‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর বিরুদ্ধে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশের প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়। এ অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সোমবারের মতো আগামীকাল মঙ্গলবারও (২৭ মে) সচিবালয়ে বিক্ষোভ করবেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সোমবার (২৬ মে) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন ভবনের নিচে আয়োজিত জরুরি সমাবেশে এ কর্মসূচির ঘোষণা করেছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘ঐক্য ফোরাম’ এর নেতারা।
তারা বলছেন, সংশোধিত অধ্যাদেশে কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা সংকুচিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে সরকারি কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা যাবে। এ বিধানকে ‘নিবর্তনমূলক’ ও ‘গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী’।
ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি মো.
তিনি জানান, সচিবালয়ের বাইরে অন্যান্য সরকারি দপ্তরেও একই দাবিতে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এর আগে, রবিবার (২৫ মে) সচিবালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী সংগঠন সম্মিলিতভাবে এ অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। সোমবারও (২৬ মে) সকাল থেকেই তারা আন্দোলনে যোগ দেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলা এই কর্মসূচিতে সচিবালয় চত্বর মুখর হয়ে ওঠে স্লোগানে। এমনকি কিছু সময়ের জন্য সচিবালয়ের প্রধান ফটকও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে মো. বাদিউল কবীর ও মহাসচিব নিজাম উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সামনে থেকে যাত্রা শুরু করে।
এরপর সোয়া ১১টার দিকে মিছিলে যুক্ত হন সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের আরেক অংশের নেতা মো. নূরুল ইসলাম ও মুজাহিদুল ইসলাম। পরে আন্তঃমন্ত্রণালয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনও অংশ নেয়।
বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণকারী কর্মচারীরা স্লোগানে জানান দেন তাদের অবস্থান: ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘অবৈধ কালো আইন, বাতিল করো করতে হবে’, ‘কর্মচারী মানে না, অবৈধ কালো আইন’, ‘এক হও, লড়াই করো, ১৮ লাখ কর্মচারী’, আপস না, সংগ্রাম; সংগ্রাম, সংগ্রাম‘।
বিক্ষোভকারীরা সচিবালয় চত্বর প্রদক্ষিণ শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনের নিচে অবস্থান নেন এবং সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
উল্লেখ্য, ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদিত হওয়ার পর ২৪ মে থেকে সচিবালয়ের ভেতরে বিক্ষোভ শুরু হয়। এরপর ২৫ মে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের মাধ্যমে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ কার্যকর হয়।
এই অধ্যাদেশ জারির পর থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এটিকে গণতন্ত্রবিরোধী, অতিরিক্ত ক্ষমতাকেন্দ্রিক এবং কর্মচারীবিরোধী আইন হিসেবে আখ্যা দিয়ে এর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন।
ঐক্য ফোরামের নেতারা বলেছেন, আন্দোলন শান্তিপূর্ণ থাকলেও দাবি না মানলে তারা কঠোর কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবেন।
ঢাকা/এএএম/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত স মব র মন ত র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ভোট ম্যানুয়ালি গণনার আবেদন করলেন উমামা ফাতেমা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোট ম্যানুয়ালি (হাতে) গণনা করার আবেদন করেছেন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী উমামা ফাতেমা। সোমবার প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেন তিনি।
আবেদনে উমামা ফাতেমা লিখেছেন, ‘আমরা স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের পক্ষ থেকে সদ্য অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন এবং হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর নির্বাচনকেন্দ্রিক স্বচ্ছতা যাচাইকরণের উদ্দেশ্যে প্রতিটি কেন্দ্রের ভোটদাতাদের তালিকার কপি, ওএমআর মেশিনের পরিবর্তে ম্যানুয়ালি পুনরায় ভোট গণনা এবং ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের প্রবেশের সিসিটিভি ফুটেজ শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করার অনুরোধ করছি।’
৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়। ওই দিন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা চলার মধ্যে রাত সোয়া তিনটার পর ফেসবুকে এক পোস্টে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন উমামা ফাতেমা।
ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে জয়ী হন ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের সাদিক কায়েম। তিনি পেয়েছিলেন ১৪ হাজার ৪২ ভোট। অন্যদিকে ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট পেয়ে চতুর্থ হন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের উমামা ফাতেমা।
আরও পড়ুনডাকসুর ২৮ পদে কার সঙ্গে কার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলো, জয়ের ব্যবধান কত১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫