কয়েক মাস আগে একটি সিএস ম্যাপে জাপশড়ী নদীর নাম দেখলাম। ওই ম্যাপ অনুযায়ী বোঝা গেল নদীটি রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার কান্দি ইউনিয়নে হবে। আমরা সাধারণত আগে নদী পাই, তারপর কাগজপত্র খুঁজি। এটির ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। এখানে আগে রেকর্ডে দেখে এরপর নদী খুঁজতে যাওয়া। 

শামসুর রহমান সুমন নামের আমাদের একজন শিক্ষার্থী বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রিভারাইন পিপল ক্লাবের অন্যতম সংগঠক। এরই মধ্যে সে কুড়িগ্রামের বারোমাসী নদী, রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার খটখটিয়া নদী, মিঠাপুকুর উপজেলার শালমারা নদী, সদর উপজেলার খোকসাঘাঘট নদ এবং তিস্তা নদীর আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তাকে একদিন বললাম জাপশড়ী নদীর খবর নিতে। তাদের গ্রামের বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে এই নদীর অবস্থান। সে এই নদী একদিন দেখে এসেছে। সেই সঙ্গে বেশ কিছু তথ্যও সংগ্রহ করেছে। 

গত পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে নদী আন্দোলনকর্মী বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আমাদের একজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে রংপুর থেকে মোটরসাইকেলে আমরা রওনা করি। প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে প্রথমে আমরা গিয়ে পৌঁছাই কান্দি ইউনিয়নের কাবিলাপাড়া গ্রামে মাসানকুড়া নদীর পাড়ে। সেখানে আমরা মাসানকুড়া নদীটি দেখি। জাপশড়ী ও তারা নদী মিলিত হয়ে মাসানকুড়া নদী সৃষ্টি হয়েছে।

জাপশড়ী নদীটি পীরগাছা উপজেলার কান্দি ও তাম্বুলপুর ইউনিয়নের উত্তর দাদান, তালুককান্দি নাটাবাড়ি, দোয়ানি মনিরাম মৌজাসহ বেশ কয়েকটি মৌজা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বুড়াইল নদ থেকে উৎপত্তি হয়েছে জাপশড়ী। এরপর সতীর কুড়া এলাকায় তারা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। তারা নদীর সন্ধানও পেলাম এখানেই। এরপর মাসানকুড়া নাম নিয়ে প্রবাহিত হয়ে গাইবান্ধা উপজেলায় তিস্তা নদীতে পতিত হয়েছে।

জাপশড়ী নদীর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার। নদীটি সিএস রেকর্ড ধরে খনন হয়নি। কিছু দখলও আছে। আমাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এটি এ বছর পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সরকারি তালিকাভুক্ত করেছে।

নদীর পাড়ে একটি সাইনবোর্ড সূত্রে জানলাম, জাপশড়ী নদীতে খননের প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রকল্পের সাইনবোর্ডে ‘জাপশিরী খাল’ উল্লেখ করা হয়েছে। বুড়াইল নদের যে স্থান থেকে জাপশড়ী নদীর উৎপত্তি হয়েছে, সেই স্থানের নাম দুড়াগাড়ি। উৎপত্তিস্থল থেকে ৫০০ মিটার ভাটিতে একটি স্লুইসগেট আছে। নদীটির চার ভাগের এক ভাগ হবে স্লুইসগেটের দৈর্ঘ্য। দেখলাম জাপশড়ী নদীকে মেরে ফেলার প্রথম ফাঁদ। 

রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলায় জাপশড়ী নদী.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল র ত হয় ছ

এছাড়াও পড়ুন:

সাগরিকার হ্যাটট্রিকে প্রথম ম্যাচেই ৯ গোলের জয়

সাফ অনূর্ধ্ব–২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম ম্যাচেই শ্রীলঙ্কাকে ৯–১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। আজ ঢাকার কিংস অ্যারেনায় ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকে দাপট দেখিয়ে গোল উৎসব করে মেয়েরা।

মোসাম্মৎ সাগরিকা করেছেন হ্যাটট্রিক, মুনকি আক্তার দুই গোল। এ ছাড়া একটি করে গোল করেছেন স্বপ্না রানী, সিনহা জাহান শিখা, রুপা আক্তার ও শান্তি মার্ডি। বাংলাদেশ ৯ গোলের ছয়টিই করেছে দ্বিতীয়ার্ধে।

এ দিন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ২৩ জনের আটজনকেই শুরুর একাদশে রাখেন বাংলাদেশ কোচ। যার ছাপ প্রথম মিনিট থেকেই টের পায় শ্রীলঙ্কা। খেলার সময় মিনিট পার হতেই স্বপ্না রানীর গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। সরাসরি ফ্রি–কিক থেকে স্বাগতিকদের উদযাপনের প্রথম উপলক্ষ্য হন ১৯ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। এর ঠিক তিন মিনিট যেতেই দ্বিতীয় গোলও পেয়ে যায় আফঈদারা। এবার একাই প্রতিপক্ষের রক্ষণ চুরমার করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মুনকি আক্তার।

প্রথমার্ধের ৩০ মিনিটে আরও কয়েকটি আশা জাগানিয়া আক্রমণ করে বাংলাদেশ। যার মধ্যে ১৫ মিনিটে মোসাম্মাৎ সাগরিকার শট রুখে দেয় বেরসিক গোলপোস্ট। ১৯ মিনিটে পোস্টের একেবারে সামনে বল পেয়েও নিশানা ভেদ করতে পারেননি মুনকি। তাতে অবশ্য বাংলাদেশের আক্রমণের গতিতে একটুও ভাটা পড়েনি। শেষমেশ ৩৭ মিনিটে আসে তৃতীয় গোল। ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে উঠা বাংলাদেশের সিনহা জাহানের ক্রস থেকে আলতো শটে বল জালে জড়ান সাগরিকা। এরপর ৩৮ ও ৪৫ মিনিটে দুই –দুবার প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠালেও অফসাইডের কারণে সেগুলো আর গোলের খাতায় উঠেনি।  

বিরতির পর গুনে গুনে আরও ছয়বার গোল উদযাপন করে বাংলাদেশ। ৪৮ মিনিটে বাঁ প্রান্ত ধরে আক্রমণে উঠা সাগরিকার পাস থেকে নিজের দ্বিতীয় ও দলের চতুর্থ গোল করেন মুনকি। ৪৯ মিনিটে শান্তি মার্ডির লম্বা ক্রসে পা ছুঁয়ে বল জালে পাঠান সিনহা। এরপর ৫২ মিনিটে বন্যা খাতুনের পাস ধরে দারুণভাবে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে দলের ষষ্ঠ গোল আদায় করে নেন সেই সাগরিকা। এর ছয় মিনিট পর আবারও সাগরিকা; এবার নিজের হ্যাটট্রিক করার আনন্দে মাতেন। পোস্টের ডান পাশ থেকে তাকে গোলমুখে বল বাড়িয়ে দেন পুজা দাস। সেই বল মুহূর্তের মধ্যে জালে জড়ান ১৭ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। ৮৫ মিনিটে স্কোরলাইন ৮–০ করেন রুপা আক্তার। বন্যার কর্নার থেকে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের চোখ ফাঁকি দেন রুপা। ৯০ মিনিটের পর সান্ত্বনার গোলের দেখা পায় শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের রক্ষণের দূর্বলতার সুযোগ কাজে লাগান প্রতিপক্ষ ফুটবলার লাইয়ানশিকা। এর পর পরই শান্তি মার্ডি বাংলাদেশকে উপহার দেন নয় নম্বর গোল।    

পাঁচটি দেশ এই টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ভারত নাম প্রত্যাহার করে নেয়। সে জন্য বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভুটান—এই চার দেশ নিয়ে শুরু হয়েছে সাফের এই আসর। টুর্নামেন্টের ফরম্যাটেও এসেছে পরিবর্তন। এখন চার দল রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে একে অন্যের সঙ্গে দুবার করে খেলবে। একটি দল ছয়টি করে ম্যাচ পাবে। আর শীর্ষ পয়েন্টধারী দলের হাতে উঠবে কাঙ্খিত ট্রফি।
১৩ জুলাই নেপালের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলার পর ১৫ ও ১৭ জুলাই টানা দুই ম্যাচে বাংলাদেশের মেয়েদের প্রতিপক্ষ ভুটান। ১৯ জুলাই আবার লঙ্কানদের সামনে পড়বেন স্বপ্না–সাগরিকারা। আর ২১ জুলাই নিজেদের শেষ ম্যাচে নেপালকে মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ।
বয়সভিত্তিক সাফে বাংলাদেশের প্রাপ্তির ঝুলি বেশ ভারি। সর্বশেষ ২০২৪ সালে এই প্রতিযোগিতায় ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হয় তাঁরা। সেই হিসেবে এখন পর্যন্ত পাঁচ আসরে চারবারই শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চুরির অপবাদে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২ 
  • যশোরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
  • ভারতে গুহা থেকে দুই সন্তানসহ রুশ নারীকে উদ্ধার
  • ঘটনার পর ১০ তলার ফ্ল্যাটের গ্রিল ভেঙে পালিয়ে যান স্বামী
  • টরন্টোর এক সন্ধ্যায় বাংলার গান
  • রুটের সেঞ্চুরি, বুমরাহর ফাইফারের পর ভারতের লড়াই
  • যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে ১ হাজার ৩০০-এর বেশি কর্মী ছাঁটাই
  • ২৪ ঘণ্টা পরই মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখলেন সাকিব
  • আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী তারকার শ্বশুরবাড়িতে বন্দুকধারীদের হামলা
  • সাগরিকার হ্যাটট্রিকে প্রথম ম্যাচেই ৯ গোলের জয়