Prothomalo:
2025-05-17@11:58:17 GMT

ছোট বোনের শ্বশুরবাড়ি

Published: 17th, May 2025 GMT

অনেক বছর ধরে যাব যাব করেও যাওয়া হয়নি। আসলে অপেক্ষা করছিলাম পদ্মা সেতুর জন্য। শেষ পর্যন্ত যাওয়া হলো গত ২ এপ্রিল। আমরা উত্তরার বাসা থেকে রওনা করলাম সকাল ৮টা ২০ মিনিটে। গাড়িতে আমার পরিবার, সঙ্গে মা। যাচ্ছি শরীয়তপুর সদর উপজেলার বুড়িরহাটের মুন্সিবাড়ি। আমার ছোট বোনের শ্বশুরবাড়ি।

রাস্তাঘাটে লোকজন তেমন নেই। চারপাশে মুগ্ধ করার মতো পরিবেশ। আমরা যাচ্ছি আর গল্প করছি। ইচ্ছা হলে ছবি তুলছি। ভিডিও করছি।

১১টা ১০–এ আমরা মুন্সিবাড়ির গেটে পৌঁছে গেলাম। মস্ত বড় গেট পার হয়ে আমাদের গাড়ি বাড়ির ভেতরে চলে গেল। রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল আমার ছোট বোনের জামাই রাজু, ভাগনে মাহিদ, আরও কেউ কেউ। বাড়ির গেট খুললেই চোখে পড়ল কাঠের একটা পুরোনো দোতলা কাছারিঘর।

পাকিস্তান আমলে আমার বোনের দাদাশ্বশুর ছিলেন এখানকার চেয়ারম্যান। তখন চেয়ারম্যানকে বলা হতো প্রেসিডেন্ট। তিনি এই ঘরে বসে কাজকর্ম করতেন। বিচার–সালিস করতেন। ভারতের আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।

কাছারিঘরের দুই পাশ দিয়ে দুটি রাস্তা চলে গেছে বাড়ির ভেতর। আমরা বাঁ দিকের রাস্তা দিয়ে ঢুকলাম। ভেতরে কাঠের গেট পেরোলেই পুরোনো সব ঘর। বাড়িটিতে বড় বড় প্রায় ১০টি এ রকম ঘর আছে। একটা ঘরের ভেতর অনেকগুলো কক্ষ।

আমরা ভেতরে চলে গেলাম। আমাদের জন্য ফুল ও মিষ্টি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাড়ির সবাই । একে একে আমাদের ফুল দিয়ে বরণ করা হলো। মিষ্টিমুখ করানো হলো সবাইকে। আমরাও সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলাম। তারপর নানা রকম মিষ্টি, পায়েস, ফলমূল দিয়ে নাশতার আয়োজন। গাছ থেকে ডাব পাড়া হলো। জম্পেশ নাশতার পর আমরা বেরিয়ে পড়লাম বাড়িটা একটু ঘুরে দেখার জন্য।

বাড়ির দুই পাশে দুটো পুকুর, ঘাট বাঁধানো। পুকুরের পাশেই বারবিকিউ করার জায়গা। জানলাম পুকুরঘাটে বিকেলবেলা বসে সবাই গল্প করে। আমার ছেলেমেয়েরা তো গিয়েই পুকুরে নেমে গেল। আমিও আর বাধা দিলাম না।

এ বাড়িটা মূলত আমার বোনের চার দাদাশ্বশুরের। তাঁরা কেউ দেশে থাকতেন, কেউ বিদেশে। তাঁদের ছেলেপুলেরা আছেন। তাঁরাও অনেকে দেশের বাইরে থাকেন। বেশির ভাগই থাকেন ঢাকায়। শত ব্যস্ততার মধ্যেও নানা উপলক্ষে বাড়িতে গিয়ে সময় কাটান তাঁরা। আমার ছোট বোনের ভাশুর সুফি ভাই আর চাচাশ্বশুর বাবু চাচা দুজনে মিলে এ বাড়ির সবকিছু দেখভাল করেন।

এ বাড়িতে আমরা যা–ই দেখছিলাম, তাতেই মুগ্ধ হচ্ছিলাম। আমার বোনের ভাশুর বাজারে গিয়ে প্রতিদিন নানা রকম মাছ, সবজি, ফলমূল আর বাচ্চাদের খাবার কিনে আনছিলেন। আর তাঁদের পুকুরের মাছ তো ছিলই। আমরা যাওয়ার পর ঢাকা থেকে আমার বোনের চাচিশাশুড়ি, ওনার বোন, আরও দুজন চাচাতো ভাই আমাদের সঙ্গে যুক্ত হন়। বাড়িতে আগে থেকেই আত্মীয়স্বজন ছিল। সব মিলে ৩০–৩৫ জন প্রতি বেলায় একসঙ্গে খাবার খেয়েছি।

এ বাড়ির নিয়মই হচ্ছে এক ঘরে মেহমান এলে পাশের চাচিরাও তখন একসঙ্গে হয়ে যান। সবাই মিলে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেন।

পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই আমি, আমার স্বামী, বোনের ছেলেমেয়ে চলে গেলাম একটা ইজিবাইক ভাড়া করে এলাকাটা ঘুরে দেখতে। অটোওয়ালা আমাদের নিয়ে গেল একটা বড় দিঘির পাশে। সেখান বিভিন্ন খাবারের দোকান। ওখানে নেমে আমরা অনেক ছবি তুললাম। সবুজে ঘেরা চারদিকটা ভালো লাগছিল।

ওখান থেকে ফিরে এসে দেখি, দুটি খাসি জবাই করার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। দুপুরের মধ্যে এলেন আরও আত্মীয়স্বজন। রাতের খাবার খেলাম প্রায় ১০০ জন। সেদিন সন্ধ্যায় আমাদের দাওয়াত ছিল বাবু চাচার বাড়িতে। সেখানে গিয়ে দেখি, তাঁর অনেক বন্ধুবান্ধব এসেছেন। উনি বারবিকিউর আয়োজন করলেন। বাচ্চারা খুব হইহুল্লোড় করল।

এই বাড়ির চারপাশে অনেক হিন্দু বসতি। সেখানে চলছিল বাসন্তীপূজা। পূজামণ্ডপের গানবাজনার শব্দ শোনা যাচ্ছিল। এখানকার মানুষের সম্প্রীতি দেখে মুগ্ধ হলাম।

চারদিকে আজ যেখানে ভাঙনের সুর, সেখানে শরীয়তপুরের বুড়িরহাটের এই মুন্সিবাড়ির সদস্যরা তাঁদের একতা দিয়ে পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন, যা দেখে আমি অনেক কিছু শিখলাম।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম র ব ন র র জন য আম র ছ আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

পুতিন ও আমি একসঙ্গে না বসা পর্যন্ত কিছুই হবে না: ট্রাম্প

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তাঁর নিজের একসঙ্গে বসা ছাড়া ইউক্রেন শান্তি আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ বৃহস্পতিবার কাতার থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) যাওয়ার পথে এ কথা বলেন তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী উড়োজাহাজ এয়ার ফোর্স ওয়ানে করে ইউএইতে যাওয়ার পথে সেখানে থাকা বিবিসির সাংবাদিক ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, রাশিয়া তুরস্কে যে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে, তা নিয়ে আপনি কি হতাশ?

জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘দেখুন, পুতিন ও আমি একসঙ্গে না বসা পর্যন্ত কিছুই হবে না, ঠিক আছে?’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘স্পষ্টত তাঁর (পুতিন) সেখানে যাওয়ার কথা ছিল না। তিনি যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন, ধারণা করেছিলেন আমিও সেখানে (তুরস্কে) যাচ্ছি।’

‘আমি না গেলে তিনি যাচ্ছিলেন না। আপনি পছন্দ করুন বা না করুন, আমি মনে করি, তিনি ও আমি একসঙ্গে না বসা পর্যন্ত কিছুই ঘটছে না। তবে আমাদের এটা সমাধান করতেই হবে। কারণ, অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে।’

এদিকে তুরস্কের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও তুরস্কের প্রতিনিধিদল আজ ইস্তাম্বুলে পৌঁছেছে। রাশিয়া-তুরস্কের প্রতিনিধিদলের মধ্যে আজ একটি বৈঠক হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত বৈঠক চূড়ান্ত হয়নি।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সর্বাত্মক হামলা করে রাশিয়া। এর পর থেকে তিন বছরের বেশি সময় ধরে এই যুদ্ধ চলছে। ২০২২ সালে রাশিয়ার হামলার পরপরই দুই পক্ষের প্রতিনিধিদের মধ্যে কয়েক দফা সরাসরি বৈঠক হয়। তুরস্কেও তারা বৈঠক করেছিল। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে এই সংলাপ বন্ধ হয়ে যায়।

আজ তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেছেন, ‘পক্ষগুলোর অবস্থানে যদি সামঞ্জস্য তৈরি করা যায় এবং বিশ্বাস স্থাপন করা যায়, তাহলে তা শান্তির পথে একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে গণ্য হবে।’ আজ তুরস্কের আনাতলিয়া শহরে ন্যাটোর একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

হাকান ফিদান জানান, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বর্তমানে আঙ্কারায় রয়েছেন। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠক করার জন্য তিনি এখানে এসেছেন।

হাকান ফিদান বলেন, ‘এই সফরগুলোই প্রমাণ করে, অবশেষে শান্তির জন্য প্রয়োজনীয় সদিচ্ছা দেখা যাচ্ছে।’ আশাবাদী হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে পুতিন বলেছিলেন, তিনি ইউক্রেনের নেতার সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করতে প্রস্তুত। প্রাথমিক গড়িমসির পর জেলেনস্কিও রুশ নেতার সঙ্গে বৈঠকে সম্মত হয়েছিলেন।

আজ তুরস্কের আঙ্কারায় এসেনবোগা বিমানবন্দরে পৌঁছে রানওয়েতে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেখানে তিনি রাশিয়ার প্রতিনিধিদলের উপস্থিতি নিয়ে কটাক্ষ করেন।

জেলেনস্কি বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার প্রতিনিধিত্বের স্তর সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। তবে যেটুকু শুনেছি, তাতে তাদের লোকদেখানো বলে মনে হচ্ছে।’ তিনি জানান, আলোচনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ইউক্রেন নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নতুন প্রেমে ডুব দিলেন সামান্থা
  • সামান্থার জীবনে নতুন প্রেমিক!
  • পার্বত্যাঞ্চলে জীবনমান উন্নয়নে মৎস্য সম্পদ কাজে লাগাতে হবে: উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা
  • ফের শাহরুখের সিনেমায় রানী মুখার্জি!
  • বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন একসঙ্গে চলতে হবে: জোনায়েদ সাকি
  • সাতক্ষীরায় হিমসাগর আমে বাজার সয়লাব, দাম পড়ে যাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি নেই
  • পুতিন ও আমি একসঙ্গে না বসা পর্যন্ত কিছুই হবে না: ট্রাম্প
  • আবার একসঙ্গে আমির-হিরানি
  • ১১ বছর পর আমির-হিরানি