Prothomalo:
2025-11-03@13:20:02 GMT

ছোট বোনের শ্বশুরবাড়ি

Published: 17th, May 2025 GMT

অনেক বছর ধরে যাব যাব করেও যাওয়া হয়নি। আসলে অপেক্ষা করছিলাম পদ্মা সেতুর জন্য। শেষ পর্যন্ত যাওয়া হলো গত ২ এপ্রিল। আমরা উত্তরার বাসা থেকে রওনা করলাম সকাল ৮টা ২০ মিনিটে। গাড়িতে আমার পরিবার, সঙ্গে মা। যাচ্ছি শরীয়তপুর সদর উপজেলার বুড়িরহাটের মুন্সিবাড়ি। আমার ছোট বোনের শ্বশুরবাড়ি।

রাস্তাঘাটে লোকজন তেমন নেই। চারপাশে মুগ্ধ করার মতো পরিবেশ। আমরা যাচ্ছি আর গল্প করছি। ইচ্ছা হলে ছবি তুলছি। ভিডিও করছি।

১১টা ১০–এ আমরা মুন্সিবাড়ির গেটে পৌঁছে গেলাম। মস্ত বড় গেট পার হয়ে আমাদের গাড়ি বাড়ির ভেতরে চলে গেল। রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল আমার ছোট বোনের জামাই রাজু, ভাগনে মাহিদ, আরও কেউ কেউ। বাড়ির গেট খুললেই চোখে পড়ল কাঠের একটা পুরোনো দোতলা কাছারিঘর।

পাকিস্তান আমলে আমার বোনের দাদাশ্বশুর ছিলেন এখানকার চেয়ারম্যান। তখন চেয়ারম্যানকে বলা হতো প্রেসিডেন্ট। তিনি এই ঘরে বসে কাজকর্ম করতেন। বিচার–সালিস করতেন। ভারতের আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।

কাছারিঘরের দুই পাশ দিয়ে দুটি রাস্তা চলে গেছে বাড়ির ভেতর। আমরা বাঁ দিকের রাস্তা দিয়ে ঢুকলাম। ভেতরে কাঠের গেট পেরোলেই পুরোনো সব ঘর। বাড়িটিতে বড় বড় প্রায় ১০টি এ রকম ঘর আছে। একটা ঘরের ভেতর অনেকগুলো কক্ষ।

আমরা ভেতরে চলে গেলাম। আমাদের জন্য ফুল ও মিষ্টি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাড়ির সবাই । একে একে আমাদের ফুল দিয়ে বরণ করা হলো। মিষ্টিমুখ করানো হলো সবাইকে। আমরাও সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলাম। তারপর নানা রকম মিষ্টি, পায়েস, ফলমূল দিয়ে নাশতার আয়োজন। গাছ থেকে ডাব পাড়া হলো। জম্পেশ নাশতার পর আমরা বেরিয়ে পড়লাম বাড়িটা একটু ঘুরে দেখার জন্য।

বাড়ির দুই পাশে দুটো পুকুর, ঘাট বাঁধানো। পুকুরের পাশেই বারবিকিউ করার জায়গা। জানলাম পুকুরঘাটে বিকেলবেলা বসে সবাই গল্প করে। আমার ছেলেমেয়েরা তো গিয়েই পুকুরে নেমে গেল। আমিও আর বাধা দিলাম না।

এ বাড়িটা মূলত আমার বোনের চার দাদাশ্বশুরের। তাঁরা কেউ দেশে থাকতেন, কেউ বিদেশে। তাঁদের ছেলেপুলেরা আছেন। তাঁরাও অনেকে দেশের বাইরে থাকেন। বেশির ভাগই থাকেন ঢাকায়। শত ব্যস্ততার মধ্যেও নানা উপলক্ষে বাড়িতে গিয়ে সময় কাটান তাঁরা। আমার ছোট বোনের ভাশুর সুফি ভাই আর চাচাশ্বশুর বাবু চাচা দুজনে মিলে এ বাড়ির সবকিছু দেখভাল করেন।

এ বাড়িতে আমরা যা–ই দেখছিলাম, তাতেই মুগ্ধ হচ্ছিলাম। আমার বোনের ভাশুর বাজারে গিয়ে প্রতিদিন নানা রকম মাছ, সবজি, ফলমূল আর বাচ্চাদের খাবার কিনে আনছিলেন। আর তাঁদের পুকুরের মাছ তো ছিলই। আমরা যাওয়ার পর ঢাকা থেকে আমার বোনের চাচিশাশুড়ি, ওনার বোন, আরও দুজন চাচাতো ভাই আমাদের সঙ্গে যুক্ত হন়। বাড়িতে আগে থেকেই আত্মীয়স্বজন ছিল। সব মিলে ৩০–৩৫ জন প্রতি বেলায় একসঙ্গে খাবার খেয়েছি।

এ বাড়ির নিয়মই হচ্ছে এক ঘরে মেহমান এলে পাশের চাচিরাও তখন একসঙ্গে হয়ে যান। সবাই মিলে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেন।

পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই আমি, আমার স্বামী, বোনের ছেলেমেয়ে চলে গেলাম একটা ইজিবাইক ভাড়া করে এলাকাটা ঘুরে দেখতে। অটোওয়ালা আমাদের নিয়ে গেল একটা বড় দিঘির পাশে। সেখান বিভিন্ন খাবারের দোকান। ওখানে নেমে আমরা অনেক ছবি তুললাম। সবুজে ঘেরা চারদিকটা ভালো লাগছিল।

ওখান থেকে ফিরে এসে দেখি, দুটি খাসি জবাই করার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। দুপুরের মধ্যে এলেন আরও আত্মীয়স্বজন। রাতের খাবার খেলাম প্রায় ১০০ জন। সেদিন সন্ধ্যায় আমাদের দাওয়াত ছিল বাবু চাচার বাড়িতে। সেখানে গিয়ে দেখি, তাঁর অনেক বন্ধুবান্ধব এসেছেন। উনি বারবিকিউর আয়োজন করলেন। বাচ্চারা খুব হইহুল্লোড় করল।

এই বাড়ির চারপাশে অনেক হিন্দু বসতি। সেখানে চলছিল বাসন্তীপূজা। পূজামণ্ডপের গানবাজনার শব্দ শোনা যাচ্ছিল। এখানকার মানুষের সম্প্রীতি দেখে মুগ্ধ হলাম।

চারদিকে আজ যেখানে ভাঙনের সুর, সেখানে শরীয়তপুরের বুড়িরহাটের এই মুন্সিবাড়ির সদস্যরা তাঁদের একতা দিয়ে পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন, যা দেখে আমি অনেক কিছু শিখলাম।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম র ব ন র র জন য আম র ছ আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?

বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। অভিনয় গুণে কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ে দোলা দিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে যশ-খ্যাতি যেমন পেয়েছেন, তেমনি আয় করেছেন মোটা অঙ্কের অর্থও। রবিবার (২ নভেম্বর) ৬০ বছর পূর্ণ করে একষট্টিতে পা দেবেন এই তারকা। চলুন, বিশেষ এই দিনে শাহরুখ খানের অজানা সাতটি তথ্য জেনে নিই—

এক. ১৯৯২ সালে ‘দিওয়ানা’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন শাহরুখ খান। রোমান্টিক ঘরানার এ সিনেমায় অভিনয় করে নজর কাড়েন তিনি। সিনেমাটিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে সেরা নবাগত অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ। কিন্তু সিনেমাটিতে শাহরুখ খানের চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল তারকা পুত্র আরমান কোহলির। অভিজ্ঞ পরিচালক রাজ কুমার কোহলির রাগী ছেলে আরমান সিনেমাটির একটি শিডিউল শেষ করে পরিচালক রাজ কানওয়ারের সঙ্গে ঝগড়া করে সেট ছেড়ে চলে যান। প্রযোজকরা তখন তড়িঘড়ি করে একটি নতুন মুখ খুঁজতে থাকেন, যে চরিত্রটির সঙ্গে মানানসই। তারপর আরমানের চরিত্রটি রূপায়নের সুযোগ পান নবাগত শাহরুখ খান।

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানের সন্ত্রাসী তালিকায় সালমান খান কেন?

নেচে প্রেমের গুঞ্জন উসকে দিলেন শাহরুখকন্যা

দুই. দক্ষিণী সিনেমার বরেণ্য অভিনেতা কমল হাসানের ‘হে রাম’ সিনেমায় শাহরুখের চরিত্রের নাম ছিল আমজাদ খান। ‘শোলে’ সিনেমায় গব্বর সিংয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন আমজাদ খান। তার নাম অনুসারে ‘হে রাম’ সিনেমার আমজাদ চরিত্রের নামকরণ করা হয়। কারণ কমল হাসান ও আমজাদ খানের খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলেন। এই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য এক টাকাও পারিশ্রমিক নেননি শাহরুখ। এক সাক্ষাৎকারে শাহরুখ খান বলেছিলেন—“কমল হাসানের মতো অভিনেতার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়ে কেউ টাকা নেয় না।”

তিন. শাহরুখ ও আমির খান কখনো একসঙ্গে কোনো সিনেমায় কাজ করেননি। তবে আমির খানের কাজিন মনসুর আলীর ‘জোশ’ সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত হয়েছিল। মনসুর চেয়েছিলেন, সিনেমার গল্পে আমির খান ঐশ্বরিয়ার প্রেমিক চরিত্রে অভিনয় করুক। কিন্তু আমির চেয়েছিলেন, ঐশ্বরিয়ার জমজ ভাইয়ের চরিত্র। কিন্তু তা হয়নি। ফলে কাজটি ছেড়ে দেন আমির খান। সর্বশেষ পরিচালকের নির্ধারিত চরিত্রে (ম্যাক্স ডিয়াস অর্থাৎ ঐশ্বরিয়ার ভাই) অভিনয় করেন শাহরুখ খান।

চার. শাহরুখ খান প্রয়াত বলিউড অভিনেত্রী শ্রীদেবীর বিপরীতে অভিনয়ের জন্য মুখিয়ে ছিলেন। সর্বশেষ ‘আর্মি’ সিনেমায় সেই সুযোগ হয়। যদিও সিনেমাটিতে ক্যামিও চরিত্রে (মেজর অর্জুন) অভিনয়ের সুযোগ পান, তারপরও এটি লুফে নেন শাহরুখ খান। 

পাঁচ. ‘কয়লা’ সিনেমায় শঙ্কর চরিত্রে অভিনয় করেন শাহরুখ। চরিত্রটি ছিল বোবার। প্রথমে তার কোনো সংলাপই ছিল না। কিন্তু এ নিয়ে চলচ্চিত্র পরিবেশকরা আপত্তি জানান। তারা প্রশ্ন তুলেন—‘সুপারস্টারের মুখে একটি কথাও থাকবে না?’ তাই পরিচালক-প্রযোজক রাকেশ রোশান বাধ্য হয়ে স্বপ্নদৃশ্যে শাহরুখের কিছু সংলাপ যোগ করে দেন।

ছয়. বলিউড বাদশা শাহরুখ খান তার সব সহ-অভিনয়শিল্পীদেরই ভালোবাসেন। কিন্তু তার প্রিয় হলেন রাখি গুলজার। ‘করন অর্জুন’ সিনেমায় শাহরুখের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেন এই অভিনেত্রী। শাহরুখ তাকে নিজের মায়ের মতোই ভালোবাসেন।

সাত. শাহরুখ খান অনেকবার নিজের নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। ১৯৯৮ সালে ‘আচানাক’ সিনেমায় প্রথমবার শাহরুখ চরিত্রে অভিনয় করেন। যদিও গোবিন্দ অভিনীত সিনেমাটিতে শাহরুখের ক্যামিও চরিত্র ছিল। এর দুই বছর পর এম. এফ. হোসেনের ‘গজ গামিনি’ সিনেমায় নিজের চরিত্রে অভিনয় করেন। এটিও ক্যামিও চরিত্র ছিল। 

১৯৯৫ সালে শাহরুখ খানের সাংবাদিক বন্ধু সমর খান, শাহরুখের উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন। তাতে শাহরুখ খান নিজের নামে অভিনয় করেন। ২০০৯ সালে জোয়া আখতারের ‘লাক বাই চান্স’, ২০১১ সালে নবাগত পরিচালক সাহিল সাংঘার ‘লাভ ব্রেকআপস জিন্দেগি’, ২০১০ সালে মকরন্দ দেশপান্ডের শাহরুখ বোলা ‘খুবসুরত হ্যায় তু’ সিনেমায় শাহরুখ নিজের নাম নিয়েই পর্দায় হাজির হন।

তথ্যসূত্র: বলিউড হাঙ্গামা

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সব সিম লক রেখে কিস্তিতে স্মার্টফোন বিক্রির সুযোগ পাচ্ছে অপারেটররা
  • আগামী বছর নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা: ধর্ম উপদেষ্টা
  • শাহরুখের ব্যাপারে সাবধান করলেন জুহি চাওলা
  • শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?