আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছে ছাত্র-জনতা। পূর্ব ঘোষণা দিয়ে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় উত্তরা বিএনএস সেন্টার থেকে আজমপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নেয় তারা।

পরে ৭ দফা দাবি দিয়ে তারা মহাসড়ক ছেড়ে উত্তরার শহীদ মুগ্ধ মঞ্চের দিকে চলে যায়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে পেশ করা তাদের দাবিগুলো হল-, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয়ভাবে জঙ্গী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা; তাদেরকে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করার পর বিচারের আওতায় এনে সাংবিধানিকভাবে স্থায়ী নিষিদ্ধ করা; তাদের নেতাদের সেইফ এক্সিট কারা দিয়েছে তাদের তালিকা প্রকাশ করা; যেসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রাণহানীমূলক রাষ্ট্রীয় স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত তাদের বিচারের আওতায় আনা; অবিলম্বে দণ্ডবিধির ১৩২ ধারা বাতিল করা; জুলাই গণহত্যার বিচার দ্রুততম সময়ে করে রায় কার্যকর করা এবং আওয়ামী লীগ পূনর্বাসনের অভিযোগ যেসব উপদেষ্টার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে এবং যারা নিয়মিত অফিস করেন না, তাদের বিরুদ্ধে অতি দ্রুত তদন্ত শুরু করা এবং সকল সুশীল উপদেষ্টার পদত্যাগ নিশ্চিত করা। খবর বাসসের

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশ ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের পালিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে তারা আগামীকাল শনিবার বিকেলে আবারও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ব্লকেডের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

অবরোধ প্রসঙ্গে উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ও অতিরিক্ত ডিআইজি মো.

মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দাবিগুলো পেশ করে চলে গেছে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ সড়ক অবর ধ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ময়মনসিংহের আ.লীগ নেতাকে পেটানোর ভাইরাল ভিডিও নিয়ে যা জানা গেল

ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পাঠানকে কয়েকজন তরুণ একটি কক্ষের মধ্যে পেটাচ্ছেন—এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি গতকাল বুধবার রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লেও ঘটনাটি প্রায় এক মাস আগের বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

১৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একটি কক্ষে তিনজন তরুণের মধ্যে একজন চেয়ারে বসে আছেন। একজনের হাতে কাঠের একটি খাপ ও মুখে মাস্ক পরা। কক্ষের টেবিলটির দিকে ইউসুফ খানের হাত রেখে এক তরুণ চাপ দিয়ে ধরে রেখেছেন। উল্টো দিকে ইউসুফ খানের নিতম্বে কাঠ দিয়ে আঘাত করছেন মুখে মাস্ক পরা তরুণ।

অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের দুবারের সাবেক চেয়ারম্যান। ছাত্রজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জেলা যুবলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন। জেলার নান্দাইল শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজে শিক্ষকতা করে অবসরে যান। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে আছেন। তিনি নগরের মহারাজা রোডের বাসিন্দা।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ভিডিওটি নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেন ময়মনসিংহের সাবেক সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান। পরে সেটি আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজেও পোস্ট করা হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

মোহিত উর রহমান ফেসবুকে ভিডিওটি পোস্ট করে লেখেন, ‘অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, একজন নির্বিবাদী মানুষ। বাকিটা আপনাদের বিবেকের কাছে ছেড়ে দিলাম।’

ভিডিওটি আওয়ামী লীগের পেজে পোস্ট করে দাবি করা হয়, ‘চাঁদা না দেওয়ায় ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠানকে তুলে নিয়ে মারধর ও অমানবিক নির্যাতন করে বিএনপির সন্ত্রাসীরা।’

আজ দিনভর ইউসুফ খানের মুঠোফোন নম্বরে কল দিলেও তিনি বারবার কেটে দেন। তবে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে যে ব্যক্তিকে পেটানো হচ্ছে, তিনি ইউসুফ খান বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কাজী আজাদ জাহান (শামীম)।

ইউসুফ খান ও তাঁর পরিবারের বরাতে আজাদ জাহান প্রথম আলোকে বলেন, ৫ আগস্টের পর ইউসুফ খান রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় বাসা নিয়ে থাকতে শুরু করেন। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি ১৬ এপ্রিলের। ইউসুফ খান ধানমন্ডি লেকের কাছে একটি চায়ের দোকানে নিয়মিত চা খেতে যেতেন। তাঁর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার বিষয়টি বুঝে যায় একটি চক্র। ১৬ এপ্রিল বিকেলে বাসা থেকে বের হয়ে ধানমন্ডি লেকের দিকে যাওয়ার পথে ৬-৭টি মোটরসাইকেলে এসে সমন্বয়ক পরিচয়ে একটি দল তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর একটি বাসায় নিয়ে আটকে ব্যাপক মারধর করে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। কিন্তু ইউসুফ খান এত টাকা দিতে পারবেন না জানালে তারা থানায় ফোন করে মামলার ব্যাপারে জানতে চায়। পুলিশের কাছে তুলে দেওয়ার ভয় দেখালে ৫ লাখ টাকা দিতে রাজি হন ইউসুফ খান এবং কয়েক দিনের সময় চান। এরপর ইউসুফ খানকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। পরে বিভিন্নজনের সঙ্গে পরামর্শ করে বাসা পরিবর্তন করেন ইউসুফ খান। তিনি বলেন, ‘যে বাসায় ইউসুফ খান থাকতেন, সেখানে গিয়ে চক্রটি তাঁকে না পেয়ে তাঁদের করে রাখা ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়েছে। বর্তমানে ইউসুফ খান নিরাপদে আছেন।’

ময়মনসিংহে কর্মরত পুলিশের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মাসখানেক আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া একটি দল ইউসুফ খানকে আটক করেছিল। তখন পুলিশের কাছে ইউসুফ খানের মামলাসংক্রান্ত তথ্যও নেওয়া হয়। মামলা আছে জানানোর পর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেনি। হয়তো কোনো সিস্টেম করেছে।’

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম খান বলেন, ইউসুফ খান বিস্ফোরক মামলার আসামি। পুলিশ তাঁকে আটক করেনি। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির বিষয়ে তাঁরা কিছু বলতে পারবেন না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই ঘণ্টার শ্রম বিক্রির হাট
  • মামলার সাক্ষী হওয়ায় যুবককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
  • তীব্র গরমে জনশূন্য ব্যস্ততম নগরী ময়মনসিংহ
  • ময়মনসিংহে মামলা প্রত্যাহার করাতে রাজি না হওয়ায় বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা
  • ময়মনসিংহে এলাকাবাসীর সচেতনতায় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল ট্রেন
  • চাচার ৩ বছর পর ভাতিজাকেও হত্যা
  • ময়মনসিংহের আ.লীগ নেতাকে পেটানোর ভাইরাল ভিডিও নিয়ে যা জানা গেল
  • ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে লাঠিপেটার ভিডিও ভাইরাল
  • রেলওয়ে শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি বাতিল দাবিতে বিক্ষোভ