ইউনিয়ন পরিষদেই চালু হলো কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
Published: 27th, May 2025 GMT
দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনশক্তি তৈরিতে রাজশাহীতে এবার ইউনিয়ন পর্যায়ে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করা হচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় জেলার পবা উপজেলায় এই প্রথম এমন একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়েছে।
এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি করা হয়েছে উপজেলার হড়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ে। মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ। এ সময় জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাহবুবুল আহসান বুলবুল, ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী আবু বাশির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সরেজমিন দেখা যায়, নিভৃত পল্লীর তরুণ-তরুণীদের প্রশিক্ষণ দিতে এই কেন্দ্রটিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কম্পিউটার আনা হয়েছে। এখানে প্রতি ব্যাচে ২০ জন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারবেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলের ষষ্ঠ থেকে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা এখান থেকে কম্পিউটারের বেসিক ও নেটওয়ার্কিং প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন। প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর তারা নিজেরাই আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে উপার্জন করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী আবু বাশিরের পরিকল্পনায় এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি করা হয়েছে। তিনি জানান, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে ১৫ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটিতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক, কলেজের অধ্যক্ষ ও মাদ্রাসার সুপারদেরও রাখা হয়েছে। ফলে এখানে প্রশিক্ষণার্থীর কোনো অভাব হবে না। নামমাত্র ফি দিয়ে ষষ্ঠ থেকে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা এখানে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন।
ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, এলাকার অনেক তরুণ পড়াশোনা শেষ করে বেকার বসে আছেন। তারা এখান থেকে কম্পিউটারের সব ধরনের প্রশিক্ষণ নিয়ে বাস্তব জীবনে কাজে লাগাতে পারবেন। এখান থেকে তৈরি হবে ফ্রিল্যান্সার ও গ্রাফিক্স ডিজাইনার। বেকারত্ব দূর করতে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিকে তারা ভালোভাবেই কাজে লাগাতে চান।
পবার ইউএনও আরাফাত আমান আজিজ বলেন, বর্তমান যুগে কম্পিউটার ছাড়া জীবন খুব কঠিন। এ জন্যই যুবসমাজকে স্মার্ট, দক্ষ ও আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়ে তুলতে এ ধরনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করা হলো। পর্যায়ক্রমে অন্য ইউপি কার্যালয়েও এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হবে।
ঢাকা/কেয়া/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রব ন উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে ‘স্ত্রী’র যত অভিযোগ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেতার বিরুদ্ধে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন স্ত্রী। গতকাল বৃহস্পতিবার পাকুন্দিয়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান তিনি। ভুক্তভোগী তরুণীর ভাষ্য, তাদের আড়াই বছরের একমাত্র সন্তানকেও কৌশলে নিজের কাছে নিয়ে গেছেন। এমনকি, পুরোনো তারিখে তালাক দিয়েছেন তাঁকে।
এ বিষয়ে ৩০ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী সুমাইয়া আক্তার হাসি (২৫)। তিনি উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি চারটেকি গ্রামের তাজউদ্দিনের মেয়ে। অভিযোগ ও সংবাদ সম্মেলন থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিকভাবে হাসির বিয়ে হয় তারাকান্দি গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে রাজিন সালেহের (৩১) সঙ্গে। রাজিন পেশায় একটি মাদ্রাসার কম্পিউটার অপারেটর। তাদের আড়াই বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে।
হাসির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই সালেহ যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। তখন স্ত্রী-সন্তানের খরচও বহন করতেন না। তাঁর বাবার বাড়ি থেকে খরচ চালানো হতো। এক পর্যায়ে হাসিকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কয়েকবার লোক পাঠিয়ে ভালো ভালো কথা বলে বাড়ি নিয়ে যান সালেহ। এর পরও খারাপ আচরণের কারণে হাসি বাবার বাড়ি চলে আসেন।
ইউএনওর কাছে দেওয়া অভিযোগে হাসি লিখেছেন, সালেহ হুমকি দিচ্ছেন, তিনি এখন এনসিপির বড় নেতা। দেশ চালান, যা বলবেন, তাই হবে। হাসি ইউএনওর কাছে ঘটনার তদন্ত করে স্বামীর সংসারে শান্তিপূর্ণভাবে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান।
এদিকে এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের সই করা চিঠিতে গত ২৯ জুন রাজিন সালেহকে প্রধান সমন্বয়কারী করে দলের পাকুন্দিয়া উপজেলার ১৮ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এর দুই দিন আগে ২৭ জুন সালেহ নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করে হাসিকে তালাক দিয়েছেন। সেটি নোটিশ রেজিস্ট্রি ডাকযোগে পাঠিয়েছেন ৩ জুলাই। কিন্তু নোটিশ হাসি গ্রহণ করেননি বলে জানিয়েছেন সালেহ।
এনসিপি নেতা রাজিন সালেহ এ বিষয়ে বলেন, ‘হাসির চলাফেরা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। আচার-আচরণও খারাপ ছিল। বনিবনা হচ্ছিল না। সেই কারণেই তালাক দিয়েছেন।’ তাঁর দাবি, একটি রাজনৈতিক মহল তাঁর সুনাম নষ্ট করতে এসব অভিযোগ তোলাচ্ছে।
পাকুন্দিয়ার ইউএনও মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর রাজিন সালেহকে নোটিশ করেছিলাম মীমাংসায় বসার জন্য। কিন্তু পরে জানা গেছে, তিনি আগেই তালাক দিয়েছেন। ফলে এটি এখন আইনি প্রক্রিয়ায় চলে গেছে।’