কমলগঞ্জের প্রান্তিক জনপদে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে ফুঁসে ওঠা ধলাই নদী। গত বছরের ভাঙনের ক্ষত না সারতে চলতি মৌসুমে আবারও ভাঙন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয়দের মাঝে। স্থানীয়রা বলছেন, দ্রুত বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত স্থান মেরামত করা না হলে আগ্রাসী নদীর হানা সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে।
খরার রুক্ষতা না কাটতেই টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ি ছরা ধরে উপজেলার নিম্নভাগের সমতল অংশের দিকে ধেয়ে আসতে শুরু করেছে ঢলের পানি। পানি যত বাড়ছে ততই ক্রুদ্ধ রূপ ধারণ করছে খরস্রোতা ধলাই নদী। ঢলের ধাক্কায় এবারও বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আতঙ্কে আছেন স্থানীয়রা।
কয়েক বছরের ভয়াবহ বন্যায় রামপাশা, রামপুর, নারায়ণপুর, চৈতন্যগঞ্জ, কুমড়াকাপন, কান্দিগাঁওসহ প্রায় ১০ থেকে ১২টি গ্রাম তলিয়ে যায়। নদীভাঙনের কারণে ইতোমধ্যে রামপাশা গ্রামের ৪০ থেকে ৫০টি বাড়ি ও ফসলিজমি নদীতে বিলীন হয়েছে। সম্প্রতি স্থানীয়রা পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বাঁধসংলগ্ন এলাকায় বাঁধ নির্মাণ, জিও ব্যাগ ডাম্পিং দাবিতে ছাইয়াখালী হাওর 
পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছেন।
পৌর এলাকার রামপাশা এলাকা বিগত বছরের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে ধলাই নদীর রামপাশা এলাকায় বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। যার কারণে এরইমধ্যে নদীতীরবর্তী আব্দুন নূর চৌধুরী, আব্দুর রব চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক চৌধুরী, এম.

আর. খান, হারিছ মিয়া, আজিদ মিয়া, জমির মিয়া, রহিম মিয়া, করিম মিয়া, আলমগীর মিয়া, আশিক মিয়া, আরফান মিয়া, রাজু মিয়া, তাজুদ মিয়া, রমজান মিয়া, লটা মালাকার, নিখিল মালাকার, মনীন্দ্র মালাকার, জয়ধন মালাকার, জোগীন্দ্র মালাকার, হায়দর মিয়া, রবেন্দ্র মালাকার, প্রাণেশ কুমার পাল, প্রবেশ কুমার পাল, পরিতোষ কুমার পাল, প্রদীপ কুমার পাল, মণি দেবনাথ, সুনীল দেবনাথ, মাহমুদা বেগম, আক্তার মিয়া, বিরাই বক্স, মতলিব বক্স, মনির বক্স, মন্নান বক্স, আলিজ্জামান, বিকুল কুমারসহ আরও অনেক পরিবারের ভিটা-সম্পদ সব গেছে নদীভাঙনে।
আসন্ন বর্ষা মৌসুমেও বন্যার আশঙ্কা করছেন রামপাশাসহ নদীতীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। এদিকে রামপাশা এলাকায় প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবিতে গ্রামবাসী মানববন্ধন করেছেন। স্থানীয় জামায়াত নেতা সৈয়দ ইব্রাহিম মোহাম্মদ আবদুহুসহ অনেক নেতাকর্মী বাঁধের জন্য স্থানীয়দের পক্ষ থেকে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছেন বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসী।
এলাকাবাসী জানান, প্রতি বছর ধলাই নদীর ভাঙনের কারণে রামপাশা এলাকা বিলীন হতে চলেছে। গত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে প্রতিরক্ষা বাঁধ এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল। সেগুলো তলিয়ে গেছে আরও আগেই। বর্তমানে সে সব স্থান ঝুঁকিপূর্ণ। পানি বাড়লে বাঁধ ভেঙে ১০ থেকে ১২টি গ্রামসহ বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন অলীদ সমকালকে জানান, ধলাই নদীসংলগ্ন বাঁধের ভাঙা অংশ মেরামতের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলেই কাজ শুরু হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে ‍শিবচর থানায় মামলাটি করেন।

এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।

মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় চান না সাত কলেজের শিক্ষকেরা
  • দুর্গাপূজায় অরাজকতা রোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান মহিলা পরিষদের
  • বন কর্মকর্তার ১৭ বিয়ে: আদালতে মামলা, তদন্তে পিবিআই
  • শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান পরিবর্তনের দাবিতে ৫টি পরিবেশবাদী সংগঠনের মানববন্ধন
  • ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাঁর মাকে হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন