পঞ্চগড় সদর উপজেলায় একমাসের ব্যবধানে আহত অবস্থায় আরেক একটি বিলুপ্ত প্রজাতির নীলগাই উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (১১ মে) উপজেলার গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের সরকারপাড়া এলাকা থেকে নীলগাইটি উদ্ধার করে স্থানীয়রা। এটি ভারত থেকে সীমান্ত দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত থাকায় নীলগাইটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পঞ্চগড় বনবিভাগে রাখা হয়েছে। সুস্থ হলে গাজীপুরের সাফারি পার্কে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।
বন বিভাগ ও স্থানীয়রা জানান, ভারতীয় সীমান্ত থেকে কিছু দুরের গ্রাম সরকার পাড়ার একটি ভূট্টা ক্ষেতে নীলগাইটি দেখতে পায় মরিচ ক্ষেতে কাজ করা শ্রমিকরা। বিষয়টি জানাজানি হলে পঞ্চগড় বন বিভাগে খবর দেয়া হয়। পরে বন বিভাগের কর্মীরা নীলগাইটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
আরো পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অটোরিকশাচালকের গলা কাটা লাশ উদ্ধার
বগুড়ায় কষ্টিপাথরের মূর্তি উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৩
নীলগাইটি শিয়াল বা অন্য কোনো জন্তুর আক্রমণের শিকার হয়েছে বলে বন কর্মীরা ধারণা করছেন। আঘাতের কারণে পিছনের বাম পা নাড়াতে পারছে না। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঠিকমত দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না। বন বিভাগে আনার পর প্রাণিসম্পদ কর্মীরা চিকিৎসা দিচ্ছে।
ওই গ্রামের জয়নুল হক জানান, তার ভূট্টা ক্ষেতে প্রাণীটি (নীলগাই) লুকিয়ে ছিল। আহত হওয়ায় বাইরে বের হতে পারছিল না। মরিচ ক্ষেতের শ্রমিকরা দেখতে পেয়ে তাকে খবর দেয়। সেখানে গিয়ে তিনি বন বিভাগকে খবর দেন। তারা এসে ভ্যানে করে নীলগাইটি নিয়ে যায়।
পঞ্চগড় বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হরিপদ দেবনাথ বলেন, নীলগাইটি ভারত থেকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। কাঁটাতারের বেড়া ভেঙে বাংলাদেশে প্রবেশ করায় তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত রয়েছে। বর্তমানে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সুস্থ হলে গাজীপুরের সাফারি পার্কে পাঠানো হবে।
তিনি বলেন, নীলগাই বিলুপ্ত প্রজাতির প্রাণী এবং খুব ভিতু। মানুষ দেখলে তারা ভয় পায়। উদ্ধার হওয়া নীলগাইটির বয়স দুই বছর হতে পারে।
গত ৯ এপ্রিল পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকা জয়ধরভাঙা থেকে আহত অবস্থায় একটি নীলগাই উদ্ধার করা হয়। সেটিও সাফারি পার্কে পাঠানো হয়।
ঢাকা/নাঈম/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উদ ধ র বন ব ভ গ
এছাড়াও পড়ুন:
সাজেকে নিহত খুবি শিক্ষার্থী রিংকীর মরদেহ নেওয়া হবে গাইবান্ধা
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সেশনাল ট্যুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকীর মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তার বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে।
এছাড়া শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এদিন সকল ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সেশনাল ট্যুরের সময় রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকী নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত রুবিনা আফসানা রিংকির মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাদের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনায় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হচ্ছে ।”
তিনি বলেন, “এই শোকাবহ ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে মর্মাহত। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে, সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত আছেন। তিনি নিজে এবং সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তারা খাগড়াছড়ি রওনা হয়েছেন।”
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে নিহত শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি।
এদিকে, সাজেকে শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরনের সেশনাল ট্যুর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার কাকলি রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ ৪র্থ বর্ষ টার্ম-২ এর সেশনাল ট্যুরে অংশগ্রহণরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। শিক্ষার্থীর এই অকাল মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল দূরপাল্লার সেশনাল ট্যুর স্থগিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে চান্দের গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এসময় আহত হয়েছেন আরো ১১ জন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সাজেকের হাউসপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রুবিনা আফসানা রিংকী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহতরা সবাই একই বিভাগের শিক্ষার্থী।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস