রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন জুলাই আন্দোলনে চোখ হারানো চার যুবক বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। বর্তমানে তারা শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তারা এখন শঙ্কা মুক্ত আছেন বলে জানা গেছে।

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে আহত হয়ে ভর্তি থাকা চারজন বিষপান করেছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তারা শঙ্কামুক্ত আছেন, সুস্থ আছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ হাসপাতালে জুলাই ফাউন্ডেশনের সিইওর সঙ্গে আমাদের একটি মিটিং ছিল। এজন্য তিনি হাসপাতালে এসেছিলেন। এ সময় ওই চারজন বিষপান করেন। এরপরই তাদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়। তারা সিইওর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এ ঘটনা ঘটাতে পারে। তাদের মধ্যে একজন একমাস আগে সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা নিয়ে এসেছেন।’

আজ দুপুরে হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে বৈঠক চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাদের তাৎক্ষণিকভাবে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিষপানকারী চারজন হলেন- শিমুল, মারুফ, সাগর ও আখতার হোসেন (আবু তাহের)।

জানা গেছে, জুলাই ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) সঙ্গে চলমান বৈঠকের সময় ওই চারজন দাবি নিয়ে তার কক্ষে যান। সিইও তাদের অপেক্ষা করতে বললে ক্ষুব্ধ হয়ে সেখানেই বিষপান করেন তারা। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাদের কাছে আগেই বিষ ছিল।

চোখ হারানো আহতরা অভিযোগ করেছেন, ‘দীর্ঘ নয় মাসেও তাদের উন্নত চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং প্রতিশ্রুতি দিয়ে নানা বাহানা করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বললেও তা বাস্তবে ঘটেনি। আমাদের চিকিৎসার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি।’

চিকিৎসকরা বলেন, ‘যারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাদের বেশিরভাগই মানসিকভাবে ভালো নেই। তারা আশঙ্কা করছেন যে, যদি হাসপাতাল থেকে চলে যান, তাহলে তারা পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন সমস্যা এবং সংকটে পড়তে পারেন। তাই তারা হাসপাতাল ছাড়তে চাচ্ছেন না।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ল ই অভ য ত থ ন আহত চ রজন

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশি প্রেসক্রিপশনে দেশ চলবে না

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা চাই মুজিববাদী সংবিধান অবিলম্বে বিলোপ করে বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন হয় এমন সংবিধান কার্যকর করতে। কোনো বৈদেশিক শত্রুর প্রেসক্রিপশনে আর এই দেশ পরিচালিত হবে না। নতজানু হয়ে নয়; দেশ চলবে ন্যায্যতার সঙ্গে।’

রোববার সকালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জারটেক এলাকায় দলের পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। গণমানুষের ভাবনা জানা এবং আগামীর বাংলাদেশ নিয়ে পরিকল্পনার কথা জানাতে পথসভার আয়োজন করে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এনসিপি। এদিন দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৯টি স্থানে পথসভা করেন দলটির নেতারা। সাংগঠনিক এই কর্মসূচিতে হাসনাত আবদুল্লাহর সঙ্গে ছিলেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্য সচিব মীর আরশাদুল হক, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা আলম মিতু, মো. আতাউল্লাহসহ বেশ কয়েকজন নেতা।

কর্মসূচি শুরুর আগে চট্টগ্রাম নগরের বিপ্লব উদ্যানে সাংবদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ চায় বিএনপি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসনাত বলেন, ‘যে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের কথা বলা হচ্ছে, তারা গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে প্রতিনিধিত্ব করছেন। তারা কোনো রাজনৈতিক দলের বা এনসিপির প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের বিপক্ষে একটি মহল অবস্থান নিয়েছে। একটি পক্ষ দেশকে বিভাজনের ষড়যন্ত্রেও লিপ্ত হয়েছে। ভেবেছিলাম, ৫ আগস্ট আমাদের লড়াই শেষ হয়েছে। তবে এ লড়াই দীর্ঘ। জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে রাজনৈতিক ছোট ছোট মতপার্থক্য দূরে রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’ এ সময় অবিলম্বে বিচার, সংস্কার এবং নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ প্রকাশ করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান হাসনাত।

আনোয়ারা উপজেলার চাতুরী চৌমুহনী বাজারের পথসভায় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আর ইউএনও-ওসি’ দিয়ে রাতের নির্বাচন হবে না। কেউ একসঙ্গে দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না।’

বাঁশখালী উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে হাসনাত বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। সচিবালয়ে বসে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না।’ সাতকানিয়ার কেরানীহাট চত্বরে পথসভায় তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দল, আমাদের নিজেদের বিশৃঙ্খলা, চারদিকে প্রশাসনিকভাবে অসহযোগিতার মাধ্যমে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার অপচেষ্টা চলছে।’ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন দেব।’ 

লোহাগাড়া উপজেলায় পথসভায় হাসনাত বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের সব স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন অবৈধ ঘোষণার পর নির্বাচন দিতে হবে।’ রাতে পটিয়া থানার মোড়ে তিনি বলেন, ‘যারা চাঁদাবাজি ও লুটপাট করে না, আগামীতে তাদের নির্বাচিত করতে হবে।
(তথ্য দিয়েছেন আনোয়ারা, কর্ণফুলী, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও পটিয়া প্রতিনিধি)

সম্পর্কিত নিবন্ধ