ভাড়া নিয়ে মারামারি, ভাড়াটিয়ার হাতে প্রাণ গেল বাড়িওয়ালার
Published: 24th, June 2025 GMT
তিন মাসের ঘর ভাড়া বকেয়া। ভাড়ার টাকা আদায় নিয়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন ভাড়াটিয়া ও বাড়ির মালিক। এতে প্রাণ গেছে আবুল বাসার নামে এক বাড়িওয়ালার। সোমবার রাত ১২টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের পাইমাদির নতুনমহল্লায় এই ঘটনা ঘটেছে।
খবর পেয়ে অভিযুক্ত ভাড়াটিয়া পরিবারের তিন সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহীনূর আলম।
আটক ব্যক্তিরা হলেন– সোহাগ হোসেন, তার মা ফাতেমা বেগম ও স্ত্রী আলেয়া বেগম।
জানা গেছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে আবুল বাসারের বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন সোহাগ হোসেনের পরিবারের সদস্যরা। ৩ মাস ধরে ঘর ভাড়া পরিশোধ করেননি ভাড়াটিয়া। এতে বাড়ির মালিক আবুল বাসার ভাড়াটিয়া সোহাগ হোসেনকে বাড়ি ছাড়ার কথা জানান। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি হতো। সবশেষ সোমবার রাতে সোহাগ হেসেনের ভাড়া ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন বাড়ির মালিক। রাতে সোহাগ পরিবার নিয়ে বাসায় ফিরে ঘরের দরজায় তালা ঝুলতে দেখেন। তখন বাড়িওয়ালার ছেলে নাফিজকে গেট খুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন সোহাগ। এ নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে তালা খুলে দেন নাফিজ। এরপরও কথা-কাটাকাটি করতে থাকেন তারা। এ সময় তাৎক্ষণিক নাফিজের ছোট ভাই বাধন ঘটনাস্থলে এসে বাগবিতণ্ডায় যোগ দেন। দুই ভাই মিলে ভাড়াটিয়া সোহাগের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়ান। ঝগড়া ও মারামারির সময় বাড়িওয়ালা আবুল বাসার ও ভাড়াটিয়া সোহাগের স্ত্রী ও মা এসে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। ঝগড়া থামাতে গিয়ে ধস্তাধস্তি ও মারামারির একপর্যায়ে আবুল বাশারকে সোহাগ মারধর করে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে আঘাত পান আবুল বাসার। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ ঘটনায় ভাড়াটিয়া পরিবারের তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনূর আলম বলেন, ৩ মাসের ঘর ভাড়া পাওনা নিয়ে ঝগড়া হয়। তখন নিহত আবুল বাশারকে ভাড়াটিয়ারা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। তিনি আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে খানপুর হাসপাতালে মারা গেছেন। ভাড়াটিয়াদের আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
চা খেতে এক লাখ টাকা করে চাওয়া শুরু করেছে দুদক, অভিযোগ হাসনাতের
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা মিতুর কাছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মকর্তা ঘুস চেয়েছেন বলে দাবি করেছেন দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমরা দুদকের এই দুর্নীতির বিচার চাই। আমলাদের এক লাখ টাকার চা খাওয়ানোর জন্যই কি জুলাইতে বাংলাদেশের মানুষ জীবন দিয়েছিল?’
মঙ্গলবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ দাবি করেন হাসনাত। ওই পোস্টের সঙ্গে তিনি তিনটি ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করেছেন।
‘স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল ১ লাখ টাকা’ শিরোনামে পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, ‘আপনার নামে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ না থাকলেও সেটার ক্লিয়ারেন্স নিতে আপনাকে এক লাখ টাকা দিতে হবে। সম্প্রতি মাহমুদা মিতুর কাছে থেকে এই টাকা চাওয়া হয়েছে দুদকের ডিজি আকতার আর তার ডিডি পরিচয়ে। মাহমুদা মিতুকে বলা হয় আপনি একজন ডাক্তার, আপনার তো টাকা-পয়সার অভাব থাকার কথা না। আপনি এক লাখ টাকা দিয়ে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যান।’
তিনি লেখেন, ‘দুদকের সর্বনিম্ন রেট নাকি এক লাখ টাকা। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আকতার আবার ফোন দিয়ে জানতে চান টাকা দেবে কি না? টাকা না দিলে নাকি খবর করে ছেড়ে দেওয়া হবে। রেড ক্রিসেন্টে মাহমুদা মিতু যোগ দিয়েছেন ৫ আগস্টের পরে। দুদক এখন তদন্ত করছে আওয়ামী লীগের সময়ের দুর্নীতি নিয়ে।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘অথচ হাস্যকরভাবে আওয়ামী আমলের কর্মকর্তাদের নাম না দিয়ে তখনকার দায় চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এখনকার লোকজনের ওপর। এখানে বড় অঙ্কের টাকার লেনদেনের সমূহ সম্ভাবনা আছে। কিছু না করাদের কাছে থেকেই যদি এক লাখ করে নেয়, আওয়ামী লীগ আমলের কর্মকর্তাদের থেকে তাহলে কত করে নিয়েছে?’
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, ‘দুদকের এসব কাজকারবার এই প্রথম না। শেখ হাসিনার আমলে খালেদা জিয়াসহ বিরোধী দলের বহু নেতাকে এরা হয়রানি করেছে। অথচ আওয়ামী লীগের হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি নিয়ে এরা কিছুই বলেনি। আমরা আশা করেছিলাম, ৫ আগস্টের পর এদের মধ্যে পরিবর্তন আসবে। কিন্তু আসেনি। বরং এরা এখন চা খাওয়ার জন্য এক লাখ করে টাকা চাওয়া শুরু করেছে। মাহমুদা মিতু সাহস করে ভিডিও করে রেখেছেন, অন্যায় ঘুস দেন নাই। কিন্তু কত সাধারণ মানুষ এদের এই চায়ের বিল দিতে বাধ্য হয়েছে জানা নেই।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমাদের অবস্থান পরিষ্কার- মাহমুদা মিতু কেন, যদি আমার নামেও এক পয়সা দুর্নীতির অভিযোগ আসে, সেটা মানুষের সামনে প্রকাশ করে দিন। কাউকে ফোন করারও দরকার নেই, দুর্নীতি পেলেই সেগুলো প্রকাশ করে মামলা করে দেন। আইনের হাতে তুলে দেন। তা না করে নিরীহ লোকজনের ওপরে এই চাঁদাবাজি কেন করছেন? কেন চা খাওয়ার বিল চান, কেন টাকা না দিলে হুমকি দেন? ফ্যাসিবাদের পতনের পর আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ চাই।’
হাসনাত বলেন, ‘শেখ হাসিনার করে যাওয়া দুর্নীতির পথে যেন আর কেউ না যেতে পারে সেজন্য দুদককেও আমরা নতুন রূপে দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নতুন বাংলাদেশেও দুদক সেই পুরোনো পথেই হাঁটা শুরু করেছে। আমলাতন্ত্র আবারও বিষদাঁত নিয়ে কামড় বসাতে হাজির হয়েছে। এই বিষদাঁত ভাঙতে না পারলে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন হেরে যাবে, আমরাও হেরে যাবো। আমরা দুদকের এই দুর্নীতির বিচার চাই। আমলাদের এক লাখ টাকার চা খাওয়ানোর জন্যই কি জুলাইতে বাংলাদেশের মানুষ জীবন দিয়েছিল?’