কাশ্মীর ইস্যুতে দুই দেশের উত্তেজনার মধ্যে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাকিস্তানে কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় ভারতে ১৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

বিবিসি নিশ্চিত হয়ে জানিয়েছে, ভারত শাসিত কাশ্মীরে অন্তত ১৫ জন সাধারণ মানুষ মারা গেছেন এবং ৪৩ জন আহত হয়েছেন। দিল্লির বিমান হামলার জবাবে দেশ দুটির মধ্যে কার্যত সীমান্ত হিসেবে পরিচিত এলাকায় পাকিস্তান যখন ভারী গোলাবর্ষণ শুরু করে, তখন এই ঘটনা ঘটে ।

স্থানীয়রা বিবিসিকে জানিয়েছেন, গুলিবর্ষণ সবচেয়ে বেশি হয়েছে পুঞ্চ এবং মেন্ধার এলাকায়। বাড়ি এবং দোকানপাটসহ অনেক ভবন গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পুঞ্চের স্থানীয় সাংবাদিক জামরুদ মুঘল ফোনে বিবিসিকে বলেন, বুধবার রাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমরা বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি। মানুষ পুরো রাত ঘুমাতে পারেনি। সবাই ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় পালিয়ে গেছে। আমাদের স্থানীয় হাসপাতাল এখন আহত মানুষে ভরে গেছে।

অন্যদিকে মঙ্গলবার মধ্যরাতে চালানো ভারতের হামলায় পাকিস্তানে নিহত বেড়ে ২৬ জনে দাঁড়িয়েছে। ওই হামলায় ৪৬ জন আহত হয়েছে বলেও দাবি করেছে দেশটি।  

বুধবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন, ভারতের হামলায় ছয়টি এলাকায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৬ জনে দাঁড়িয়েছে এবং ৪৬ জন আহত হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী ‘গুমের’ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে হামলার ১৩ বছর পর মামলা

বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী ‘গুম’ হওয়ার পর সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় প্রতিবাদী মিছিলে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনার ১৩ বছর পর করা এ মামলায় ১০৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার আসামিদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে পুলিশ সদস্যরাও রয়েছেন। এতে অজ্ঞাতনামা আসামি আরও ২০০-৩০০ জন।

গত মঙ্গলবার মামলাটি করেন বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান (৪৭)। তবে বিষয়টি গতকাল বুধবার রাতে জানাজানি হয়। সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে এ মামলা করা হয়েছে বলে বাদীর আইনজীবী হাসান আহমেদ পাটোয়ারী প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ-সংক্রান্ত ঘটনায় আর কোনো মামলা হয়েছে কি না, তা জানতে চেয়ে আদালত আগামী সাত দিনের মধ্যে বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) একটি প্রতিবেদন আদালতে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীকে। এ ছাড়া বিশ্বনাথ পৌরসভার সাবেক মেয়র মুহিবুর রহমান, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়া, বিশ্বনাথ থানার তৎকালীন ওসি আবুল কালাম আজাদ ও পরিদর্শক (তদন্ত) চাঁন মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহ আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখকে আসামি করা হয়।

বাদী এজাহারে নিজেকে কৃষক এবং বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এজাহারে বলা হয়, ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ইলিয়াস আলীকে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুম করে। এর প্রতিবাদে ২৩ এপ্রিল বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেন। এ সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সশস্ত্র হামলা চালান। একই সময়ে পুলিশ সদস্যরাও মিছিলকারীদের ওপর গুলি ছোড়েন।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পলায়নের মাধ্যমে তাঁর সরকারের পতনে বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় দেশে আইনের শাসনের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস ফিরে এসেছে। এ অবস্থায় ন্যায়বিচারের সুযোগ উন্মোচিত হওয়ায় মামলাটি করা হয়।

২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার বনানী থেকে গাড়িচালক আনসার আলীসহ নিখোঁজ হন ইলিয়াস আলী। বিএনপির অভিযোগ, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তাঁকে ‘গুম’ করে। ওই সময় ইলিয়াস আলীর সন্ধানের দাবিতে টানা এক সপ্তাহ হরতাল পালিত হয় তাঁর উপজেলা সিলেটের বিশ্বনাথে। হরতাল চলাকালে পুলিশের সংঘর্ষে ছাত্রদল ও যুবদলের তিন কর্মী নিহত হন। এ ছাড়া বিএনপি ও ‘ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ’ একই দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।

সিলেট-২ (ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথ) আসনে টানা তিনবার নির্বাচন করেছিলেন ইলিয়াস। এই নেতা জয়ী হয়েছিলেন দুইবার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ