‘আমরার লগে প্রতারণা করছে, টাকা ছাড়া যমুনা ছাড়তাছি না’
Published: 20th, May 2025 GMT
‘বৃষ্টিতে ভিজছি, রোদে শুকায়ছি। এহন ভিজা কাপর শরীলে শুকায়তাছি। আমরা টাকার লাইগা আইছি, টাকা ছাড়া যমুনার সামনে থেকে যামু না। কেন আমরার লগে প্রতারণা করছে, উপদেষ্টাও আমরার সাথে প্রতারণা করছে, সরকারে আমরারে লেখিত দিছে ৭ তারিখে আমরারে পাওনা-দেওনা বুঝাইয়া দিবে। কিন্তু তারার মিথ্যা কথায় আমরা আর এ রাস্তা ছাড়তাছি না।’- কথাগুলো বলছিলেন টিএনজেড গ্রুপের পোশাক কারখানায় ৪ বছর ধরে অপারেটর হিসেবে কাজ করে আসা শ্রমিক মিনারা বেগম।
মিনারা বেগমের মত শত শত শ্রমিক বেতন বোনাসের দাবিতে আজ মঙ্গলবার বিকেল তিনটা থেকে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদের সামনে সড়কের মোড়ে অবস্থান করছেন। এর মধ্যে দুই দফায় দীর্ঘ সময় বৃষ্টিতে ভিজেছেন এসব শ্রমিকেরা।
মিনারা বেগম যখন কথাগুলো বলছিলেন, তখন রাত ১০টা বাজে। দীর্ঘ ৭ ঘণ্টা অবস্থান করলেও তারা ঠিক জানেন না, কখন বাড়ি ফিরবেন। যে বেতনের আশায় ৮ দিন ধরে শ্রম ভবনের সামনে সড়কে অবস্থান করছেন, আজ যমুনার সামনে অবস্থান করছেন, সে আশা ঠিক পূরণ হবে কি না। তবে তাদের কথা হলো বেতন না নিয়ে বাসায় ফিরবেন না।
মিনারা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, গেল ঈদে বাচ্চাদের কিছুই দিতে পারেননি। আরেক ঈদ আসতেছে। এবারও কী কিছু দিতে পারবেন না, সেই প্রশ্ন তাঁর। তবে এবার বেতন নিয়েই ঘরে ফিরবেন বলে জোরের সঙ্গে বলেন। তিনি বলেন, ‘কেন আমড়ার লগে প্রতারণা করছে। যমুনার সামনে থেকে বেতন নিয়া আমরা বাড়ি ফিরব। কালো মুখে আমরা যাইতে চাই না বাচ্চাদের সামনে। হাসিমুখে যাতে যাইতে পারি, এ অবস্থান কইরা এই জায়গা ত্যাগ করব।’
কাকরাইল মসজিদের সামনে সড়কের মোড়ে রাতেও শত শত শ্রমিক অবস্থান নিয়ে আছেন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র স মন অবস থ ন আমর র
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সোনা কেনা বেড়েছে, মে মাসে ২০ টন
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সোনা কেনা বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো মে মাসে আরও ২০ টন সোনা কিনেছে। এই পরিমাণ আগের তুলনায় অনেকটা বেশি। খবর ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের।
মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনার চাহিদা বেড়েছে। কাজাখস্তানের ন্যাশনাল ব্যাংক মে মাসে সাত টন সোনা কিনেছে। এতে ব্যাংকটির মোট মজুতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯৯ টন। এ ছাড়া বছরের শুরু থেকে কাজাখস্তানের ন্যাশনাল ব্যাংকের মজুত বেড়েছে ১৫ টন। গোল্ড কাউন্সিল অবশ্য বলছে, সামগ্রিকভাবে সোনা মজুতের গতি কিছুটা শ্লথ হয়েছে।
তুরস্কের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মে মাসে ছয় টন সোনা কিনেছে। এতে চলতি বছর ব্যাংকটির মোট ক্রয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ টন। চলতি বছর সোনার সবচেয়ে বড় নিট ক্রেতা দেশ পোল্যান্ড। চলতি বছর দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৬৭ টন সোনা কিনেছে। মে মাসে দেশটির ক্রয়ের পরিমাণ ছিল ছয় টন।
চীনের পিপলস ব্যাংক ও চেক রিপাবলিকের ন্যাশনাল ব্যাংক, উভয়ই মে মাসে দুই টন করে সোনা কিনেছে। এ ছাড়া মে মাসে বিক্রির ক্ষেত্রে শীর্ষে ছিল সিঙ্গাপুরের মুদ্রানীতি কর্তৃপক্ষ। তারা পাঁচ টন সোনা বিক্রি করেছে। এরপর উজবেকিস্তান ও জার্মানির ডয়চে বুন্ডেসব্যাক উভয়ই এক টন করে বিক্রি করেছে।
চলতি বছরের হিসাবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় নিট সোনা বিক্রেতা দেশ উজবেকিস্তান। এ সময় দেশটি ২৭ টন সোনা বিক্রি করেছে। সিঙ্গাপুরের বিক্রির পরিমাণ ছিল ১০ টন।
সম্প্রতি প্রকাশিত ‘সেন্ট্রাল ব্যাংক গোল্ড রিজার্ভ সার্ভে ২০২৫’-এ দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারী কেন্দ্রীয় ব্যাংকারদের ৪৩ শতাংশ জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে সোনা মজুত বৃদ্ধি করা হবে। এ ছাড়া ৯৫ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, আগামী ১২ মাসে সারা বিশ্বে সরকারি পর্যায়ে সোনা মজুত বাড়বে। অর্থনৈতিক সংকট ও মূল্যস্ফীতির সময়ে বিকল্প সম্পদ ও ঝুঁকি প্রতিরোধী হিসেবে সোনার কার্যকারিতা—এই সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব ফেলেছে বলে তাঁরা উল্লেখ করেন।
এই মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে ‘অফিশিয়াল মনিটারি অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস ফোরামের গ্লোবাল পাবলিক ইনভেস্টর ২০২৫ প্রতিবেদনে। ৩২ শতাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, আগামী ১২ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে তারা সোনা মজুদ বাড়াতে চায়।