পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) দশম আসর যেন ছিল নাটকীয়তায় ভরা এক মঞ্চ। যেখানে শেষ দৃশ্যটা লিখেছেন শাহিন শাহ আফ্রিদির নেতৃত্বাধীন লাহোর কালান্দার্স। রোববার রাতে গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ইতিহাস গড়ে টানা তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হলো তারা। আর সেই জয়ের উৎসবে যোগ হলো টাকা, ট্রফি আর তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার স্বীকৃতি।

দুই শতাধিক রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে লাহোরের ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তায় কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের আকাশচুম্বী রানের পাহাড় যেন ক্ষয়ে গেলো দ্রুতই। ২০১ রানের বিশাল সংগ্রহও লাহোরকে আটকাতে পারেনি। ম্যাচের নায়ক কুশল পেরেরা খেললেন ৩১ বলে বিধ্বংসী ৬২ রানের ইনিংস, যেটা কেবল ফাইনাল নয়, গোটা আসরের অন্যতম স্মরণীয় পারফরম্যান্স হয়ে থাকবে। তার এই ঝড়ো ইনিংসের পুরস্কার হিসেবে মিলেছে ৫০ লাখ পাকিস্তানি রুপি।

ম্যাচ শেষে অর্থের ছড়াছড়ি তো ছিলই, ছিল সম্মান আর গৌরবের ট্রফির ভাণ্ডার। শিরোপা ঘরে তুলে লাহোর কালান্দার্স পেয়েছে ১৪ কোটি পাকিস্তানি রুপি (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬ কোটি ৫ লাখ)। কোয়েটার জন্য সান্ত্বনা হিসেবে ছিল রানার্সআপ ট্রফি এবং ৫ কোটি ৬০ লাখ রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ কোটি ৪১ লাখ)।

আরো পড়ুন:

দাপুটে জয়ে চ্যাম্পিয়ন রিশাদ-সাকিবদের লাহোর

ছিটকে গেলেন মোস্তাফিজ, পাকিস্তান সিরিজের দলে খালেদ

পুরো টুর্নামেন্টে আলো ছড়ানো কোয়েটার ব্যাটার হাসান নেওয়াজ জিতে নিয়েছেন ‘টুর্নামেন্ট সেরা’র খেতাব, সঙ্গে ৩০ লাখ রুপি আর একটি নতুন বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি। ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৩৯৯ রান করে তিনি হয়েছেন সেরা ব্যাটসম্যান। যার পুরস্কার আরও ৩৫ লাখ রুপি।

শুধু ব্যাট নয়, বল হাতেও উজ্জ্বল ছিলেন লাহোর অধিনায়ক শাহিন আফ্রিদি। সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির স্বীকৃতির পাশাপাশি জিতে নিয়েছেন সেরা বোলার হওয়ার পুরস্কার, যার অর্থমূল্য ৩৫ লাখ রুপি

তালিকায় আরও ছিলেন সিকান্দার রাজা (সেরা অলরাউন্ডার), আবদুস সামাদ (সেরা ফিল্ডার), মোহাম্মদ হারিস (সেরা উইকেটকিপার) ও মোহাম্মদ নাঈম (সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়)। এদের প্রত্যেকেই পেয়েছেন ৩৫ লাখ রুপি করে।

মাঠের বাইরেও বিচার হয়েছে পারফরম্যান্সের। সেরা আম্পায়ার নির্বাচিত হয়েছেন আসিফ ইয়াকুব। আর ফাইনালের সেরা ক্যাচ ধরে আলো কাড়েন শ্রীলঙ্কান আবিষ্কা ফার্নান্ডো।

পিএসএলের দশম আসর ছিল প্রতিভা, পারফরম্যান্স আর প্রাইজমানির এক রোমাঞ্চকর কাহিনি। শেষ পর্যন্ত, টাকা নয়; প্যাশন আর দলের প্রতি নিবেদনই জয় এনে দেয় লাহোরকে। সেই সঙ্গে স্মরণীয় এক আসর উপহার দিলো বিশ্ব ক্রিকেটকে।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

২০২৬ আইপিএলের আগে নতুন হেড কোচ নিয়োগ দিল কেকেআর

আইপিএল ২০২৬ মৌসুমের আগে কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) নতুন হেড কোচ হিসেবে দায়িত্ব দিল অভিষেক নায়ারকে। গত মৌসুমে তিনি ছিলেন চন্দ্রকান্ত পান্ডিতের সহকারী কোচ। এবার সেই জায়গা থেকেই পদোন্নতি পেয়ে দলের দায়িত্বভার নিলেন তিনি। এর আগে এক বছরের বিরতিতে নায়ার কাজ করেছিলেন ভারতের জাতীয় দলের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরের সহকারী হিসেবে।

সম্প্রতি নারী প্রিমিয়ার লিগের দল ইউপি ওয়ারিয়র্সও তাকে প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল।

আরো পড়ুন:

শেষটায় কী অপেক্ষা করছে?

ফাইনালে যেতে ভারতকে ৩৩৯ রানের টার্গেট দিলো অস্ট্রেলিয়া

কেকেআরের সিইও ভেঙ্কি মাইসোর এক বিবৃতিতে বলেন, “২০১৮ সাল থেকে অভিষেক কেকেআর পরিবারের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। মাঠের ভেতরে ও বাইরে- দুই জায়গাতেই তিনি আমাদের খেলোয়াড়দের গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। খেলার সূক্ষ্ম বিষয়গুলো বোঝার ক্ষমতা আর খেলোয়াড়দের সঙ্গে গভীর সংযোগ; দুটোই তাকে আলাদা করে রেখেছে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে, এখন তিনি প্রধান কোচ হিসেবে কেকেআরকে নতুন অধ্যায়ে নেতৃত্ব দেবেন।”

৪২ বছর বয়সী অভিষেক নায়ার একসময় ছিলেন মুম্বাইয়ের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। ২০০৯ সালে ভারতের জার্সি গায়ে তিনটি ওয়ানডেও খেলেছেন তিনি। তবে খেলোয়াড়ি জীবনের চেয়ে কোচ হিসেবে তার সিভিটাই এখন অনেক সমৃদ্ধ।

২০১৮ সালে খেলোয়াড়ি জীবনের শেষ দিকে নায়ার কেকেআর একাডেমির প্রধান কোচ নিযুক্ত হন। ২০১৯ সালে অবসরের পর মূল দলের সহকারী কোচ হিসেবে যোগ দেন। পরে ২০২২ সালে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের প্রধান কোচের দায়িত্বও পালন করেন।

কেকেআরে থাকাকালীন গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে তার গড়ে ওঠে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। যখন গম্ভীর ভারতের জাতীয় দলের প্রধান কোচ হন, তখন নায়ারও তার সহকারী হিসেবে যোগ দেন। তবে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে বিসিসিআইয়ের পর্যালোচনার পর এক বছরেরও কম সময়ে তার চুক্তি নবায়ন করা হয়নি। এরপর আইপিএল ২০২৫ মৌসুমের আগে তিনি ফের ফিরে আসেন কেকেআরে।

তিন মৌসুম পর কেকেআর ও চন্দ্রকান্ত পান্ডিতের পথ আলাদা হয়ে যায়। সেই সময়ের মধ্যে দলটি দশ বছর পর ২০২৪ সালে আইপিএল শিরোপা জিতেছিল। তবে ২০২৫ মৌসুমে হতাশাজনক পারফরম্যান্সে মাত্র পাঁচ জয়ে পয়েন্ট তালিকায় অষ্টম স্থানে থাকাটা শেষ পর্যন্ত পান্ডিতের বিদায়ের কারণ হয়। এরপর তিনি ফিরে যান নিজ রাজ্য মধ্যপ্রদেশে এবং সেখানে ক্রিকেট পরিচালকের দায়িত্ব নেন।

কেকেআরের সহায়ক দলেও বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। বোলিং পরামর্শক ভরৎ অরুণ ও স্পিন-বোলিং বিশেষজ্ঞ কার্ল ক্রো দুজনই চলে গেছেন লখনউ সুপার জায়ান্টসে। ফলে আগামী কয়েক মাসে তাদের বিকল্প খোঁজার কাজ শুরু হবে।

অর্থাৎ, নতুন করে সাজানো কেকেআর এখন নতুন কোচ অভিষেক নায়ারের হাত ধরে এগোতে প্রস্তুত। আইপিএল ২০২৬-এ আবারও পুরনো জৌলুস ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায়।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অ্যালবামের গল্প বলবে ‘পেনোয়া’
  • খেলার নামে আদম পাচার ঠেকাতে তৎপর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ
  • বোলাররা ভাসান, ব্যাটসম্যানেরা ডোবান—আজ কী করবে বাংলাদেশ
  • ২০২৬ আইপিএলের আগে নতুন হেড কোচ নিয়োগ দিল কেকেআর