রাজবাড়ীতে হাটের আধিপত্য নিয়ে হামলা, তিনজনকে কুপিয়ে জখম
Published: 26th, May 2025 GMT
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার সোনাপুর বাজারের সবজি হাটের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে তিনজনকে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। গতকাল রোববার দুপুরে নবাবপুর ইউনিয়নের সোনাপুর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন কালুখালী উপজেলার মাছবাড়ি ইউনিয়নের চর কুলটিয়া গ্রামের আরজু মোল্লা (৪০), একই গ্রামের কদম আলী মণ্ডল (৩০) এবং নতুন চর গ্রামের বাচ্চু মিয়া (৩৮)। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে কদম আলীর দুই হাত ও পায়ে গুরুতর জখম হয়েছে। আরজুর হাতের কবজিতেও মারাত্মক আঘাত লেগেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোনাপুর বাজারের সবজি হাটের বন্দোবস্ত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল পার্শ্ববর্তী কালুখালী উপজেলার বেদবাড়িয়া গ্রামের শিমুল ও চর কুলটিয়ার আরজু মোল্লার মধ্যে। বাংলা নববর্ষের শুরুতে শিমুল হাটের দখল নিতে ব্যর্থ হন; আরজু মোল্লা তা নিয়ন্ত্রণে নেন। পরে মে মাসের শুরুতে শিমুল হাটে গেলে আরজুর লোকজন তাঁর ওপর হামলা চালান। দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে শিমুল সম্প্রতি এলাকায় ফেরেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, গতকাল দুপুরে আরজু মোল্লা, কদম আলী ও বাচ্চু মিয়া সোনাপুর বাজারে অবস্থান করছিলেন। ওই সময় ২০-২৫টি মোটরসাইকেলে করে দেশি অস্ত্রসহ একদল লোক এসে তাঁদের কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় শিমুলের সম্পৃক্ততার অভিযোগ করেছেন আহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা।
বালিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন বলেন, সোনাপুর বাজারের হাটের বন্দোবস্ত নিয়ে শিমুল ও আরজু মোল্লার মধ্যে বিরোধ ছিল। এ নিয়ে আগেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ হামলা প্রতিশোধমূলক বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী
রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।
৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।
আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগেতবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।