চব্বিশের আন্দোলনে দেয়ালে দেয়ালে দেখা গেছে নজরুলের কবিতা আর গান: ফারুকী
Published: 25th, May 2025 GMT
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম মূলতই স্বাধীনতার কবি ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেছেন, নজরুলের সৃষ্টিগুলোর দিকে তাকালে দেখা যাবে, যে লেখাগুলো তিনি ব্রিটিশবিরোধী এই ভূখণ্ডের মানুষের স্বাধীনতার জন্য লিখেছিলেন। সেই একই লেখা চব্বিশ সালে এসে বাংলাদেশের তরুণেরা তাঁদের স্বাধীনতার জন্য ব্যবহার করেছেন। এটাই হচ্ছে শিল্পের শক্তি।’
কুমিল্লায় কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আজ রোববার বিকেলে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এবার নজরুলের জন্মবার্ষিকী জাতীয়ভাবে কুমিল্লায় পালিত হচ্ছে। ‘চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান, নজরুলের উত্তরাধিকার’ প্রতিপাদ্যে তিন দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় রয়েছে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন।
অনুষ্ঠানে ফারুকী বলেন, ‘নজরুল কত বছর আগে লিখেছেন, তখন হয়তো জানতেনও না বাংলাদেশে একসময় ‘হাসিনাশাহি’ নামে একজন নাজিল হবে এবং তাঁকে তাড়ানোর জন্য বাংলাদেশের তরুণদের নজরুলের দ্বারস্থ হতে হবে। কিন্তু ঘটনাটা ঘটেছে। চব্বিশের আন্দোলনে দেয়ালে দেয়ালে দেখা গেছে নজরুলের কবিতা আর গান। নজরুল মূলতই ছিলেন স্বাধীনতার কবি।’
সার্বভৌমত্ব ছাড়া কোনো দেশেরই স্বাধীনতার সচল থাকতে পারে না উল্লেখ করে মোস্তফা সরয়ার বলেন, ‘চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পরে আমরা অল্প কয়েক দিনের সরকার, এরপর গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার আসবে। বাংলাদেশকে আর এমন জায়গায় নেওয়া যাবে না, যখন অন্য একটি দেশ থেকে একজন পররাষ্ট্রসচিব এসে বলবে, “এই এরশাদ তোমাকে নির্বাচনে যেতে হবে। তুমি নির্বাচনে না গেলে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসবে” অথবা পাশের দেশ নিয়ে কোনো একটি স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণে আমার দেশের কোনো আবরার মারা যাবে না—এই বিশ্বাস আমরা রাখতে চাই।’
জেলা শিল্পকলা একাডেমির আঙিনায় স্থাপিত ‘চেতনায় নজরুল’ ম্যুরালে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। পরে শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনার যদি জুলাই মাসজুড়ে আন্দোলনের দিকে তাকান, তাহলে দেখবেন নজরুল কীভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছিলেন। দেয়ালের লেখনীতে দেখবেন নজরুলের কবিতা-গান কীভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। নজরুলের স্মৃতিগুলো অনেক স্থানে এখনো অবহেলিত। আমরা স্মৃতি রক্ষা শুরু করি, কিন্তু স্মৃতি সংরক্ষণ করি না। এটি আমাদের খারাপ দিক। তবে আমাদের সুনজর রয়েছে। নজরুলের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য আমাদের চেষ্টা থাকবে।’
জাতীয় কবির জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে চারজনকে ‘নজরুল পুরস্কার’ প্রদান করা হয়। আজ রোববার বিকেলে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ব ধ নত র অন ষ ঠ ন র শ ল পকল নজর ল র এক ড ম র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ফেসবুকে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য না করার নির্দেশনা সিলেট জেলা বিএনপির
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দায়িত্বহীন, অশালীন বা বিদ্বেষপূর্ণ পোস্ট, মন্তব্য কিংবা তথ্য শেয়ার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সিলেট জেলা বিএনপি। দলের কেউ এ নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
গতকাল রোববার রাতে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন জেলা বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক মাহবুব আলম।
এদিকে দলের একজন জ্যেষ্ঠ নেতার বিরুদ্ধে ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ ও শিষ্টাচার–বহিভূর্ত মন্তব্য করায় গতকাল রাতে বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবেদুর রহমানকে (আছকির) সাময়িক বহিষ্কারের পাশাপাশি সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলেছে জেলা বিএনপি। এ ছাড়া অনলাইন গণমাধ্যমে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী বক্তব্য দেওয়ার জন্য জেলা বিএনপির সহসভাপতি ফখরুল ইসলামকে (ফারুক) সতর্কীকরণ নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট জেলা বিএনপির আওতাধীন কিছু ইউনিটের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কার্যক্রমে অনভিপ্রেত ও পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পরিলক্ষিত হয়েছে। বিশেষ করে বিশ্বনাথ উপজেলা, বিশ্বনাথ পৌরসভা ও ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কিছু নেতা-কর্মীর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য, কটূক্তি ও বিভাজন সৃষ্টিকারী পোস্ট প্রচারিত হয়েছে। যা দলীয় শৃঙ্খলা ও ঐক্যের পরিপন্থী।
বিএনপি সব সময় সংগঠনের ঐক্য, শালীনতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের রাজনীতি বিশ্বাস করে উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দলের কোনো পর্যায়ের নেতা বা কর্মীর কাছ থেকে বিভেদমূলক আচরণ, বিদ্বেষ ছড়ানো বা প্রকাশ্যে অপপ্রচার কখনোই কাম্য নয়। অতএব জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সব ইউনিটের নেতা-কর্মীদের কঠোরভাবে সতর্ক করা হচ্ছে, যেন ভবিষ্যতে তাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দায়িত্বহীন, অশালীন বা বিদ্বেষপূর্ণ পোস্ট, মন্তব্য বা শেয়ার থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকেন।
যোগাযোগ করলে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি ফেসবুকে কিছু নেতা-কর্মীকে একে অন্যের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করতে দেখা গেছে। এ অবস্থায় জেলা বিএনপি একটি নির্দেশনা দিয়েছে। তা অমান্যকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।