Risingbd:
2025-11-03@03:22:47 GMT

পঞ্চগড়ে আহত নীলগাই উদ্ধার

Published: 11th, May 2025 GMT

পঞ্চগড়ে আহত নীলগাই উদ্ধার

পঞ্চগড় সদর উপজেলায় একমাসের ব্যবধানে আহত অবস্থায় আরেক একটি বিলুপ্ত প্রজাতির নীলগাই উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (১১ মে) উপজেলার গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের সরকারপাড়া এলাকা থেকে নীলগাইটি উদ্ধার করে স্থানীয়রা। এটি ভারত থেকে সীমান্ত দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত থাকায় নীলগাইটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পঞ্চগড় বনবিভাগে রাখা হয়েছে। সুস্থ হলে গাজীপুরের সাফারি পার্কে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। 

বন বিভাগ ও স্থানীয়রা জানান, ভারতীয় সীমান্ত থেকে কিছু দুরের গ্রাম সরকার পাড়ার একটি ভূট্টা ক্ষেতে নীলগাইটি দেখতে পায় মরিচ ক্ষেতে কাজ করা শ্রমিকরা। বিষয়টি জানাজানি হলে পঞ্চগড় বন বিভাগে খবর দেয়া হয়। পরে বন বিভাগের কর্মীরা নীলগাইটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে। 

আরো পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অটোরিকশাচালকের গলা কাটা লাশ উদ্ধার

বগুড়ায় কষ্টিপাথরের মূর্তি উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৩

নীলগাইটি শিয়াল বা অন্য কোনো জন্তুর আক্রমণের শিকার হয়েছে বলে বন কর্মীরা ধারণা করছেন। আঘাতের কারণে পিছনের বাম পা নাড়াতে পারছে না। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঠিকমত দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না। বন বিভাগে আনার পর প্রাণিসম্পদ কর্মীরা চিকিৎসা দিচ্ছে।

ওই গ্রামের জয়নুল হক জানান, তার ভূট্টা ক্ষেতে প্রাণীটি (নীলগাই) লুকিয়ে ছিল। আহত হওয়ায় বাইরে বের হতে পারছিল না। মরিচ ক্ষেতের শ্রমিকরা দেখতে পেয়ে তাকে খবর দেয়। সেখানে গিয়ে তিনি বন বিভাগকে খবর দেন। তারা এসে ভ্যানে করে নীলগাইটি নিয়ে যায়।

পঞ্চগড় বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হরিপদ দেবনাথ বলেন, নীলগাইটি ভারত থেকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। কাঁটাতারের বেড়া ভেঙে বাংলাদেশে প্রবেশ করায় তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত রয়েছে। বর্তমানে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সুস্থ হলে গাজীপুরের সাফারি পার্কে পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, নীলগাই বিলুপ্ত প্রজাতির প্রাণী এবং খুব ভিতু। মানুষ দেখলে তারা ভয় পায়। উদ্ধার হওয়া নীলগাইটির বয়স দুই বছর হতে পারে।

গত ৯ এপ্রিল পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকা জয়ধরভাঙা থেকে আহত অবস্থায় একটি নীলগাই উদ্ধার করা হয়। সেটিও সাফারি পার্কে পাঠানো হয়। 

ঢাকা/নাঈম/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উদ ধ র বন ব ভ গ

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য

দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।

আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।

লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।

আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা।

কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ