জলাবদ্ধতা নিরসনে ৩০০ কোটি টাকা চেয়ে মিলেছে ১০ কোটি: মেয়র ডা. শাহাদাত
Published: 26th, May 2025 GMT
চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্প অনুমোদন ও পর্যাপ্ত বরাদ্দ পাচ্ছেন না বলে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের ১৫-২০ বছরের পুরনো যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজ করা যাচ্ছে না। যন্ত্রপাতি কিনতে ৩০০ কোটি টাকা চাওয়া হলেও নালা, কালভার্ট পরিষ্কার করার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকা।’
শনিবার নগরের টাইগারপাসে সিটি করপোরেশন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
ডা.
তিনি বলেন, ‘২০২২ সালে প্রকল্পটি দেওয়া হয়েছে। আজ ২০২৫ সাল। জলাবদ্ধতার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পটি। খাল-নালা পরিষ্কারের মেশিনারিজ যদি না থাকে কীভাবে জলাবদ্ধতার এত বড় বিশাল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবেন? ১৫-১৬ লাখ টাকায় একেকটা মেশিন আমরা ভাড়া করছি।’
মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘জলাবদ্ধতায় বাজেট কী দিয়েছে? পাঁচ কোটি টাকা নালা পরিষ্কার করার জন্য, আড়াই কোটি টাকা একটা বক্স কালভার্ট পরিষ্কারের জন্য, ৮ থেকে ১০ কোটি সংস্কারের জন্য দিয়েছে। আমরা এগুলো চাইনি। আমরা চেয়েছি, মেশিনারিজ কেনার জন্য ৩০০ কোটি টাকা।’
চট্টগ্রামের জন্য সরকারি বাজেট বরাদ্দ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ঢাকা শহরে যে বাজেট দেওয়া হচ্ছে, চট্টগ্রাম শহরে ৭০ লাখ মানুষের জন্য সে বাজেট দেওয়া হয় কি? ৭০-৮০ লাখ মানুষের বাজেট কি এটাই? সিটি করপোরেশন একটা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। বছরে শিক্ষা খাতে ৮০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। স্বাস্থ্যসেবা খাত আছে। দেশের আর কোনো সিটি করপোরেশনে এগুলো নেই। জনগণ থেকে কর নিয়ে কি আমি মানুষকে সেবা দেব? তাহলে কি মানুষকে করের বোঝা চাপাব? আপনাকে তো বাজেট দিতে হবে। সে বাজেট আপনি ঢাকাতে দেন, চট্টগ্রাম শহরে দিতে চান না কেন?’
তিনি বলেন, ‘বরাদ্দ হচ্ছে মাত্র ৫ কোটি। কিন্তু তাতে প্রকল্প ১৪৮টি। মানুষ তো ভাববে যেন ৫ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট। এতই হাস্যকর যে, সেটাও আমাদের নয়, জেলা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। বলার পর আমাদের ৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে খালগুলো পরিষ্কার করার জন্য।’
জনসংযোগ সমিতি চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি অভীক ওসমানরে সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক ভুঁইয়া নজরুল। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্থপতি জেরিনা হোসাইন, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক নছরুল কদির, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার পাশা, সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইফতেখার উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, জনসংযোগ সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি এএসএম বজলুল হক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনসংযোগ সমিতি চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ সাকী।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র র জন য পর ষ ক র প রকল প বর দ দ
এছাড়াও পড়ুন:
ফেনীতে নেমে গেছে বন্যার পানি, আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়েছেন মানুষ
ফেনীর অধিকাংশ এলাকা থেকে নেমে গেছে বন্যার পানি। আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়েছেন বেশির ভাগ মানুষ। পানি নামার সঙ্গে স্পষ্ট হতে শুরু করেছে বন্যার ক্ষত। বন্যার কারণে ১০ জুলাই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তবে আজ রোববার আবার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যার কারণে জেলার ৮৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিলেন ৮ হাজার ৯৬৬ জন। এর মধ্যে ৮ হাজার ৪৫ জন গতকাল শনিবার দুপুরের আগেই আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়েন। এরপর রাতে আরও শতাধিক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়েছেন। বন্যায় ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া কিছু মানুষ এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফেনীর বেশির ভাগ এলাকায় ঘরবাড়ি থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। তবে কিছু নিচু এলাকায় পানি জমে রয়েছে। মূলত পানি সরার মতো ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে এসব জলজট তৈরি হয়েছে। পাঁচ উপজেলায় কিছু গ্রামীণ সড়ক এখনো পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এর বাইরে খাল-বিলে এখনো বন্যার পানি রয়েছে।
জেলার কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগ এবং জেলা প্রশাসনের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, বন্যায় পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় ২ হাজার ৩৫০টির বেশি মাছের ঘের ও পুকুর ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজার ৬৫৫ হেক্টর আমন বীজতলা। প্রাণিসম্পদ খাতে ৩ উপজেলায় ৬৪ লাখ ৯৮ হাজার ৭৫০ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া সড়ক ও অন্যান্য অবকাঠামোরও ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা কাজ করছেন।
সম্প্রতি টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের প্রবল চাপে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের ১২টি স্থানে ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, বন্যার পানি কমলেও ক্ষয়ক্ষতির কারণে মানুষ দুর্ভোগে রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত ঘর বসবাসের উপযোগী করতে ৮-১০ দিন সময় লাগবে। পরশুরাম পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড বাউর পাথর গ্রামের সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মোহাম্মদ সাইফুল বলেন, তিনি আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফিরে দেখেন ঘরের বেহাল অবস্থা। টিনশেডের ঘরটির ভেতরে থাকা সব মালপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এখন ঘর সংস্কার করার মতো প্রয়োজনীয় টাকাও তাঁর কাছে নেই। ঘরে কোমরপানি উঠেছিল বলে জানান সাইফুল ইসলাম।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কমুয়া-দক্ষিণ তারালিয়া সড়ক। আজ সকালে তোলা