সন্জীদা খাতুন আরও উজ্জ্বল হয়ে থাকবেন
Published: 24th, May 2025 GMT
সন্জীদা খাতুন স্বপ্নলোকের সৃষ্টি করেছিলেন। বাঙালি সংস্কৃতিকে ধারণ করে আপন ঐতিহ্যে মাথা উঁচু করে বাঁচার স্বপ্ন। তাঁর তিরোধানের পরে সেই স্বপ্ন বিলীন হয়ে যাবে না। আরও উজ্জ্বল, আরও শক্তিশালী হবে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের সংগ্রাম। এমনই প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন তাঁর অনুরাগী, অনুসারী ও সুরের সঙ্গীরা।
শনিবার সন্ধ্যায় ‘বিশ্ব হতে হারিয়ে গেছে স্বপ্নলোকের চাবি’ নামে ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সংগীতজ্ঞ সন্জীদা খাতুনের প্রতি শ্রদ্ধা ও স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখা। ছায়ানট ভবনের রমেশ চন্দ্র দত্ত স্মৃতি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল পরিষদের শিল্পীদের সম্মেলক কণ্ঠের গান ‘তোমার সুরের ধারা’ পরিবেশনা দিয়ে। অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছিল গান, আবৃত্তি, স্মৃতিচারণা দিয়ে।
গানের পরে সম্মিলন পরিষদের সভাপতি লোপা আহাদ তাঁর শিক্ষক ও পথনির্দেশক সন্জীদা খাতুনের স্মৃতিচারণা করেন। তিনি বলেন, বহুগুণে গুণী মানুষ ছিলেন তিনি। একাধারে সংগীতবিশেষজ্ঞ, শিক্ষক, লেখক, সংগঠক এমন অনেক রূপে তাঁকে আমরা পেয়েছি। বাইরে থেকে তাঁকে দেখে যতটা কঠিন মনে হয়েছে, কিন্তু তার ভেতরে ছিল এক মমতাময়ী কোমল রূপ। তাঁর সান্নিধ্য যাঁরা পেয়েছেন, তাঁরা তাঁর হৃদয়ের সেই কোমলতা অনুভব করেছেন।
এরপর ‘যদি জানতেম আমার কিসের ব্যথা’ গানটি গেয়ে শোনান সুমা রানী রায়। দীপ্র নিশান্ত গেয়েছেন ‘যারে নিজে তুমি ভাসিয়ে ছিলে।’ এরপর আবার স্মৃতিচারণার পালা।
পারিবারিক বন্ধু ওসমান কায়সার চৌধুরী তাঁর শৈশবে সন্জীদা খাতুনের গান শোনা, ১৯৬৭ সালে রমনার বটমূলে ছায়ানটের প্রথম পয়লা বৈশাখের প্রভাতি অনুষ্ঠান, ছায়ানট স্কুল গঠনের কঠিন সংগ্রামের দিনগুলোর স্মৃতি তুলে ধরেন শ্রোতাদের সামনে। তিনি বলেন, তাঁর মা ছিলেন সন্জীদা খাতুনের বন্ধু। আজ ছায়ানট এত বড় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে; কিন্তু সেই আজিমপুরে অগ্রণী স্কুলের শ্রেণিকক্ষে যে ছায়ানটের যাত্রা শুরু হয়েছিল, সেই সংগঠন চালাতে যে অর্থসংকট, যে বিপুল পরিশ্রম, ত্যাগ নিষ্ঠা ছিল তাদের, তা এখন অনেকে ভাবতেই পারবেন না। তিনি বলেন, সন্জীদা খাতুনের একটি বিশেষ গুণ ছিল যে তিনি কোনো কাজ শুরু করলে তাতে লেগে থাকতেন। আজকের ছায়ানট এর একটি বড় দৃষ্টান্ত। নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে দেশের সংস্কৃতি বিকাশের জন্য এমন করে সারা জীবন কাজ করে চলার মতো দৃষ্টান্ত বিরল।
লাইসা আহমদ লিসা ‘চির সখা হে ছেড়ো না মোরে’ গানটি গেয়ে শোনান.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ য় নট
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে কেন চটে গেলেন ট্রাম্প, আলবানিজের কাছে নালিশেরও হুমকি দিলেন
ব্যক্তিগত সম্পদ ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যম এবিসির এক সাংবাদিকের ওপর ভীষণ চটে যান। ওই সাংবাদিকের কারণে ‘অস্ট্রেলিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে’ বলে সতর্ক করেন তিনি। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সঙ্গে আসন্ন বৈঠকে ওই সাংবাদিকের ব্যাপারে নালিশ করারও হুমকি দেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের লনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন ট্রাম্প। এবিসির সাংবাদিক জন লায়ন্সও তাঁকে প্রশ্ন করছিলেন। লায়ন্স এবিসিতে প্রচারিত ফোর কর্নারস অনুষ্ঠানের জন্য সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন।
লায়ন্সের সঙ্গে কথোপকথনে ট্রাম্প এটাও বলেছেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠকে অংশ নিতে যাচ্ছেন। আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার ফাঁকে ওই বৈঠক হতে পারে।
গতকাল লায়ন্স ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি কতটা ধনী হয়েছেন? তিনি আরও উল্লেখ করেন, ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে অবস্থান করা সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানি না।’ তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ট্রাম্প অর্গানাইজেশন নামে তাঁর যে পারিবারিক ব্যবসাটি আছে, সেটি এখন তাঁর সন্তানেরা পরিচালনা করেন।
ট্রাম্পের দাবি, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই বেশির ভাগ ব্যবসায়িক চুক্তি হয়েছে।
লায়ন্সের সঙ্গে কথোপকথনে ট্রাম্প এটাও বলেছেন যে তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠকে অংশ নিতে যাচ্ছেন। আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার ফাঁকে ওই বৈঠক হতে পারে।এরপর লায়ন্স ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যক্তিগত ব্যবসা করা ঠিক কি না? ট্রাম্প বলেন, ‘আসলে আমি নই, আমার সন্তানেরা ব্যবসা চালাচ্ছে।’
এরপর লায়ন্সকে ট্রাম্প জিজ্ঞাসা করেন, তিনি (লায়ন্স) কোথা থেকে এসেছেন।
এরপর ট্রাম্প চটে গিয়ে বলেন, এ ধরনের প্রশ্ন করার মধ্য দিয়ে লায়ন্স ‘অস্ট্রেলিয়ার ক্ষতি’ করছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলতে থাকেন, ‘আমার মতে, আপনি এ মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার অনেক ক্ষতি করছেন। আর তারা আমার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে চায়। আপনি জানেন, আপনার নেতা (অ্যান্থনি আলবানিজ) শিগগিরই আমার সঙ্গে দেখা করতে আসছেন। আমি তাঁকে আপনার ব্যাপারে বলব। আপনি খুব খারাপ ভঙ্গিতে কথা বলছেন। আপনি আরও ভালোভাবে কথা বলুন।’
সাংবাদিক লায়ন্স ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যক্তিগত ব্যবসা করা ঠিক কি না? ট্রাম্প বলেন, ‘আসলে আমি নই, আমার সন্তানেরা ব্যবসা চালাচ্ছে।’এরপর লায়ন্স আবারও কিছু বলতে গেলে তাঁকে থামিয়ে দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘চুপ করুন’।
গত জুনে কানাডায় জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে প্রথমবারের মতো ট্রাম্প ও আলবানিজের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে হঠাৎই তা বাতিল হয়ে যায়। এর পর থেকে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের চেষ্টা করছেন আলবানিজ।
আরও পড়ুনট্রাম্প-জেলেনস্কির বাগ্বিতণ্ডার পর কী বললেন স্টারমার ও আলবানিজ০১ মার্চ ২০২৫সম্প্রতি আলবানিজ বলেছেন, নিউইয়র্কে বিশ্বনেতাদের সম্মেলন ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদানকালে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর দেখা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিউইয়র্কে আমাদের একে অপরের সঙ্গে দেখা হবে। আগামী সপ্তাহের মঙ্গলবার রাতে তিনি একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন। এ ছাড়া চলতি বছরের শেষ নাগাদ বিভিন্ন ফোরামে আমাদের দেখা হবে। এটা সম্মেলনের মৌসুম।’
ট্রাম্পের সঙ্গে আলবানিজের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জরুরি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে আছে পেন্টাগনের অকাস পারমাণবিক সাবমেরিন চুক্তি এবং প্রতিরক্ষা খাতে আরও ব্যয় বাড়াতে ট্রাম্প অস্ট্রেলিয়ার কাছে যে দাবি জানিয়েছেন, তা নিয়ে পর্যালোচনা।