রাবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে গবেষণা জালিয়াতির অভিযোগ সহকর্মীর
Published: 26th, May 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে গবেষণা প্রবন্ধ জালিয়াতির অভিযোগ এনেছেন তারই এক সহকর্মী।
সহকর্মী হলেন, রাবির আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোরশেদুল ইসলাম। গত বছরের ২৪ নভেম্বরও সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
তবে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও জমা হয়নি প্রতিবেদন। ফলে প্রশাসনের এ নীরব ভূমিকার প্রতিবাদ জানিয়ে ফের সংবাদ সম্মেলন করেছেন অধ্যাপক মোরশেদুল।
আরো পড়ুন:
ছাত্রীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক: নোবিপ্রবির সেই শিক্ষককে চাকরিচ্যুত
চাকরি ফেরত পেলেন নোবিপ্রবিতে ৭ শিক্ষক-কর্মকর্তা
সোমবার (২৬ মে) বিকেলে অধ্যাপক সাহাল উদ্দিনের আটটি গবেষণা প্রকাশনার সবকটিতেই জালিয়াতির অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করেন অধ্যাপক মোরশেদুল। এ সময় তিনি চৌর্যবৃত্তি যাচাইসংক্রান্ত প্রমাণপত্র হাজির করেন।
ড.
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক মোরশেদুল ইসলাম বলেন, “আমি অধ্যাপক মো. সাহাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। তিনি সহকারী অধ্যাপক থাকাকালে তিনটি গবেষণা প্রকাশনা উপস্থাপন করেন, যার মধ্যে দুটি প্রকাশনাতেই জালিয়াতির প্রমাণ রয়েছে। একটি প্রকাশনায় ৫৬ শতাংশ এবং অপরটিতে ৮৫ শতাংশ জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী গবেষণার গুণমান ও সততার পরিপন্থি।”
তিনি বলেন, “অধ্যাপক সাহাল উদ্দিন সহকারী অধ্যাপক ও পরে অধ্যাপক পদে যেভাবে পদোন্নতি পেয়েছেন, তা সম্পূর্ণভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে অর্জিত। সহকারী অধ্যাপক হওয়ার সময় তিনি যে তিনটি গবেষণা প্রকাশ করেন, তার মধ্যে দুটি প্রকাশনায় যথাক্রমে ৫৬ শতাংশ ও ৮৫ শতাংশ প্লেজারিজমের প্রমাণ পাওয়া যায়।”
“পরে অধ্যাপক পদে পদোন্নতির সময় তিনি ছয়টি গবেষণা প্রকাশ করেন, যার প্রতিটিতেই জালিয়াতি রয়েছে। এসব প্রকাশনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌর্যবৃত্তির পেইড সফটওয়্যারে বারবার যাচাই করে জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ার পর বিষয়টি ২০২৪ সালের ১৪ নভেম্বর তারিখে লিখিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা আমলে না নিয়ে উল্টো অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিভাগের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয়, যা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের ৬১, ৬২, ৬৩ ও ৬৪ ধারার সরাসরি লঙ্ঘন,” যুক্ত করেন অধ্যাপক মোরশেদুল।
অধ্যাপক মোরশেদুল বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এ স্বাধীন দেশে এই ধরনের কার্যক্রম চলমান থাকলে তাদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। জালিয়াতির বিষয়ে উপাচার্য বলেছেন ‘এটা নমিনাল কেজ’। প্রকাশনা জালিয়াতি যদি তুচ্ছ বিষয় হয়, তাহলে কেনো প্রতিটা বিভাগে প্রথম বর্ষ থেকেই গবেষণা করানো হয়?”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাঙামাটিতে ম্যালেরিয়ায় স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু
রাঙামাটিতে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সুদীপ্তা চাকমা নামে ১০ বছর বয়সী এক স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। প্রায় ৯ বছর পর ম্যালেরিয়ায় কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে জেলাটিতে। সুদীপ্তা চাকমা সদর উপজেলার বন্দুকভাঙা ইউনিয়নের বন্দুকভাঙা উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভুগছিলেন সুদীপ্তা চাকমা। রোগনির্ণয় পরীক্ষা না করে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছিল। জ্বর না কমায় গত শুক্রবার পরীক্ষা করালে তার ম্যালেরিয়া ধরা পড়ে। এরপর অবস্থার অবনতি হলে গতকাল শনিবার সকালে তাকে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
জানতে চাইলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সুচিত্র চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, প্রথমে সর্দি-জ্বর ভেবে শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। তবে ম্যালেরিয়া শনাক্ত হওয়ার পর হাসপাতালে নেওয়া হলে শিশুটির মৃত্যু হয়।
বন্দুকভাঙা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরুণ চাকমা বলেন, ম্যালেরিয়ার মৃত্যুর ঘটনা কমে আসায় মানুষ এই রোগকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি। নতুন করে একজনের মৃত্যুর খবরে এলাকায় ভয় ও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. শওকত আকবর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেয়েটিকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল, তবে তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।’
রাঙামাটি জেলা সিভিল সার্জন নূয়েন খীসা প্রথম আলোকে বলেন, ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু খবর পাওয়া গেছে। এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় এবং মানুষের অসচেতনতার কারণে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে শিশুটি মারা গেছে। ২০১৬ সাল থেকে দীর্ঘ ৯ বছর পর নতুন করে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল।