‘মাদকাসক্ত’ ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা, বাবা-মা গ্রেপ্তার
Published: 19th, June 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা স্টেডিয়াম-সংলগ্ন শিয়াচর এলাকায় যুবকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে তাদের ভাড়া বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মাদকাসক্ত ও বখাটে স্বভাবের হওয়ায় তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নিহত রাজু সরকারের বাবা করুণা সরকার ও মা অনিতা রানী সরকার। গত মঙ্গলবার সকালে ফতুল্লার শিয়াচর লালখা এলাকা থেকে বস্তাবন্দি রাজুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পর তার বাবা রাতেই ফতুল্লা মডেল থানায় হত্যা মামলা করেছিলেন।
নিহত রাজু বাবা-মায়ের সঙ্গে শিয়াচর লালখা এলাকার দুলালের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকত। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাবা-মা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাজু সরকার মাদকাসক্ত ও বখাটে স্বভাবের ছিল। মাদকের টাকার জন্য মা-বাবাকে চাপ দেওয়াসহ মারধর করত।
সোমবার রাতেও টাকার জন্য খারাপ ব্যবহার করেছে জানিয়ে ওসি বলেন, ঘটনার দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে রাজু ঘুমিয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তাকে প্রথমে রুটি বানানোর বেলুন দিয়ে মাথা ও মুখে আঘাত করেন মা। এতে সে অচেতন হয়ে পড়লে বাবা শ্বাসরোধে হত্যা নিশ্চিত করেন।
রাত ২টার দিকে হাত-পা বেঁধে বস্তায় ভরে রাজুর বাবা নিজেই মাথায় করে লালখায় গলির নালায় লাশ ফেলে আসেন জানিয়ে ওসি আরও বলেন, পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর তার বাবা অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তার মা-বাবাকে গ্রেপ্তার করে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ হত য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রাজউক সার্ভারে ঢুকে নকশা অনুমোদন, গ্রেপ্তার ৩
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ইসিপিএস সার্ভার হ্যাক করে অনুপ্রবেশের মাধ্যমে জালিয়াতি করে নকশা অনুমোদনের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মতিঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজউকের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মারুফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ১৯ মে নকশা অনুমোদন-সক্রান্ত ইসিপিএস সার্ভারে অনুপ্রবেশ করে মাত্র ১৭ মিনিটে একটি ভবনের অনুমোদন পাশের ঘটনাটি নজরে আসে রাজউক কর্তৃপক্ষের।
জলাভূমি ও হাইট রেস্ট্রিকশন থাকা ভূমিতে ১৫ তলাবিশিষ্ট ১৮৫ ইউনিটের এই সুউচ্চ ভবনটির নকশা সব বিধিকে পাশ কাটিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পাস করিয়ে নেয় অনুপ্রবেশকারীরা। পরে রাজউক কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি জানতে পেরে প্রাথমিক তদন্তে একই উপায়ে আরও তিনটি ভবনের নকশা অনুমোদন শেষ পর্যায়ে প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় পায়। তৎক্ষণাৎ সার্ভারটি বন্ধ করে মতিঝিল থানায় সেদিনই একটি জিডি করা হয়।
পাস করা নকশার সূত্র ধরে রাবেয়া বারী নামক এক প্রকৌশলীর সন্ধান পায় রাজউক, যার স্বাক্ষর নকশাগুলোতে পাওয়া যায়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে মতিঝিলের নীলনকশা নামের একটি কম্পিউটারের দোকান ও সেখানকার এক কর্মচারী স্বপনের নাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনির হোসেন হাওলাদারের নেতৃত্বে গত ২২ মে একটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় মতিঝিলের নীলনকশা নামক দোকানটিতে। দোকানটির সঙ্গে অননুমোদিত নকশা অনুমোদনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। একই সঙ্গে দোকানটির মালিক এনামুলের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে রাজউকের নির্ধারিত ফি পরিশোধের প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ ছাড়াও দোকানের কয়েকটি কম্পিউটারে ওই অবৈধ ভবনগুলোর নকশা পাওয়া যায়। এতে দোকানের মালিক এনামুল ও কর্মচারী স্বপনের সম্পৃক্ততা প্রতীয়মান হয়। মোবাইল কোর্ট চলাকালে তাদের কাউকেই না পাওয়া যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মচারীদের পুলিশের আওতায় নেওয়া হয়।
রাজউকের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, এমন সংবেদনশীল বিষয়ে রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন এবং তাঁর নির্দেশনায় ৬ জুন রাজউক বাদী হয়ে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ধারাসহ দণ্ডবিধির ধারায় উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা করেন।
তিনি বলেন, মামলার এজাহারনামীয় ২১ নম্বর আসামি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠান ‘নীলাভ নকশাঘর’ এর মালিক মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ এজাহারনামীয় ২২ ও ২৩ নম্বর আসামি সজীব ও মুকুলকে পুলিশ মতিঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে।