জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইসলামিক স্টাডিজ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম পুনর্মিলনী আয়োজন করা হয়েছে। এতে বিভাগের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।

শনিবার (১৭ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে এ পুনর্মিলনীর উদ্বোধন করেন জবি উপাচার্য অধ্যাপক মো.

রেজাউল করিম। 

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রইছ উদ্দীনের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিনা শরমীন এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. মোশাররফ হোসেন। 

আরো পড়ুন:

প্রথম ধাপের ভর্তি শেষে কুবিতে ৩৯১ আসন ফাঁকা

সাত কলেজ
রবিবারের মধ্যে অন্তর্বর্তী প্রশাসন চান শিক্ষার্থীরা, না মানলে আন্দোলন

অন্যদের মাঝে আরো বক্তব্য দেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক, ছাত্র কল্যাণ পরিচালক কে এ এম রিফাত হোসেন, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ নূরুল্লাহ, অ্যালামনাই প্রতিনিধি ২০০৩-২০০৪ শিক্ষাবর্ষের শাহীন মোল্লা প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষকবৃন্দ ও অ্যালামনাই সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।

দিনব্যাপী আয়োজনে ছিল কোরআন তেলাওয়াত, নাতে রাসুল, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, ‘স্পন্দন’ স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন, স্মৃতিচারণ, র‍্যাফেল ড্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের গঠনতন্ত্র উপস্থাপন ও অনুমোদন এবং কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন অন্যতম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জবি উপাচার্য বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বরাবরই অধিকার আদায়ে সোচ্চার। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। আমাদের সর্বশেষ আন্দোলনও সফলভাবে সমাপ্ত হয়েছে। অ্যালামনাইরা দেশ-বিদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছে, তারা ভবিষ্যতেও বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম ক স ট ড জ অ য ল মন ই

এছাড়াও পড়ুন:

পশুবাহিত রোগে উদ্বেগ

পশুর দেহের ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, প্যারাসাইটে জীবাণু মানবদেহে প্রবেশ করে যেসব রোগ হয় সেগুলোকে পশুবাহিত রোগ বা ইংরেজিতে জুনোটিক ডিজিজ বলে। সংক্রামিত পশু থেকে জীবাণু মানবদেহে প্রবেশ করে নানাভাবে, যেমন– ছোঁয়ার মাধ্যমে, কামড় দিলে, আঁচড় দিলে, কাঁচা বা অর্ধরান্না করা খাবার খেলে, দূষিত পানি পান করলে, জীবাণুযুক্ত বাতাসের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাস নিলে, কাঁচা দুধ বা কাঁচা দুগ্ধ জাতীয় খাবার খেলে।

কুকুরের কামড় থেকে র‍্যাবিস ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশ করলে র‍্যাবিস বা জলাতঙ্ক হয়। প্রতিবছর আমাদের দেশে প্রায় ১ লাখ ৬৭ হাজার মানুষ কুকুরের কামড়ের শিকার হয়। তার মধ্যে অনেকের মৃত্যুও হয়। আরেকটি রোগ হচ্ছে বার্ড ফ্লু। এটি ভাইরাস ইনফ্লুয়েঞ্জা। এটি পোলট্রি ফার্ম বা বন্যপাখি থেকে মানবদেহে ছড়ায়। তা ছাড়া নিপাহ ভাইরাস ফলবাগানের বাদুড়ের লালা, মল-মূত্র বা রক্ত দ্বারা সংক্রামিত মানুষের খাবারের মাধ্যমে মানুষ বা অন্যান্য প্রাণীকে আক্রান্ত করে। আক্রান্ত মানুষ জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, ডায়রিয়া, কাশি, শ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্ট ইত্যাদিতে ভোগে। নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর বেশির ভাগই মারা যায়। এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বর হয়। এতে উচ্চ তাপমাত্রা, চোখের পেছনে ব্যথা, শরীরে র‍্যাশ, মাংশপেশি ও হাড়ে ব্যথা, বমি, রক্তবমি, নাক দিয়ে রক্ত পড়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়।
রোটা ভাইরাসও গৃহপালিত পশু, যেমন– গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি, কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি বাহিত রোগ বলে গবেষকরা মনে করেন। শিশুরা মূলত এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। তাদের পরিপাকতন্ত্রে সংক্রমণের কারণে এতে প্রচণ্ড ডায়রিয়া, বমি, জ্বর, খাবারে অরুচি দেখা দেয়। এটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত মানবদেহ ও পশুর মলের সংস্পর্শে ছড়ায়।

পশুবাহিত রোগ থেকে মুক্তির জন্য কিছু প্রতিকার নীতি মানতে হবে। যেমন– ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা। হাত ধুতে হবে। পরিধেয় কাপড়, বিছানাপত্র, আসবাব, বাড়িঘর, আশপাশ ইত্যাদি পরিষ্কার রাখতে হবে। সব ধরনের খাবার/পানি টাটকা, জীবাণুমুক্ত, ভালো করে রান্না করে বা ফুটিয়ে খেতে হবে। আশপাশের সব পশু-পাখিকে ভ্যাকসিন দিতে হবে। শিশুদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী লালন-পালন করতে হবে। বাড়ি ও আশপাশের স্যানিটেশন ও ময়লা ব্যবস্থাপনায় সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। নিয়মিত পোকামাকড় বা কীটপতঙ্গ দমন করতে হবে। সব ধরনের গৃহপালিত পশুপাখিকে নিয়মানুযায়ী ভ্যাকসিন দিতে হবে। রাস্তার সব কুকুর-বিড়ালকে মাস-ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে হবে। 

এ ব্যাপারে স্কুল-কলেজ, 
বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস-আদালত, হাটবাজার সব স্থানে প্রথমে সচেতনতা ও পরে আইন প্রয়োগ করতে হবে। বন ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে দেশের সব স্তরের মানুষকে নিজ নিজ স্থান থেকে বিবেচনা করে সচেতন হতে হবে। কারণ প্রতিবছর দেশে পশুবাহিত রোগের কারণে ওষুধ-হাসপাতাল-চিকিৎসকের খরচ, ইনকাম লস, সঞ্চিত অর্থ ব্যয়, সরকারি হাসপাতালে ভর্তুকি, পশু-পাখির ক্ষতি, খাদ্যে অনিশ্চয়তা ইত্যাদি মিলে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনৈতিক হুমকির সম্মুখীন হচ্ছি। তাই এই রাহু থেকে বাঁচতে নিজেদেরই সচেষ্ট হতে হবে।     
                                     
ডা. গোলাম শওকত হোসেন: গবেষক ও কলাম লেখক
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ