্ঞো নামেও চেনেন। তবে তার পুরো নাম নার্গিস বেগম। কিন্তু এই অভিনেত্রীর জীবন দীর্ঘ না হওয়ায় ক্যারিয়ারও খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, মায়ের ষড়যন্ত্রের কারণে স্বামীর হাতে খুন হন এই অভিনেত্রী।
পাকিস্তানের লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন নার্গিস। তার মা ছিলেন যৌনকর্মী। আবার নাচেও পারদর্শী ছিলেন। ফলে ছোটবেলা থেকেই নাচ-গানে পারদর্শী হয়ে উঠেন নার্গিস। মুজরাতেও দক্ষ ছিলেন এই অভিনেত্রী। সময়ের সঙ্গে মায়ের পদচিহৃ অনুসরণ করেন নার্গিস। এক আসরে নার্গিসের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হন এক প্রযোজক। এরপর তাকে অভিনেত্রী হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেন তিনি।
নার্গিস অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘ইশরাত’। ১৯৬৪ সালে মুক্তি পায় এটি। এরপর শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেন নার্গিস। অধিকাংশ সিনেমায় আইটেম কন্যা রূপে পর্দায় ঝড় তুলেছিলেন। সেই সময়ে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া আইটেম কন্যা ছিলেন নার্গিস। ১৯৭১ সালে ‘কাসু’ সিনেমার শুটিং করতে গিয়ে প্রযোজক খাজা মাজহারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। ক্যারিয়ারের গ্রাফ তুঙ্গে থাকা অবস্থায় মাজহারকে বিয়ে করেন এই অভিনেত্রী।
বিয়ের পর স্বামী মাজহারের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন নার্গিস। মাজহার-নার্গিসের প্রেম পরিণয় পেলেও তা মেনে নেননি এই অভিনেত্রীর মা। কারণ নার্গিসই তার মায়ের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ফলে তৈরি হতে থাকে জটিলতা। তাছাড়া নার্গিসের মা চাইতেন না, তার মেয়ে পুরোনো পেশা ছেড়ে দিক। এরপর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য নানাবিধ ষড়যন্ত্র শুরু করেন নার্গিসের মা।
অসুস্থ হওয়ার অভিনয় করেন নার্গিসের মা। তারপর মেয়েকে খবর পাঠান। নার্গিস মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে ছুটে যান। মা তাকে বাধ্য করেন হীরামান্ডির অন্ধকার গলিতে থাকতে। নার্গিসের কাছে বারবার ছুটে যেতেন স্বামী মাজহার। মায়ের কথা, অসুস্থতার অভিনয় উপেক্ষা করতে না পেরে সেখানে পুনরায় বসবাস শুরু করেন নার্গিস।
১৯৭২ সালের ৫ জানুয়ারি মাজহার ছুটে যান নার্গিসের কোঠায়। বাড়ি ফেরার জন্য নার্গিসকে বারবার চাপ দেন। কিন্তু নার্গিস ফিরতে চান না। শুরু হয় বাকযুদ্ধ। মেজাজ হারিয়ে নার্গিসকে গুলি করেন তার স্বামী মাজহার। এ ঘটনায় আরো ৩ জন নিহত হন। একজন ছিলেন নার্গিসের চাচা, বাকি দুজন মিউজিশিয়ান। এ মামলা আদালতে গড়ায়। মাজহারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
তথ্যসূত্র: বলিউড লাইফ ডটকম
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ন ন র গ স
এছাড়াও পড়ুন:
রুটের সেঞ্চুরি, বুমরাহর ফাইফারের পর ভারতের লড়াই
৯৯ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করা রীতিমত ‘যন্ত্রণার’। লর্ডসে ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় টেস্টের প্রথম দিন এমন কিছুরই সাক্ষী হতে হয়েছিল জো রুটকে। তবে মনোযোগ হারাননি বিশ্বের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান।
শুক্রবার দ্বিতীয় দিনে ফিরেই তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৩৭তম টেস্ট সেঞ্চুরি। তার সেঞ্চুরিতে ভর করে ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে তুলেছে ৩৮৭ রান। রুটের সেঞ্চুরির দিনে ৫ উইকেটের স্বাদ পেয়েছেন জসপ্রিত বুমরাহ। একাদশে ফিরেই বাজিমাত করেছেন ডানহাতি পেসার। যা তার ক্যারিয়ারের ১৫তম টেস্ট ফাইফার।
ব্যাটিংয়ে নেমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বেশ ভালোই লড়তে হয়েছে ভারতকে। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে তাদের স্কোর ৩ উইকেটে ১৪৫। ফিফটি ছোঁয়া রাহুলের (৫৩) সঙ্গে অপরাজিত আছেন রিশভ পান্ত (১৯) । এখনো তারা ২৪২ রানে পিছিয়ে।
রুট ১৯৯ বলে ১০৪ রান করেন ১০ চারে। বুমরাহর বলে বোল্ড হয়ে তাকে সাজঘরে ফিরতে হয়। ৬ রানের জন্য ফিফটি ছোঁয়া হয়নি বেন স্টোকসের। ১১০ বলে ৪৪ রান করে বুমরাহর বলে স্টোকসও বোল্ড হন। এছাড়া উইকেট রক্ষক ব্যটাসম্যান জেমি স্মিথ ৫১ ও ব্রাইডন কার্স স্কোরবোর্ডে ৫৬ রান যোগ করেন।
বুমরাহ ৭৪ রানে পেয়েছেন ৫ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন সিরাজ, নীতিশ কুমার। ১ উইকেট নেন জাদেজা।
জবাব দিতে নেমে ভারত শুরুতেই উইকেট হারায় টেস্ট ক্রিকেটে ফেরা আর্চারের বলে। দ্বিতীয় স্লিপে ইয়াসভি জয়সওয়াল ক্যাচ দেন ১৩ রানে। এরপর রাহুল করুণ নায়ারকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যান। ২০.২ ওভার পর্যন্ত টিকেছিল তাদের জুটি। স্টোকসের বলে নায়ার ৪০ রান করে আউট হলে ভাঙে তাদের লড়াই।
সেখান থেকে গিল ও রাহুলের লড়াই শুরু হয়। কিন্তু আগের ম্যাচের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান ও সেঞ্চুরিয়ান এবার ১৬ রানে থেমে যান। ক্রিস ওয়কসের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। এরপর ভারত আর কোনো উইকেট হারায়নি। রাহুল ফিফটি ছুঁয়ে অভিজ্ঞতার ডালা মেলে ধরেছেন। পান্তও আছেন ভালো অবস্থায়।
তৃতীয় দিনের লড়াইয়ের ওপর নির্ভর করতে পারে ম্যাচের ভাগ্য।
ঢাকা/ইয়াসিন