দুই সন্তানের পাওয়া উপহারের ৩০ হাজার টাকায় কেনা গাভি থেকে পাওয়া এঁড়ে বাছুরটি এখন পরিণত ষাঁড়। মনু নামের এই ষাঁড়টিই এখন মৌলভীবাজারের নুরুল-তানিয়া দম্পতির স্বপ্নসারথি।
জেলার রাজনগর উপজেলাধীন খাসপ্রেমনগর গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ও তানিয়া পেশায় শিক্ষক। নিজেদের সামান্য আয়ে দুই সন্তান নিয়ে সংসার চলে তাদের। সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে উদ্যোক্তা হওয়ার পরিকল্পনা নুরুল ও তানিয়ার। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মনুতেই ভরসা তাদের।
প্রায় ৬০০ কেজি ওজনের পরিণত ষাঁড় মনুকে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিক্রির কথা ভাবছেন এই দম্পতি। দাম হাঁকছেন সাড়ে ৩ লাখ টাকা। সেই টাকাই তাদের ভবিষ্যতের স্বপ্নযাত্রার পুঁজি হবে। এমনটাই আশা নুরুল-তানিয়ার।
খরস্রোতা মনু নদের পারে প্রান্তিক জনপদ খাসপ্রেমনগর গ্রাম। সেখানেই বাস করেন সহকারী অধ্যাপক নুরুল ইসলাম। বাড়িতে ঢুকতেই গোয়ালঘরের ভেতর চোখে পড়ে মনু নামের ২৬ মাস বয়সী ষাঁড়টি। তার পাশে রয়েছে ছয় মাস বয়সী আরেকটি বাছুর ও তাদের মা গাভিটি।
নুরুল ইসলাম জানান, স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই শিক্ষকতা করেন। স্কুল পড়ুয়া দুটি ছেলেমেয়ে রয়েছে। তাদের দুধ খাওয়ানো ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০২০ সালে ৩০ হাজার টাকায় একটি গাভি কেনেন। সেই গাভিটি জন্ম দেয় মনুর। বয়সের সঙ্গে দ্রুত শারীরিক প্রসার ও উচ্চতা বাড়তে থাকে মনুর। এতে মনে হয় কোনো বিদেশি প্রজাতির গরু। স্থানীয় পশুচিকিৎসকদের কেউ কেউ বলেছেন এটি ফিজিয়ান প্রজাতির সদস্য। মনুর শারীরিক বৃদ্ধির দিকে নজর রেখে শুরু করেন পরিচর্যা। ছয় মাসে লম্বায় প্রায় ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি মাপের ৫৯০ কেজি ওজনের ষাঁড়ে পরিণত হয় মনু। ষাঁড়টির দাম সাড়ে ৩ লাখ টাকা হাঁকা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গর
এছাড়াও পড়ুন:
৫২ বছর বয়সে এসএসসি পরীক্ষা, এ বছর ফেল করলেও দেলোয়ার বললেন—‘পাস করেই ছাড়ব’
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ৫২ বছর বয়সে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে আলোচিত হওয়া দেলোয়ার হোসেন উত্তীর্ণ হতে পারেননি। ইংরেজিতে অকৃতকার্য হয়েছেন। তবে তিনি আশা ছাড়েননি। তিনি জানান, আগামী বছর আবার এসএসসি পরীক্ষা দেবেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সারা দেশে একযোগে এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। দেলোয়ার বাগাতিপাড়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। দেলোয়ার হোসেন বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। তাঁর বাড়ি ওই ইউনিয়নের জামনগর পশ্চিমপাড়া গ্রামে।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এসএসসি পরীক্ষা মোটামুটি ভালোই দিয়েছিলাম। সব বিষয়ে পাস করলেও শুধু ইংরেজিতে ফেল করেছি। মন খারাপ হয়েছে সত্যি, তবে আমি এসএসসি পাস করবই ইনশা আল্লাহ। আগামীবার আরও ভালোভাবে প্রস্তুতি নেব।’
দেলোয়ার জানান, ১৯৮৫ সালে প্রাথমিকে বৃত্তি পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৮৮ সালে জামনগর দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে জুনিয়র বৃত্তি লাভ করেন। এরপর ১৯৯০ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। তবে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বহিষ্কৃত হন এবং এরপর পড়াশোনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। পরবর্তী সময়ে সংসারী হন এবং জনপ্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। পরিবারের অন্য ভাইবোনেরা সবাই উচ্চশিক্ষিত হওয়ায় মাঝেমধ্যে নিজের অপূর্ণতা অনুভব করতেন। সেই উপলব্ধি থেকে আবারও পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।