জাপশড়ী-তারা-গিরাই–শালমারা নদীর সন্ধান মিলল যেভাবে
Published: 22nd, May 2025 GMT
কয়েক মাস আগে একটি সিএস ম্যাপে জাপশড়ী নদীর নাম দেখলাম। ওই ম্যাপ অনুযায়ী বোঝা গেল নদীটি রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার কান্দি ইউনিয়নে হবে। আমরা সাধারণত আগে নদী পাই, তারপর কাগজপত্র খুঁজি। এটির ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। এখানে আগে রেকর্ডে দেখে এরপর নদী খুঁজতে যাওয়া।
শামসুর রহমান সুমন নামের আমাদের একজন শিক্ষার্থী বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রিভারাইন পিপল ক্লাবের অন্যতম সংগঠক। এরই মধ্যে সে কুড়িগ্রামের বারোমাসী নদী, রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার খটখটিয়া নদী, মিঠাপুকুর উপজেলার শালমারা নদী, সদর উপজেলার খোকসাঘাঘট নদ এবং তিস্তা নদীর আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তাকে একদিন বললাম জাপশড়ী নদীর খবর নিতে। তাদের গ্রামের বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে এই নদীর অবস্থান। সে এই নদী একদিন দেখে এসেছে। সেই সঙ্গে বেশ কিছু তথ্যও সংগ্রহ করেছে।
গত পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে নদী আন্দোলনকর্মী বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আমাদের একজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে রংপুর থেকে মোটরসাইকেলে আমরা রওনা করি। প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে প্রথমে আমরা গিয়ে পৌঁছাই কান্দি ইউনিয়নের কাবিলাপাড়া গ্রামে মাসানকুড়া নদীর পাড়ে। সেখানে আমরা মাসানকুড়া নদীটি দেখি। জাপশড়ী ও তারা নদী মিলিত হয়ে মাসানকুড়া নদী সৃষ্টি হয়েছে।
জাপশড়ী নদীটি পীরগাছা উপজেলার কান্দি ও তাম্বুলপুর ইউনিয়নের উত্তর দাদান, তালুককান্দি নাটাবাড়ি, দোয়ানি মনিরাম মৌজাসহ বেশ কয়েকটি মৌজা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বুড়াইল নদ থেকে উৎপত্তি হয়েছে জাপশড়ী। এরপর সতীর কুড়া এলাকায় তারা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। তারা নদীর সন্ধানও পেলাম এখানেই। এরপর মাসানকুড়া নাম নিয়ে প্রবাহিত হয়ে গাইবান্ধা উপজেলায় তিস্তা নদীতে পতিত হয়েছে।
জাপশড়ী নদীর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার। নদীটি সিএস রেকর্ড ধরে খনন হয়নি। কিছু দখলও আছে। আমাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এটি এ বছর পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সরকারি তালিকাভুক্ত করেছে।
নদীর পাড়ে একটি সাইনবোর্ড সূত্রে জানলাম, জাপশড়ী নদীতে খননের প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রকল্পের সাইনবোর্ডে ‘জাপশিরী খাল’ উল্লেখ করা হয়েছে। বুড়াইল নদের যে স্থান থেকে জাপশড়ী নদীর উৎপত্তি হয়েছে, সেই স্থানের নাম দুড়াগাড়ি। উৎপত্তিস্থল থেকে ৫০০ মিটার ভাটিতে একটি স্লুইসগেট আছে। নদীটির চার ভাগের এক ভাগ হবে স্লুইসগেটের দৈর্ঘ্য। দেখলাম জাপশড়ী নদীকে মেরে ফেলার প্রথম ফাঁদ।
রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলায় জাপশড়ী নদী.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়
আগের দিন রোহিত শর্মার রেকর্ড ভেঙেছিলেন বাবর আজম। লাহোরে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অপরাজিত ১১ রানের ইনিংস খেলেই ভারতের সাবেক অধিনায়ককে টপকে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড গড়েছিলেন বাবর। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক আজ তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৬৮ রানের ইনিংস খেলে কেড়েছেন আরেক ভারতীয় কিংবদন্তি বিরাট কোহলির রেকর্ড। ২০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাবরের এটি ৪০তম ৫০ ছোঁয়া ইনিংস। ৩৯টি পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলে এত দিন বাবরের সঙ্গে রেকর্ডটির যৌথ মালিক ছিলেন কোহলি।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১৩ ইনিংস পর ফিফটি পাওয়া বাবরের ইনিংসে ভর করেই লাহোরে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিটা ৪ উইকেট জিতেছে পাকিস্তান। তাতে তিন ম্যাচের সিরিজটা পাকিস্তান জিতল ২-১ ব্যবধানে। প্রথম ম্যাচ হারার পর ঘুরে দাঁড়িয়েই সিরিজ জিতল পাকিস্তান।
টসে হেরে ব্যাটিং পাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা পুরো ২০ ওভার খেলে ৯ উইকেটে করে ১৩৯ রান। রানটা ৬ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে গেছে পাকিস্তান।
রান তাড়ায় ইনিংসের ১১তম বলে ৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় পাকিস্তান। বাবর ব্যাটিংয়ে নামেন এরপরই। দ্বিতীয় উইকেটে সাহিবজাদা ফারহানকে নিয়ে ৩৬ রান জুটি গড়া বাবর তৃতীয় উইকেটে সালমান আগাকে নিয়ে ৫২ বলে যোগ করেন আরও ৭৬ রান। ২৬ বলে ৩৩ রান করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান যখন ফেরেন ২৭ বলে ২০ রান দরকার পাকিস্তানের।
৫ রান যোগ হওয়ার পর চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন বাবর ৪৭ বলে ৯ চারে ৬৮ রান করা বাবর ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। এরপর ১৫ রানের প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে আরও ২ উইকেট হারিয়ে জয়ের অপেক্ষা একটু লম্বা করেছে পাকিস্তান।
এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে ৩৬ বলে সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন ওপেনার রিজা হেনড্রিকস। এ ছাড়া অধিনায়ক ডোনোভান ফেরেইরা ১৪ বলে ২৯ ও অলরাউন্ডার করবিন বশ ২৩ বলে করেন ৩০ রান। পাকিস্তানি পেসার শাহিন আফ্রিদি ২৬ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট।
দুই দল এরপর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে। সিরিজের প্রথম ম্যাচ মঙ্গলবার ফয়সালাবাদে।
সংক্ষিপ্ত স্কোরদক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৩৯/৯ (হেনড্রিকস ৩৪, বশ ৩০*, ফেরেইরা ২৯, ব্রেভিস ২১; আফ্রিদি ৩/২৬, তারিক ২/২৬, ফাহিম ২/২৮)।পাকিস্তান: ১৯ ওভারে ১৪০/৬ (বাবর ৬৮, সালমান ৩৩, ফারহান ১৯; বশ ২/২৪, উইলিয়ামস ২/২৬)।
ফল: পাকিস্তান ৪ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: ৩-ম্যাচ সিরিজে পাকিস্তান ২-১ ব্যবধানে জয়ী।