রিয়াদ চৌধুরী ২ দিনের রিমান্ডে, আইনজীবী লাঞ্ছিত
Published: 18th, May 2025 GMT
চাঁদাবাজি মামলায় ফতুল্লা থানা বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদলত। রবিবার (১৮ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হায়দার আলী এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে রিমান্ড শুনানি শেষে জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূইয়াকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।
রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামি- রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। রিমান্ড শুনানির সময় ভার্চ্যুয়ালি আসামিকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো.
তিনি আরও বলেন, অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূইয়ার উপরে হামলার অভিযোগ উঠলে, আদালতের নির্দেশে তাকে তার চেম্বারে দিয়ে এসেছেন পুলিশ সদস্যরা।
এদিকে রিমান্ড শুনানি শেষে আদালত থেকে বের হওয়ার সময় জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূইয়াকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠে।
এ বিষয়ে আব্দুল বারী ভূইয়া বলেন, রিমাণ্ড শানানিতে কোর্ট পরিদর্শক আমাকে সহযোগিতা করতে বলায় আমি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে শুনানিতে ছিলাম ও বক্তব্য রেখেছিল। আদালতে ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তিনি আরও বলেন, রিমান্ড মঞ্জুর শেষে আমি কোর্ট কক্ষ থেকে বের হওয়ার সময় রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর ক্যাশিয়ার আমির, হারুন, আব্দুল মান্নান, সাগর সিদ্দিকির নেতৃত্বে ৫-৬শ জন লোক নিয়ে আমার উপর হামলা করে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। ওই সময় আমাকে পাশের চীফ জুডিসিয়ার ম্যাজিস্ট্রেটের কক্ষে সরিয়ে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে চীফ জুডিসিয়ার ম্যাজিস্ট্রেটকে জানালে তিনি পুলিশি নিরাপত্তায় আমার চেম্বারে পৌছে দেন।
এর আগে গত ১৫ থাইল্যান্ড পালানোর পথে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে আটক করা হয়। পরে চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। একই সাথে এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়
। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের নীতি, আদর্শ ও সংহতি পরিপন্থী অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য সহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ মে এক ব্যবসায়ীকে হুমকি দেওয়ার অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়। পরে অডিও ক্লিপটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেই ঘটনায় ব্যবসায়ী আজাদ বাদী হয়ে মামলা করতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে চাঁদাবাজীর ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় এস আই শামীম হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় রিয়াদকে আসামি করা হয়।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ আইনজ ব র য় দ ম হ ম মদ চ ধ র ব এনপ র স আইনজ ব সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
হবিগঞ্জ আদালত থেকে আসামি ছিনিয়ে নিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা
হবিগঞ্জে স্কুলছাত্র জনি দাশ (১৭) হত্যা মামলার আসামিকে আদালত প্রাঙ্গণে মারধর ও পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় এই মামলা করে আদালত পুলিশ। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম শাহাবুদ্দীন। তিনি বলেন, আসামি সাজু মিয়াকে (২২) ছিনিয়ে নিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ঘটনায় এ মামলা হয়। অপরাধীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
মামলার অভিযোগ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জনি দাস হবিগঞ্জ শহরের ডাকঘর এলাকার নর্ধন দাশের ছেলে ও দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। ৩ জুলাই ভোরে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা তাঁকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। হবিগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে জনিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত শনিবার অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। ওই মামলায় গত সোমবার সাজু মিয়া নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর বাড়ি আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিমবাক গ্রামে। পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাজু হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
ওই মামলায় গতকাল বুধবার দুপুরে সাজুর পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে হবিগঞ্জ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় একদল শিক্ষার্থী সাজুর ওপর হামলা চালিয়ে তাঁকে মারধর করে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে হামলাকারীদের লাঠিপেটা করে পুলিশ। পাশাপাশি একদল আইনজীবী ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলাকারীদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রাতেই মামলা করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি সাজু মিয়ার ফাঁসি দাবি করে ৪০-৫০ জনের একটি দল আদালত প্রাঙ্গণ থেকে আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় আদালত পুলিশ উপস্থিত আইনজীবীদের সহায়তায় উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে সরিয়ে দিয়ে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। তাঁদের সৃষ্ট উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে আদালতের কার্যক্রম বাধাপ্রাপ্ত হয়। আসামির রিমান্ড শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে সাজুকে আদালতের এজলাস থেকে হাজতখানায় নেওয়ার সময় হামলাকারীরা আবার সাজুকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি মারধর করে। এ সময় আসামিকে নিয়ে এজলাস কক্ষে ঢুকলে আদালতের দরজায় ধাক্কা দেয় হামলাকারীরা। এতে বিচারকাজে বিঘ্ন ঘটে। পরে পুলিশ, আইনজীবী ও আদালতের কর্মচারীদের যৌথ প্রচেষ্টায় সাজু মিয়াকে রক্ষা করা হয়।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম শাহাবুদ্দীন শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, ওই ঘটনার সময় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।