শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী। 
বৃহস্পতিবার তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তার পদত্যাগপত্র জমা দেন। কুয়েটের ডেপুটি রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ১ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয় চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো.

হযরত আলীকে কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য পদে নিয়োগ দেয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ মে তিনি দাপ্তরিক কাজে ঢাকায় যাওয়ার কথা বলে ক্যাম্পাস ছেড়েছিলেন।

এর আগে উপাচার্যের পদত্যাগ ও নতুন উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করে শিক্ষক সমিতি। শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপও মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ২৫ এপ্রিল কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপ চ র য পদত য গ উপ চ র য পদত য গ

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস মাঠ উন্মুক্ত রাখার দাবি, মানববন্ধনে নাগরিকদের সঙ্গে মেয়রও

চট্টগ্রাম নগরের সার্কিট হাউস মাঠকে মুক্তাঙ্গন ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টায় নগরের কাজীর দেউড়িতে সার্কিট হাউস মাঠের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

এতে শিক্ষাবিদ, লেখক, নগর পরিকল্পনাবিদ, গবেষক, প্রকৌশলী ও পরিবেশকর্মীদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন। কর্মসূচিতে সবাই একটাই দাবি জানান, সার্কিট হাউস মাঠে কোনো ধরনের স্থাপনা করা যাবে না। এটি নগরবাসীর জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মুখ চত্বরের জায়গার মালিক প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। ২৩ বছর আগে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই জায়গা ইজারা নিয়েছিল সিটি করপোরেশন। ১৯৯২ সালে শিশুপার্ক স্থাপনের জন্য ভায়া মিডিয়া বিজনেস সার্ভিসেস লিমিটেড নামে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। ইজারার মেয়াদ শেষ হলে ২০২০ সালে মাসিক মাত্র দেড় লাখ টাকা ভাড়ার বিনিময়ে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আবারও ১৫ বছরের চুক্তি করে সিটি করপোরেশন। সেখানে শিশুপার্ক ছিল। তবে ২০২৩ সালের অক্টোবরে পার্কটি উচ্ছেদ করা হয়।

মানববন্ধনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আজ অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে এখানে দাঁড়িয়েছি। আমরা বারবার বলছি যে আমরা একটি পরিকল্পিত চট্টগ্রাম নগরী চাই। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) যে মাস্টারপ্ল্যান (মহাপরিকল্পনা) আছে, সেখানেও এটা একটা সবুজ মাঠ আছে। সম্পূর্ণভাবে সব আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবকাঠামো নির্মাণ হচ্ছে। আমাদের সবাইকে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।’

সার্কিট হাউস মাঠে হাসপাতালের মতো স্থাপনা না করার আহ্বান জানিয়ে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, এর আগে সিআরবিতেও হাসপাতাল করার চিন্তাভাবনা করেছিল। কিন্তু এখানে যাঁরা আছেন, সবাই এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। সিআরবিতে রেলওয়ের যে হাসপাতাল আছে, সেটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল করা হোক। সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সে উদ্যোগ নিয়েছে। সেখানে সর্বস্তরের চট্টগ্রামবাসী চিকিৎসা নিতে পারবেন। এখান থেকে (সার্কিট হাউস) রেলওয়ে হাসপাতাল মাত্র এক মিনিটের রাস্তা।

সার্কিট হাউসের পার্কটিকে সবুজ পার্ক করার জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ও উপদেষ্টাকে চিঠি দিলেও এখন পর্যন্ত সাড়া পাননি বলে জানান মেয়র শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, ‘এখন শুনছি, এখানে হাসপাতাল হবে। আমি তাদের অনুরোধ করছি, আমার কালুরঘাটে ৯ একর জায়গা আছে। ওই ৯ একর জায়গা নিয়ে ওখানে হাসপাতাল করুন, আমাকে এই জায়গা দিয়ে দেন, সবুজ পার্ক করব এখানে। আমি আপনাদের প্রস্তাব দিচ্ছি। এর থেকে ভালো প্রস্তাব হতে পারে না। আপনারা হাসপাতাল করলে সেখানে অবহেলিত মানুষ সেবা পাবেন। এখানে অনেক হাসপাতাল, কাছেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, আশপাশে এত প্রাইভেট হাসপাতাল, এখানে আর হাসপাতাল প্রয়োজন নেই। হাসপাতাল করতে হলে কালুরঘাট এলাকায় একটা বড় হাসপাতাল করেন। সেখানে আমার জায়গা আমি ছেড়ে দিব। বিনিময়ে এটা আমাদের দেন।’

চট্টগ্রাম স্টেডিয়াম নিয়েও ষড়যন্ত্র হয়েছে জানিয়ে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রামের মানুষ প্রতিবাদ করেছে। এখন মাঠ সিজেকেএসের থাকবে। চট্টগ্রামের সব খেলোয়াড় এখানেই খেলবেন। এ শহরকে আমাদের বাঁচাতে হবে। এই শহরকে যদি না বাঁচাই তাহলে পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না।’

মানববন্ধন কর্মসূচিতে কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্বের একটি ব্যতিক্রম নগর। এই নগরকে রক্ষা করতে না পারলে উত্তর প্রজন্ম তাদের দায়ী করবে। একে বলা হয় বাণিজ্যিক রাজধানী কিন্তু এখানে একটিও উদ্যান নেই, মাঠ নেই। শহরে একসময় পাঁচ থেকে ছয়টা মাঠ ছিল। অথচ এখন শিশু-কিশোররা খেলার মাঠ পায় না। এই মাঠটি সবাই মিলে রক্ষা করব। এর পেছনে যে পুরোনো সার্কিট হাউস, সেটি একটি ব্রিটিশ স্থাপনা। এখানে এ রকম আর একটিও স্থাপনা নেই। সেটি এখন জাদুঘর আর সামনের মাঠটি এর ল্যান্ডস্কেপ হিসেবে আছে। এখানে কোনো স্থাপনা হতেই পারে না।’

পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক স্থপতি জেরিনা হোসেন বলেন, ‘একটাই কথা। এই উদ্যানকে জনগণের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। এখানে কোনো স্থাপনা হবে না। উদ্যান কোনো বিলাসিতা নয়। নগরজীবনে নগরবাসী, বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের স্বস্তিতে থাকার জন্য এবং তাঁদের জীবন আনন্দময় হওয়ার জন্য নগরে উদ্যান থাকতে হবে।’

পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ সিকান্দার খানের সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন শিক্ষাবিদ শফিক হায়দার, মনজুরুল কিবরীয়া প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুয়েটে অন্তর্বর্তী উপাচার্যের পদত্যাগ
  • ১৮ দিনের মাথায় কুয়েটের অন্তর্বর্তী উপাচার্যের পদত্যাগ
  • চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস মাঠ উন্মুক্ত রাখার দাবি, মানববন্ধনে নাগরিকদের সঙ্গে মেয়রও
  • কুবির ফার্মেসি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে আল্টিমেটাম
  • কুয়েটে এবার অন্তর্বর্তী উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি, অনাস্থা শিক্ষক সমিতির
  • রাবিতে বিভিন্ন পদে বহাল আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা
  • ভারতের ট্রানজিট সুবিধা স্থগিত রাখার দাবি জনতা পার্টির
  • ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে জামায়াতের নারী নেতাদের সাক্ষাত 
  • শিক্ষার্থী নির্যাতনের প্রতিবাদ পাবিপ্রবি শিক্ষকের