মৌলভীবাজারে জমি রেজিস্ট্রিতে রাজস্ব কমেছে সাড়ে ৯ কোটি টাকা
Published: 15th, January 2025 GMT
মৌলভীবাজারে ভূমিসেবা সার্ভারের জটিলতার কবলে পড়ে কমেছে জমি রেজিস্ট্রেশন। এতে জেলার সাতটি উপজেলায় ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে প্রায় সাড়ে ৯ কোটি টাকার রাজস্ব কমেছে। ডিসেম্বর মাসে কয়েক হাজার গ্রাহক জমি রেজিস্ট্রেশন করতে না পারায় ভোগান্তিতে ছিলেন। এখনো সমস্যার পুরোপুরি সমাধান না হওয়ায় অনিশ্চয়তায় রয়েছেন জমির ক্রেতা-বিক্রেতারা।
মৌলভীবাজারের জেলা রেজিস্ট্রার মফিজুল ইসলাম জানান, জমি রেজিস্ট্রি বাবদ ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলার সবকটি সাব-রেজিস্ট্রার অফিস মিলিয়ে ২৮ হাজার ৯২৭টি দলিল রেজিস্ট্রি হয়েছে। এতে ৯৪ কোটি ৫৯ লক্ষ ৫৮ হাজার ৭৪টাকা রাজস্ব পেয়েছে সরকার। তবে ২০২৩ সালে ৩৭ হাজার ১২১টি দলিল রেজিস্ট্রি বাবদ ১০৪ কোটি ২ লক্ষ ৪৬ হাজার ৩১৭ টাকা রাজস্ব অর্জিত হয়েছিল।
২০২৩ সালের তুলনায় ৮ হাজার ১৯৪টি দলিল সম্পাদন কম হয়েছে। ফলে রাজস্ব আদায় কমেছে ৯ কোটি ৪২ লাখ ৮৮ হাজার ২৪৩ টাকা। এদিকে কয়েক বছর পর পর নতুন করে জানুয়ারি মাসে জমির বাজার মূল্য নির্ধারণ করে সরকার। প্রায় প্রতি বছরই বাজার মূল্য বাড়ে। ফলে গ্রাহকদের রেজিস্ট্রি খরচও বেশি বহন করতে হয়।
এ কারণে বাড়তি খরচ থেকে বাঁচতে গ্রাহকরা ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই এ কাজ শেষ করতে চান। বছরের শেষ মাসে সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়গুলো সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত থাকে। এ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়। তবে গেল ডিসেম্বর মাসে সার্ভার আপগ্রেডেশনের জন্য ভূমিসেবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গ্রাহকরা খাজনা দিতে না পারায় জমি রেজিস্ট্রির সংখ্যা কমে যায়।
আবার অনেকে অনলাইনে নামজারি করতে না পারায় জমি ক্রয়-বিক্রয় করতে পারেননি। ফলে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে। এখনো মাঝেমধ্যে সার্ভার ঠিক হলেও দিনের বেশিরভাগ সময়ে খাজনা দিতে পারছেন না গ্রাহকরা।
রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ গ্রামের মোতাচ্ছির বেগ শোভা ও শত্রুমর্দন গ্রামের মো.
জেলা রেজিস্ট্রার মফিজুল ইসলাম বলেন, “সারা বছরের মধ্যে ডিসেম্বর মাসে সবচেয়ে বেশি জমি রেজিস্ট্রি ও রাজস্ব অর্জিত হয়। কিন্তু এ মাসে মাত্র ১ হাজার ৬৭৭টি দলিল রেজিস্ট্রি হয়েছে। মূলত এসময় সার্ভার জটিলতায় গ্রাহকরা খাজনা দিতে না পারায় ও অনেকের নামজারি আটকে থাকায় রেজিস্ট্রি করতে পারেননি। এ কারণে গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় ৯ কোটি ৪২ লাখ টাকার রাজস্ব কম অর্জিত হয়েছে। তবে এখন কিছু কিছু রেজিস্ট্রি হচ্ছে।”
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোসা. শাহীনা আক্তার বলেন, “সার্ভারের আপগ্রেডেশনের জন্য ডিসেম্বর মাসে খাজনা দিতে সমস্যা হয়েছিল। এখন কিছু কিছু খাজনা দেওয়া যাচ্ছে। আশা করি সমস্যাটি সমাধান হয়ে যাবে।”
ঢাকা/আজিজ/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সমস য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের মাটিতে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলে অবসর নেবেন সাকিব
ঘরের মাঠে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির পূর্ণাঙ্গ একটি সিরিজ খেলে অবসর নেওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। সাকিব ঘোষণা দিয়েছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি এখনও কোনো ফরম্যাট থেকে অবসর নেননি।
২০২৪ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকেই দেশের বাইরে থাকতে বাধ্য হয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেট খেলে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নেওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি। দেশে ফিরে আবার দেশের বাইরে যাওয়ার শর্ত দিয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু নীতিনির্ধারকদের থেকে সাড়া পাননি। ‘হুমকি’ থাকায় তাকে নিয়ে ঝুঁকিও নেননি তারা।
কানপুরে সাকিব টি-টোয়েন্টি থেকে সরে যাওয়ার এবং ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে ফেরার কথা বলেছিলেন। ২০২৫ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলে ওয়ানডে ছাড়ার ইচ্ছা ছিল তার। সেটাও হয়নি। আর টেস্টেও সুযোগ হয়নি। ফলে মাঠ থেকে অবসর নেওয়ার বাসনা পূরণ হয়নি বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিবের।
তবে এখনও সেই ইচ্ছাটা পুষে রেখেছেন তিনি। । রোববার প্রকাশিত ‘বিয়ার্ড বিফোর উইকেট’ পডকাস্ট-এ নিজের ইচ্ছা কথা বলেছেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার, “আনুষ্ঠানিকভাবে সব সংস্করণ থেকে অবসর নেইনি আমি। এই প্রথম এটি প্রকাশ করছি। আমার পরিকল্পনা হলো বাংলাদেশে ফিরে গিয়ে ওয়ানডে, টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির একটি পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলে অবসর নেওয়া।”
“আমি বলতে চাই, একটি সিরিজে সব সংস্করণ থেকে অবসর নিতে পারি। এটি টি-টোয়েন্টি দিয়ে শুরু করে ওয়ানডে ও টেস্ট, অথবা টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি-এভাবে হতে পারে। এর যেভাবেই হোক, আমি খুশি; কিন্তু আমি একটি পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলে অবসর নিতে চাই। এটাই আমি চাই।” - যোগ করেন তিনি।
২০২৪ সালে ভারত সফরের পর থেকেই জাতীয় দলের বাইরে সাকিব। তবে বিভিন্ন দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে নিয়মিতই খেলে বেড়াচ্ছেন সাকিব। এখন যেমন খেলছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইন্টারন্যাশনাল লিগ টি-টোয়েন্টিতে (আইএল টি-টোয়েন্টি)। দেশের হয়ে একটি সিরিজ খেলার অপেক্ষাতেই নিজেকে প্রস্তুত রাখছেন সাকিব, এমনটাই বুঝিয়েছেন, ‘‘আমি আশাবাদী। এজন্যই আমি (টি-টোয়েন্টি লিগ) খেলছি। আমার মনে হয় এটা হবে। আমার মনে হয়, যখন একজন খেলোয়াড় কিছু বলে, তার কথায় অটল থাকার চেষ্টা করে। তারা সাধারণত হঠাৎ করে তা পরিবর্তন করে না। আমি ভালো খেলি কি-না, তা বিবেচ্য নয়। এরপর, আমি একটা খারাপ সিরিজও খেলতে পারি।”
ঘরের মাঠে ভক্ত-সমর্থকদের সামনে বিদায় নিতে চান সাকিব,“আমার মনে হয় এটাই যথেষ্ট। এটা ভক্তদের বিদায় জানানোর একটা ভালো উপায় যে, তারা সবসময় আমাকে সমর্থন করেছে, ঘরের মাঠে সিরিজ খেলে তাদের কিছু ফিরিয়ে দেওয়া।”
ঢাকা/ইয়াসিন