দৈনিক ভিত্তিতে শ্রমিক নিয়োগ নীতিমালা বাতিলের দাবি
Published: 25th, May 2025 GMT
‘দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা, ২০২৫’ বিভ্রান্তিকর, অসম্পূর্ণ এবং শ্রমিক শোষণ স্থায়ী করার অপকৌশল বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশন। এ ছাড়া জারি করা নীতিমালা বাতিল, বিএডিসিতে কর্মরত শ্রমিকদের নিয়মিতকরণের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনতিবিলম্বে কার্যকর করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি জানায় সংগঠনটি।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ছরোয়ার বলেন, কৃষি ফার্ম শ্রমিক নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা অনুযায়ী কৃষি ফার্ম শ্রমিকরা তাদের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো এই নীতিমালা অনুসরণ করলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ এই নীতিমালা মানছে না।
তিনি বলেন, কৃষি ফার্ম শ্রমিক নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা-২০১৭-এর সঙ্গে নতুন নীতিমালা সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা নতুন নীতিমালাটি অসম্পূর্ণ ও বিভ্রান্তিমূলক। বিএডিসিসহ কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠানগুলো এটির ভুল ব্যাখ্যা করে বিদ্যমান জনবলের (নিয়মিত ও অনিয়মিত শ্রমিক) ধরন সাময়িক শ্রমিক হিসেবে বিবেচনা করবে এবং সে অনুযায়ী সুবিধাদি দেওয়া হবে বলে শ্রমিকদের বলা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বেতন বৈষম্য দূরীকরণসহ ছয় দফা দাবিতে স্বাস্থ্য সহকারীদের বিক্ষোভ
বেতন বৈষম্য দূরীকরণ, পদোন্নতিসহ ছয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। রোববার সকাল থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন, কেন্দ্রীয় পরিষদ। দাবি আদায় না হলে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ইপিআইসহ স্বাস্থ্য সেবার সকল কার্যক্রম বাস্তবায়ন বন্ধের ঘোষণা দেন তারা।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রদত্ত সকল সেবা প্রান্তিক পর্যায়ে বাস্তবায়ন করলেও দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য সহকারীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে সমাবেশে অভিযোগ করেন তারা।
অবস্থান কর্মসূচিতে হাজারও স্বাস্থ্য সহকারী অংশগ্রহণ করেন। এতে সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক মো. আখিল উদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য প্রদান করেন সদস্য সচিব মো. মোজাম্মেল হক, ওয়াসিউদ্দিন রানা, এ. কে. এম মাইনউদ্দীন খোকন, ১১-২০ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনস্থ দেশের বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আওতায় ২৬ হাজারের অধিক স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শক কাজ করছেন। এই সংখ্যা সরকারী স্বাস্থ্য খাতে কর্মরত মোট জনবলের ৩১ শতাংশ। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রোগ প্রতিরোধ যোদ্ধা হিসেবে স্বাস্থ্য সহকারীগণ মাঠ পর্যায়ে আন্তঃব্যক্তি যোগাযোগের মাধ্যমে প্রতিটি ঘরে ঘরে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেন। এছাড়াও সমাজের প্রচলিত রোগ হতে মুক্তির উপায় এবং নতুন রোগের আগমন প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পরামর্শ প্রদান করেন। তারা সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) বাস্তবায়ন, ১৫-৪৯ বছর বয়সী নারীদের টিটি/টিডি টিকা দান, গর্ভবতী মা ও শিশুদের সেবা প্রদান, গর্ভকালীন ৪টি চেকআপ নিশ্চিত করা, প্রসব-পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সেবা প্রদান। মা ও শিশুর পুষ্টি, পরিচর্যা ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পরামর্শ দেয়া, জাতীয় ও বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা দেয়া, স্কুল পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মায়েদের স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদান, পুষ্টি, পরিবেশ স্বাস্থ্য, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা, ডায়রিয়া ও ডেঙ্গু প্রতিরোধ,এলাকা ভিত্তিক জনগণের স্বাস্থ্য তথ্য সংগ্রহ ও হালনাগাদ করা, সংক্রামক, অসংক্রামক রোগ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টিসহ স্বাস্থ্য সহকারীগণ সপ্তাহে ৩ দিন কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে থাকেন।
তারা আরও বলেন, স্বাস্থ্য সহকারীরা অপ্রতুল সুযোগ সুবিধা ও সীমিত জনবল নিয়েও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময় ধরে তারা প্রথম সারির যোদ্ধা হিসাবে জনগণের স্বাস্থ্য সেবায় নিবেদিত থেকেছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আজ পর্যন্ত তাদের পদে কোন পরিবর্তন হয়নি। বেতন কাঠামোতে রয়েছে চরম বৈষম্য। তবুও তারা থেমে থাকেনি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে যে সাফল্য এসেছে, তার পেছনে স্বাস্থ্য সহকারীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য এবং শিশু ও মাতৃ মৃত্যুর হার হ্রাস, পোলিও নিয়ন্ত্রণ, বসন্ত নির্মূল এবং ১০টি মারাত্মক রোগে টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নে তারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাই স্বাস্থ্য সহকারীদের বাস্তবসম্মত দাবি মেনে নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ৬ দফা দাবি জানান তারা। তাদের দাবিগুলো হলো-
১.নির্বাহী আদেশে নিয়োগ বিধি সংশোধন শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক/সমমান করে ১৪তম গ্রেড প্রদান করা।
২. ইনসার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে টেকনিক্যাল পদমর্যাদাসহ বেতন স্কেল ১১তম গ্রেডে উন্নীতকরণ।
৩.পদোন্নতির ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিতকরণ।
৪. স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শকগণ পূর্বের নিয়োগ বিধি দ্বারা নিয়োগ প্রাপ্ত হলেও সকলেই প্রশিক্ষণবিহীন স্নাতক পাশ স্কেলে আন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৫. বেতন স্কেল উন্নীতকরণের পূর্বে স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শকগণ যত সংখ্যক টাইম স্কেল, উচ্চতর স্কেল প্রাপ্ত হয়েছেন, তা উন্নীত পুনঃনির্ধারিত বেতন স্কেলের সাথে যোগ করতে হবে।
৬.পূর্বে ইনসার্ভিস ডিপ্লোমা (এস.আই.টি) কোর্স সম্পন্নকারী স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শকগণ ডিপ্লোমাধারী হিসেবে গণ্য করার দাবি জানানো হয়।