মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জন্য ‘মানবিক করিডর’ স্থাপনের খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনটি বলেছে, দেশের নিরাপত্তা, ধর্মীয় সম্প্রীতি ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা জড়িত—এমন কোনো বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার যদি রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, সেটি মেনে নেওয়া হবে না।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমান এ কথাগুলো বলেন। গণমাধ্যমে বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।

বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জন্য তথাকথিত মানবিক করিডর স্থাপনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণে প্রস্তাবিত শর্তসাপেক্ষ কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তির খবরে হেফাজতে ইসলাম গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু বিদেশি শক্তির পৃষ্ঠপোষকতায় গঠিত এই উদ্যোগ কেবল মানবিক সহায়তার মোড়কে উপস্থাপিত হলেও এর অন্তর্নিহিত লক্ষ্য অনেক বেশি জটিল এবং আশঙ্কাজনক বলে মনে করে হেফাজতে ইসলাম।

এই উদ্যোগে আরাকান আর্মিসহ সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী অন্যান্য দল ও সংগঠনগুলো উপকৃত হবে মন্তব্য করে বিবৃতিতে বলা হয়, এই পরিস্থিতি শুধু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তাই নয়, বাংলাদেশের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্যও গুরুতর হুমকি তৈরি করছে।

বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতারা বলেন, ‘জাতীয় পরামর্শ, রাজনৈতিক ঐকমত্য ও সংসদীয় আলোচনাবিহীন কোনো সিদ্ধান্ত, বিশেষত যা দেশের নিরাপত্তা, ধর্মীয় সম্প্রীতি ও ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে হুমকির মুখে ফেলে, আমরা তা কোনোভাবেই গ্রহণ করব না।’

প্রস্তাবিত করিডর ও এর কার্যক্রম বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে কোনো আলোচনায় অংশ নেওয়া হয়েছে কি না, প্রধান উপদেষ্টার কাছে সেই প্রশ্নও রেখেছেন হেফাজতে ইসলামের নেতারা। এমন কিছু হলে জাতির সামনে তা স্পষ্ট করার অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম র

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে সুনির্দিষ্ট রূপ দিতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে সুনির্দিষ্ট রূপ দিতে চায় বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। 

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সংসদ ভবনের এল. ডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) আলোচনাকালে তিনি এ সব কথা বলেন।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে আমরা একটি জাতীয় সনদে প্রতিফলিত করতে চাই। ভবিষ্যতে প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল এই সনদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ভূমিকা পালন করবে।” 

বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা এদেশের মানুষ এবং রাজনৈতিক শক্তিগুলোর দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ফল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে মানুষের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ যেমন প্রকাশ হয়েছে, তেমনি তাদের প্রত্যাশাকেও প্রকাশ করেছে। বার বার ফ্যাসিবাদের উত্থান হোক তা দেশের মানুষ চায় না। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যেখানে সকলের সমানাধিকার থাকবে, নাগরিকের অধিকার সুনিশ্চিত হবে এবং ভিন্ন মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকবে।” 

কমিশনের সহ-সভাপতি আরো বলেন, “সংস্কার কমিশনগুলো থেকে প্রাপ্ত সুপারিশমালা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে কমিশন। এ দায়িত্ব কেবল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নয় বরং রাজনৈতিক দলগুলোকেই মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে ভবিষ্যতের পথে অগ্রসর হতে হবে।”

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজের নেতৃত্বে দলটির সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতনসহ ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন নিখিল দাশ, জনার্দন দত্ত নানটু, প্রকৌশলী শম্পা বসু, ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী, জুলফিকার আলী, আহসান হাবিব বুলবুল, খালেকুজ্জামান লিপন, আবু নাঈম খান বিপ্লব এবং রাহাত আহম্মেদ।

রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার যে ১১টি কমিশন গঠন করেছে, তার মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করছে ঐকমত্য কমিশন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সঙ্গে আলোচনা হয়।

ঢাকা/এএএম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানবিক করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দর বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রয়োজন: বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস
  • ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনে বাধা কোথায়
  • অভ্যুত্থানের ৯ মাস পরও বড় পরিবর্তন সহজ হচ্ছে না
  • শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির ৯ মাস পার হলেও বড় পরিবর্তন আনা সহজ হচ্ছে না
  • জাতীয় ঐকমত‍্য কমিশনের কাজের অগ্রগতি অস্পষ্ট: এবি পার্টি
  • সংস্কার নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের অগ্রগতি এখনো স্পষ্ট নয়: এবি পার্টি
  • নির্বাচনের সময়সীমা ডিসেম্বর অতিক্রম করা যৌক্তিক হবে না: বাসদ
  • গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে সুনির্দিষ্ট রূপ দিতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ
  • গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রই নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করতে পারে: আলী রীয়াজ