নরসিংদী রায়পুরায় ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ ছেলের শাবলের আঘাতে কবির হোসেন (৫০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের পরপরই ঘটনাস্থল থেকে ছেলে মনির হোসেনকে (২৫) আটক করে পুলিশে খবর দেন এলাকাবাসী। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের পর অভিযুক্ত ছেলেকে থানায় নিয়ে যায়।

গতকাল সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে রায়পুরার মির্জানগর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কবির হোসেন (৫০) কৃষক ছিলেন। আজ শনিবার সকালে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রবাস থেকে ফেরার পর মনির হোসেনের স্ত্রী সংসার ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে যান। এর পর থেকে বিভিন্ন সময় মানসিক ভারসাম্যহীনের মতো আচরণ করতেন মনির। কখনো কখনো ভালো আচরণ করতেন। তাঁর মা মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। মনিরকে নিয়ে একটি দোচালা ঘরে বসবাস করতেন বাবা কবির হোসেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল রাত আড়াইটার দিকে ঘুম থেকে উঠে মনির হোসেন ঘুমন্ত বাবা কবির হোসেনের বাঁ হাতে শাবল দিয়ে কোপ দেন। জেগে উঠে ছেলের হাতে শাবল আর নিজের রক্তাক্ত হাত দেখে কবির দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে যান। মনির তাঁর পিছু নেন। পাশের একটি জমিতে পৌঁছানোর পর কবির মাটিতে পড়ে যান। তখন মনির শাবল দিয়ে তাঁর মাথায় তিনটি আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, কবিরকে হত্যার সময় খ্যাপাটে অবস্থায় থাকা মনিরকে বাধা দেওয়ার সাহস পাননি তাঁরা। পরে লোকজন জড়ো করে মনিরকে ধরে সারা রাত আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে আজ সকাল ১০টার দিকে রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক মো.

মাসুদ মিয়া ঘটনাস্থল থেকে নিহত কবিরের লাশ উদ্ধার করেন। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর লাশ ও আটক মনিরকে থানায় নেওয়া হয়। পরে দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে লাশ পাঠায় পুলিশ।

নিহত কবিরের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সবার বড় মনির। প্রতিবেশীদের ভাষ্য, এক বছর আগে সৌদি আরব থেকে বাড়িতে ফেরার পরই মনিরের মানসিক পরিবর্তন দেখা দেয়। ছয় মাস আগে দাদি, ফুফু ও চাচাতো বোনকে কুপিয়ে জখম করেন মনির। ওই ঘটনায় করা মামলায় তিন মাস কারাগারে ছিলেন তিনি। পরে জামিনে ছাড়া পান। এর পর থেকে বাবা কবির হোসেন ছেলের দেখাশোনা করতেন।

রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক মো. মাসুদ মিয়া জানান, প্রবাসফেরত ছেলের শাবলের কোপে কবির হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর মাথা ও হাতে চারটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত মনিরকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন কি না, তা পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থার প্রস্তুতি চলছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র শ বল র র পর করত ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘নির্বাচনের আগে বিচার-সংস্কার আর শুনতে চায় না বিএনপি’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, “আগে বিচার ও সংস্কার, তারপর নির্বাচন—এ কথা এখন আর বিএনপি শুনতে চায় না।”

শনিবার (১২ জুলাই) সকালে রাজশাহীর ভুবন মোহন পার্কে বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আব্দুল মঈন খান বলেন, “বিচার ও সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল দায়িত্ব হচ্ছে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। সে লক্ষ্যেই যত দ্রুত সম্ভব জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে।”

তিনি বলেন, “বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আমাদের মূল দাবি একটাই—জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। বিচার ও সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার যুক্তি আর চলবে না।”

বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দলটির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, “আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মতো আচরণ করা থেকে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের আচরণে গণতন্ত্র ও সংযমের ছাপ থাকতে হবে।”

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত। সভাপতিত্ব করেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা। সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব মামুন-অর-রশীদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা। 

অনুষ্ঠানে পুরনো সদস্যদের নবায়ন এবং নতুন সদস্য সংগ্রহের ফরম বিতরণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ড. আব্দুল মঈন খান।

ঢাকা/কেয়া/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাসিনার গুম-খুন ভুলিয়ে দেওয়ার মতো নৃশংস আচরণ করবেন না: মজিবুর রহমান
  • হাসিনার গুম-খুন ভুলিয়ে দেওয়ার মতো নৃশংস আচরণ করবেন না: মঞ্জু
  • ‘নির্বাচনের আগে বিচার-সংস্কার আর শুনতে চায় না বিএনপি’
  • বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন