পাবনায় দুই মুক্তিযোদ্ধার নামে করা স্টেডিয়াম ও সুইমিংপুলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

পাবনার শহীদ অ্যাডভোকেট আমিনউদ্দিন স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন করে জেলা স্টেডিয়াম, পাবনা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল সুইমিংপুলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে পাবনা জেলা সুইমিংপুল। 

জেলা প্রশাসনে পাঠানো যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক পত্র থেকে জানা যায়, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ নির্মিত দেশের বিভিন্ন জেলার স্টেডিয়াম ও সুইমিংপুলের নাম একযোগে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে এই দুই প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। 

গত ২৩ মার্চ নেয়া এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকরের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে পাঠানো পত্রে। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে স্টেডিয়াম ও সুইমিংপুলে নতুন নাম লেখা হয়েছে।

ক্রীড়া স্থাপনা থেকে জেলার নেতৃস্থানীয় দুই মুক্তিযোদ্ধার নাম বাদ দেয়ায় অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 

পাবনার সাংস্কৃতিক সংগঠক হাসান মাহমুদ বলেন, ‘‘কয়েকদিন আগে মহানায়িকা সূচিত্রা সেনের নামে এডওয়ার্ড কলেজে ছাত্রীনিবাসের নাম পরিবর্তন করা হলো। সে নিয়ে বলা হলো, পাবনায় এ নায়িকার অবদান কি বা এটা-সেটা প্রশ্ন। কিন্তু শহীদ অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিনের ক্ষেত্রে কী বলবেন? কেন স্টেডিয়াম থেকে তার নাম মুছে দেয়া হলো? এভাবে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের অসম্মানিত করা আগামীর জন্য কোনো ভালো বার্তা বহন করে না।’’ 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা শাওন হোসাইন বলেন, ‘‘একাত্তর আমাদের শেকড় ও চব্বিশ আমাদের অস্তিত্ব। এর কোনোটাকেই অস্বীকার করার সুযোগ নেই। কিন্তু ৫ আগস্টের পর ২৪ এবং ৭১ কে মুখোমুখি দাঁড় করানোর ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে অপ্রয়োজনীয়ভাবে এই নাম বদলে দেয়া হয়েছে।’’  তিনি এর নিন্দা জানান এবং পূর্বের নাম বহালের দাবি জানান। 

নাম পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘‘এই পরিবর্তনের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্টতা নেই। কোনো প্রস্তাবনাও পাঠানো হয়নি। আমরা কেবল ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আদেশ অবিলম্বে বাস্তবায়নের নির্দেশনা পালন করেছি মাত্র।’’ 

ঢাকা/শাহীন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

আন্তর্জাতিক এসএমএস সেবার ব্যবসা চান আইজিডব্লিউ অপারেটররা

মোবাইল অপারেটররা আন্তর্জাতিক খুদে বার্তা সেবা (এটুপি এসএমএস) নিয়ন্ত্রণ করায় প্রতি মাসে সরকার ৩০ লাখ ডলার রাজস্ববঞ্চিত হচ্ছে বলে দাবি করেছেন আন্তর্জাতিক গেটওয়ে অপারেটরদের সংগঠন আইজিডব্লিউ অপারেটরস ফোরাম (আইওএফ)। সংগঠনের নেতারা বলছেন, তাঁদের মাধ্যমে এটুপি সেবা পরিচালনা করা হলে সরকার বর্তমানের তুলনায় আট গুণ বেশি রাজস্ব পাবে। পাশাপাশি আইজিডব্লিউ অপারেটরদের টিকে থাকা এবং দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের নতুন উৎসও তৈরি হবে।

রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) শিল্পের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় তাঁরা এই দাবি করেন। কর্মশালাটি আয়োজন করেন টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি)।

কর্মশালায় আইওএফের সভাপতি আসিফ রাব্বানী বলেন, ‘আইএলডিটিএস (আন্তর্জাতিক দূরপাল্লার টেলিযোগাযোগ সেবা) নীতিমালায় আন্তর্জাতিক এসএমএস পরিষেবা আইজিডব্লিউর মাধ্যমে পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। নীতিমালার ব্যত্যয় ঘটিয়ে মোবাইল অপারেটরদের মাধ্যমে সেবা পরিচালনা করে সরকার বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে।’

আসিফ রাব্বানী আরও বলেন, আইএলডিটিএস নীতিমালা কার্যকর হলে বছরে তাঁরা প্রায় ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব সরকারের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারবেন। একই সঙ্গে আইজিডব্লিউ অপারেটরদের ভবিষ্যতে টিকে থাকা নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তা–ও দূর হবে।

আন্তর্জাতিক কল আসা কমেছে প্রায় ১০ গুণ

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইওএফের চিফ অপরেটিং অফিসার মুশফিক মঞ্জুর। প্রবন্ধে আইজিডব্লিউ খাতের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়, বিটিআরসিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত নজরদারির অভাবে অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক কল বেড়েছে। ফলে বর্তমানে বৈধ পথে কল আসার পরিমাণ ১০ কোটি থেকে ১ কোটি ২০ লাখে নেমেছে।

প্রবন্ধে নতুন টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং নীতিমালা বিষয়ে বলা হয়েছে, দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের সব নিয়ন্ত্রণ বহুজাতিক/বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নীতিমালাটি তৈরি করা হয়েছে। নীতিমালাটি বাস্তবায়িত হলে মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোর একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হবে এবং স্থানীয় উদ্যোক্তারা ছিটকে পড়বেন। প্রবন্ধে আরও বলা হয়েছে, খসড়া নীতিমালায় জাতীয় স্বার্থকে বলি দিয়ে বিদেশি স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে এবং দেশের জাতীয় নিরাপত্তাকে গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হচ্ছে।

কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন টিআরএনবির সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান রবিন। কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন টিআরএনবির সভাপতি সমীর কুমার দে। কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন আইওএফের নেতারা এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকেরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ