বলিউড তারকা সালমান খান ও ঐশ্বরিয়া রায়ের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে আজও চর্চা হয়। ‘হাম দিল দে চুকে সানাম’ ছবির শুটিংয়ের সময় নাকি তাঁদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সময় চুটিয়ে প্রেম করলেও তা স্থায়ী হয়নি। মাঝ পথেই ভেঙে যায় সালমান-ঐশ্বরিয়ার প্রেম।

ভারতীয় গণমাধ্যমে এর আগে ঐশ্বরিয়া সঙ্গে বিবেকের সম্পর্ক নিয়ে খবর এসেছে। সেখানে বলা হয়, সালমানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর নাকি বিবেক ওবেরয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন ঐশ্বরিয়া। এই খবর ছড়ানোর পর সালমানের থেকে হুমকিও পেয়েছিলেন বিবেক।

এতোদিন ধরে যে খবর ছড়ানো হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন মুম্বাইয়ের এক সাংবাদিক। তাঁর দাবি, ঐশ্বরিয়া ও বিবেকের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়েই ওঠেনি। এই গুজবের কারণে সালমান-ঐশ্বরিয়ার মধ্যে আরও দূরত্ব বেড়ে যায়।

ওই সাংবাদিকের কথায়, ‘বলা হয়, সালমান খানের পর ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন বিবেক- এই খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা। ঐশ্বরিয়ার বাবা-মা এই সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহে ছিলেন।’

ওই সময় ঐশ্বরিয়াকে বিয়ে করেতে চেয়েছিলেন সালমান। কিন্তু রাজি ছিলেন না অভিনেত্রী। তিনি কাজে মনোযোগ দিতে চেয়েছিলেন। সূত্র: আনন্দবাজার।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

শুভবুদ্ধির উদয় হোক, সংঘাত বন্ধ হোক

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হওয়ার পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলায় মদদ দেওয়ার অভিযোগ এনে ১৯৬২ সালে সই হওয়া সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করে। দুই দেশই সীমান্ত বন্ধ করার পাশাপাশি নিজ নিজ আকাশসীমায় প্রতিপক্ষের বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়।

এখানেই শেষ নয়। হামলার ১৫ দিনের মাথায় পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জায়গায় ভারত বিমান হামলা চালায়। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, সন্ত্রাসীদের ৯়টি ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের ৩টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান। ভারতের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত ও ৪৬ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে ভারতশাসিত কাশ্মীরে পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত ও ৪০ জন আহত হয়েছেন। ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের সামরিক বা বেসামরিক স্থাপনায় হামলার কথা অস্বীকার করা হলেও একটি জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে পাকিস্তান দাবি করেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, ভারতের হামলার জবাবে নিজস্ব সময়, স্থান ও পদ্ধতিতে প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার তাদের আছে।

পাকিস্তানে ভারতের হামলা ও পাকিস্তানের পাল্টা হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহল গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও উভয় দেশকে কোনো ধরনের সামরিক উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়ে সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দেওয়ার কথা বলেছেন। উদ্বেগ জানিয়েছেন জাপান, চীন, ফ্রান্সসহ অনেক দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান। একই সঙ্গে তাঁরা সন্ত্রাসী হামলারও নিন্দা জানিয়েছেন।

পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর সংঘাতের প্রতিক্রিয়া ইতিমধ্যে এ অঞ্চলে পড়তে শুরু করেছে। এক দেশের আকাশসীমা ব্যবহার করে অপর দেশের বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রী ও পরিবহন খরচ বেড়েছে। দুই দেশের শেয়ারবাজারে ধস নেমেছে। ভারতীয় মুদ্রা রুপির দামও কমেছে। শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গত ৭৮ বছরে কয়েক দফা যুদ্ধ হলেও কেউ লাভবান হয়নি। বরং সমাধান খুঁজতে হয়েছে আলোচনার মাধ্যমে। ১৯৭২ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সই হওয়া সিমলা চুক্তিতে ভারত পাকিস্তান লাইন অব কন্ট্রোল বা এলওসি মেনে নেওয়া ও বলপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকার সুস্পষ্ট অঙ্গীকার ছিল। এ পটভূমিতে বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের সঙ্গে আমরাও একাত্ম হয়ে বলতে চাই, অবিলম্বে অভিযান বন্ধ হোক। পাকিস্তান ও ভারত সীমান্তে শান্তি বজায় থাকুক। সেই সঙ্গে কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলারও সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

উপমহাদেশের একটি দেশ হিসেবে বাংলাদেশও এ পরিস্থিতিতে নিরুদ্বিগ্ন থাকতে পারে না। দুই দেশের সঙ্গেই আমাদের ব্যবসা–বাণিজ্য আছে। এরই মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার দুই দেশকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। আমরা মনে করি, হামলা চালিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা কিংবা রণক্ষেত্রে শক্তি পরীক্ষা না করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা জরুরি। যুদ্ধ শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের জীবনেই বিপর্যয় ডেকে আনে। যুদ্ধের ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব শুধু দুই দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, গোটা বিশ্বেই তা ছড়িয়ে পড়ে। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ তার জীবন্ত দৃষ্টান্ত। আমরা আশা করি, ভারত–পাকিস্তানের নেতৃত্বের মধ্যে শুভবুদ্ধির উদয় হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ