সারা দেশের গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে সরকারি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস)। এসব সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে সাত দফা দাবিতে আন্দোলন করছিলেন। ২১ মে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণার পর পাঁচ দিন ধরে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা হাজারো কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আন্দোলনকারীরা বলছেন, গ্রাহকসেবা অব্যাহত রেখেই শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। যাঁরা এখনো কর্মরত আছেন, তাঁরাও নিজ নিজ সমিতির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদে অংশ নিচ্ছেন।

প্রতিদিন নতুন নতুন কর্মকর্তা-কর্মচারী শহীদ মিনারে এসে আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন। এতে বিদ্যুৎ বিতরণ কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কেউ তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেনি। তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এসে সংহতি প্রকাশ করেছেন। সাত দফা দাবিতে বুধবার সকাল থেকে শহীদ মিনারে অবস্থান নেন তাঁরা।

তাঁদের দাবির মধ্যে রয়েছে এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি ও পবিস একীভূত করে অন্য বিতরণ সংস্থার মতো পুনর্গঠন করা। মিটার রিডার, লাইন শ্রমিক এবং পোষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিত করা। মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করে চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল করা। হয়রানি ও শাস্তিমূলক আদেশ বাতিল এবং বরখাস্ত ও সংযুক্ত কর্মীদের অবিলম্বে পদায়ন।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা চলমান মামলা প্রত্যাহার ও চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবিতে তাঁরা এরই মধ্যে দুই দফায় স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন।

গত ২১ জানুয়ারি ও ২৬ এপ্রিল বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টার কাছে ওই স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এর সঙ্গে ২৮ হাজার ৩০৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্বাক্ষর সংযুক্ত করা হয়েছিল।

শহীদ মিনারে আন্দোলনরত কর্মীরা বলছেন, তাঁরা নিয়মিত বঞ্চনার শিকার হয়ে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন। আরইবি নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত, কিন্তু গ্রাহক তাঁদের ক্ষোভ ঝাড়েন সমিতির কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ওপর।

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) নিম্নমানের যন্ত্রাংশ দিয়ে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে অভিযোগ তুলে কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লাইন শ্রমিক আইনুদ্দীন আল আজাদ বলেন, ‘আরইবি অনিয়মের মাধ্যমে এসব যন্ত্রাংশ কেনে। গ্রাহক পর্যায়ে এসব যন্ত্রাংশ রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্বে থাকি আমরা। তাই গ্রাহক আমাদের হয়রানি ও বিভিন্ন সময় হামলা করে। আমরা এই হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে চাই। আমাদের সাতটি দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

এর আগে গত বছরের জানুয়ারি থেকে দুই দফা দাবিতে টানা কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন সময় নানা কর্মসূচি পালন করেছেন সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এবার সাত দফা দিয়েছেন তাঁরা।

একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের একজনের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে গত অক্টোবরে বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেন তাঁরা। এর পর থেকেই কারও কারও বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাসহ বিভিন্ন রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে থাকে আরইবি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত অবস থ ন ন করছ হয়র ন

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান

যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রিচার্ড কোরেল ভেবেছিলেন, দেশটির পারমাণবিক বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে তাঁর নিয়োগ নিশ্চিত হওয়া নিয়ে গত বৃহস্পতিবার শুনানি সহজভাবেই শেষ হবে। তবে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণের আগের দিন বুধবার রাত ৯টা ৪ মিনিটে সে আশা ভেঙে গেছে।

ওই সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে বিশ্বকে চমকে দেন। বলেন, তিনি মার্কিন বাহিনীকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা অবিলম্বে শুরু করতে বলেছেন। তাঁর যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে রাশিয়া ও চীনের পেছনে থাকতে পারে না।

ট্রাম্প বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় এবং চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।’

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিনেটে সশস্ত্র বাহিনী কমিটির প্রায় ৯০ মিনিটের শুনানিতে ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে বারবার কোরেলকে প্রশ্ন করা হয়। ট্রাম্পের মন্তব্যে অনেক আইনপ্রণেতাই এ সময় ছিলেন বিভ্রান্ত। এ থেকে বোঝা যায়, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন ও এর বাইরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।

মার্কিন কর্মকর্তারা পরিষ্কার করেননি যে ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার পরীক্ষা করতে বলছেন, নাকি বিস্ফোরক পরীক্ষায় ৩৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ করতে চাইছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ট্রাম্পের নির্দেশ বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে, যা শীতল যুদ্ধের ভয়ংকর স্মৃতি ফিরিয়ে আনে।

কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সদস্য সিনেটর জ্যাক রিড কোরেলকে প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র আবারও পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা শুরু করলে তা কি বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে।

কোরেল বলেন, ‘যদি আমাকে স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের (স্ট্র্যাটকম) কমান্ডার হিসেবে নিশ্চিত করা হয়, আমার কাজ হবে, পারমাণবিক পরীক্ষাবিষয়ক যেকোনো আলোচনা সম্পর্কে সামরিক পরামর্শ দেওয়া।’

ভাইস অ্যাডমিরাল কোরেলকে গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প স্ট্র্যাটকমের প্রধান করার জন্য মনোনীত করেন। স্ট্র্যাটকম পারমাণবিক হামলা প্রতিরোধ ও আক্রমণের সক্ষমতা নিয়ে কাজ করে। কোরেল পুরো শুনানিতে সতর্কভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় ও চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

শুনানির এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র সিনেটর অ্যাঙ্গাস কিং প্রশ্ন করেন, ট্রাম্প কি পারমাণবিক ডিভাইসের বিস্ফোরক পরীক্ষা নয়, বরং ক্ষেপণাস্ত্র বা অন্য সরবরাহ ব্যবস্থা পরীক্ষার কথা বলছেন কি না।

জবাবে কোরেল বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য জানি না, তবে এটি এমন একটি ব্যাখ্যা হতে পারে, আমি তা মেনে নিই।’

দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে গত বৃহস্পতিবার মুখোমুখি বৈঠকে যোগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্বকে ১৫০ বার ধ্বংস করার মতো পারমাণবিক অস্ত্র আমাদের আছে: ট্রাম্প
  • দুই সপ্তাহের মধ্যে তেহরানে সুপেয় পানি ফুরিয়ে যেতে পারে
  • চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
  • জ্বালানি খাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন
  • বাজারে আগাম সবজি আসতে দেরি, দাম চড়া
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • টমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না
  • সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন
  • যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
  • ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পেন্টাগনের সায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প