টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে দুই পক্ষের গোলাগুলি
Published: 9th, May 2025 GMT
কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলায় রোহিঙ্গাদের দুটি পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের এইচ-ব্লক ও আই-ব্লকসংলগ্ন জাকেরের ডেইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আশ্রয়শিবিরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুটি সন্ত্রাসী দল সাদ্দাম গ্রুপ ও নূর কামাল গ্রুপের মধ্যে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
আশ্রয়শিবিরে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। জানতে চাইলে টেকনাফ ১৬ এপিবিএনের অধিনায়ক মোহাম্মদ কাউছার সিকদার গোলাগুলির ঘটনা প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয়দের বরাতে তিনি বলেন, উভয় পক্ষ অন্তত ৫০-৮০ রাউন্ড গুলি ছুড়েছে। খবর পেয়ে এপিবিএন সদস্যরা উপস্থিত হলে সন্ত্রাসী আশ্রয়শিবিরের পশ্চিমের পাহাড়ি এলাকার দিকে পালিয়ে যান।
এপিবিএন কর্মকর্তা মোহাম্মদ কাউছার সিকদার আরও বলেন, মূলত রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের অপরাধকর্ম নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে ব্যবস্থাপনা কমিটির দায়িত্বে থাকা কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা (মাঝি) বলেন, আশ্রয়শিবিরের মাদক ব্যবসা ও অপহরণসহ নানা ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সাদ্দাম ও নূর কামাল গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে। সাধারণ রোহিঙ্গারা দুই পক্ষের গোলাগুলির ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে রয়েছেন।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ একটি দল পাঠানো হয়েছিল। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ ল গ ল র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
সরকার কোনো কঠিন বার্তা দিতে পারেনি
দেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে জরুরি ছিল সমঝোতা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো রাজনৈতিক সমঝোতার আশা সুদূরপরাহত হয়েছে। আশা করা হয়েছিল, ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন আসবে; কিন্তু তা হয়নি।
সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারের রায়ের দিন ধার্য করার প্রাক্কালে সেই পুরোনো দিনের মতোই লকডাউনের নামে অগ্নিসংযোগ, বোমাবাজি শুরু হয়েছে। মানুষের মধ্যে একধরনের শঙ্কা, সংশয় তৈরি হয়েছে। ৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এ রকম অবস্থায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে। এটি হচ্ছে দুই ভাবে। একটি হলো সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রীর বিচার বাধাগ্রস্ত করতে, আরেকটি হলো নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী—এই দুই দলের মুখোমুখি অবস্থান। এ রকম পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের অদক্ষতা ও নিজেদের প্রতি আস্থাহীনতা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
আরও পড়ুনস্থিতিশীলতা বিঘ্নের পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয়২৭ মিনিট আগেএ রকম পরিস্থিতিতে দরকার ছিল, সরকার একটি কঠিন বার্তা দেবে, যাতে সাধারণ জনগণ আস্থা পাবে, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা ভয় পাবে। কিন্তু সে জায়গায় সরকার কঠিন কোনো বার্তা দিতে পারেনি। এ রকম হলে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এই সুযোগে সমাজে যে দুর্বৃত্তরা রয়েছে, তারাও বেপরোয়া আচরণ শুরু করে। হত্যা, খুন, গণপিটুনির মাধ্যমে হত্যা, বিপক্ষ দলের নেতা-কর্মীদের ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা নানা জায়গায় ঘটে চলেছে। বিগত দিনে স্বৈরাচারী সরকার যে রকম কোনো ঘটনা ঘটার পরপরই ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ না করে নিজেদের মতো করে বক্তব্য দিত, অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল থেকেও একই রকমের বক্তব্য আসছে। এ ধরনের বক্তব্য প্রকারান্তরে অপরাধীদের অপরাধ করতে উৎসাহী করে তোলে।
এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনগণকে সম্পৃক্ত করে নিরাপত্তাবলয় তৈরি করতে হয়। জনগণকে সম্পৃক্ত করে নিরাপত্তাবলয় তৈরির ক্ষেত্রে সরকারের যথেষ্ট দুর্বলতা রয়েছে।
নূর খান: মানবাধিকারকর্মী