অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘পাহাড় যেটুকু আছে, সেগুলোকে জাতীয় স্থান ঘোষণা দিয়ে সংরক্ষণের আওতায় আনতে হবে। যাকেই বলি পাহাড় কাটবেন না, বলে, আপা শুধু একটু কাটব। পাহাড় কাটা আর তা বন্ধ করার অভিযান টম অ্যান্ড জেরির খেলার মতো হয়ে গেছে।’

আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে চতুর্থ আন্তর্জাতিক নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে এ কথা বলেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানারসের আয়োজনে আগামী তিন দিন এ সম্মেলন চলবে। বিশ্বজুড়ে নগর, অঞ্চল এবং গ্রামীণ পরিকল্পনার বিভিন্ন ক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত পরিকল্পনাবিদ, পেশাজীবী, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নদী, জলাশয়, বন ও পরিবেশকে প্রাধান্য দিয়ে নগর-পরিকল্পনা সাজানোর ওপর জোর দেন। এর কারণ ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘ আমাদের আসলে সেই অর্থে বনাঞ্চল নেই। পার্বত্য অঞ্চলে কিছু ও লাঠিটিলায় অল্প বনাঞ্চল আছে। সুন্দরবন বলেন আর অন্যান্য বন বলেন, সবগুলো কিন্তু ট্যুরিজমসহ নানা চাপে কাহিল অবস্থা।’

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামে গিয়ে এবার বললাম, শ্রমিককে গ্রেপ্তার করে আনবেন না। মালিকের নামে মামলা দেবেন। মালিককে গ্রেপ্তার করে আনবেন। পাহাড় কাটা কিছুটা কমেছে। কিন্তু কোনো মালিককে গ্রেপ্তারের খবর পেলাম না। তবে আমরা কিছু দৃষ্টান্ত রেখে দিয়ে যেতে চাই’। নগর-পরিকল্পনায় পরিকল্পনাবিদদের ক্ষমতায়নের ওপর জোর দেন তিনি।

চতুর্থ আন্তর্জাতিক নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা সম্মেলনে উদ্বোধনী অধিবেশনে অতিথিরা। ১০ মে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জওয় ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিবিসির বিশ্লেষণ: শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় কেন ভারতকে বিব্রত করবে

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ‍মৃত্যুদণ্ডের রায় ভারতকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিবিসির গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স রিপোর্টার অ্যানবারাসান ইথিরাজান। 

তিনি লিখেছেন, এখন আশা করা হচ্ছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হাসিনাকে ফেরানোর জন্য প্রত্যর্পণের অনুরোধ পাঠাবে। ২০২৪ সালের আগস্টে দেশ ছাড়ার পর থেকে তিনি ভারতে বসবাস করছেন।

আরো পড়ুন:

শেখ হাসিনার রায় নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া

বিচার স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিকমানের, প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই: জামায়াত

ঢাকার আগের দাবিগুলোর জবাব ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়নি। দুই দেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তিও রয়েছে।

তবে আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি মনে হয় হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা সৎউদ্দেশ্যে করা হয়নি, তাহলে ভারত সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে।

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ে তিনি ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। ভারতে তাকে ফেরত না পাঠানোর ব্যাপারে দেশটির সর্বদলীয় রাজনৈতিক পর্যায়েও এক ধরনের ঐকমত্য রয়েছে।

দিল্লির কাছে বাংলাদেশ শুধু প্রতিবেশী নয়, এটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য।

অ্যানবারাসান ইথিরাজান লিখেছেন, ভারত যেন টানটান করে বাঁধা দড়ির ওপর হাঁটছে; কারণ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে অস্বীকার করলে তা কূটনৈতিক অবজ্ঞা হিসেবে দেখা যেতে পারে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরো খারাপ করতে পারে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এর আগে গত ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্য আজকের তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত।

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ