সরকারের নিরপেক্ষতার স্বার্থে বিতর্কিতদের অপসারণ করা উচিত
Published: 23rd, May 2025 GMT
বিএনপির পক্ষ থেকে দুজন উপদেষ্টা ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি এবং এনসিপির পক্ষ থেকে তিন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি রাজনীতিতে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অভিমত দিয়েছেন এই রাজনীতিক।
নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির প্রত্যক্ষ সদস্য না হলেও এটা ওপেন সিক্রেট যে সে রকম দুজন এখনো অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আছেন। তাঁরা সরকারকে প্রভাবিত করছেন—এ রকম কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ড বা সরকারের ঘাড়ে চাপিয়ে তাঁরা নিজেরা হয়তো একটা সুবিধা নিতে চান। সেটা তাঁরা জানেন, কী সেই সুবিধা। তাই আমরা উপদেষ্টা পরিষদের যাঁদের কর্মকাণ্ড সরকারকে বিতর্কিত করেছে বা নিরাপত্তা নষ্ট করছে, সেটা আমরা বর্ণনা করেছি। তাঁদের অপসারণ করাটা সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে উচিত।
এখন এনসিপি আরও কয়েকজনের (উপদেষ্টা) পদত্যাগ কেন চায়, কীভাবে চায়, সেটা তাদের বক্তব্যে তারা বলবে। আমরা এই সরকারের কোনো অংশ নই। এখন কেউ কিছু দাবি করল, তার পরিপ্রেক্ষিতে সে দাবির ন্যায্যতা-অন্যায্যতা নিয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তাদের দাবির ন্যায্যতা তাদেরই প্রমাণ করতে হবে।
এনসিপি রাজনৈতিক দল হিসেবে এখনো নিবন্ধিত নয়। নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে বিদ্যমান আইনে সার্চ কমিটি গঠন করে। সেই সার্চ কমিটিতে সবাইকে নাম প্রস্তাব করতে বলা হয়েছে।
আমরাও নাম দিয়েছি, তারাও (এনসিপি) দিয়েছে। অনেকটা আইন মেনে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। এ বিষয়ে এ পর্যন্ত কেউ কোনো প্রশ্ন তুলতে পারেনি। যে–ই নির্বাচন কমিশন ইশরাক হোসেনের বিষয়ে আদালতের রায় অনুসারে গেজেট নোটিফিকেশন করল, তখনই তারা কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা শুরু করল এবং ব্লেমটা আমাদের ওপর দিয়েছে, সেটি সঠিক নয়। আমরা মনে করি, রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা (এনসিপি) তাদের কৌশল এবং নীতি–আদর্শমতো তাদের কর্মসূচি করবে; কিন্তু একটা বিষয়ে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, ফ্যাসিবাদবিরোধী যে জাতীয় ঐক্য গঠিত হয়েছে, সেটাকে যেন আমরা বিনষ্ট না করি।
একই সঙ্গে জাতির বৃহত্তর স্বার্থে অতি দ্রুত যাতে একটা রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে, সেদিকে আমরা যাই। এ জন্যই আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বারবার আহ্বান করেছি, নির্বাচনের একটা রোডম্যাপ দিন। একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করতে ওনার এত দ্বিধাগ্রস্ত হতে হবে কেন?
সেনাবাহিনীর প্রধান ওনার একটি অফিশিয়াল সমাবেশে কিছু কথা বলেছেন। যেটা ওনার এখতিয়ারের মধ্যে আছে, আর্মি অ্যাক্ট অনুসারে সেনাপ্রধান ওনার অফিসারদের অ্যাড্রেস করতে পারেন যখন প্রয়োজন মনে করেন। তিনি যা বলেছেন, সেটা আমাদের বক্তব্যের সঙ্গে মিলে যায়। সেনাপ্রধান হয়তো ওনার পক্ষ থেকে বলেছেন যে ডিসেম্বরের ভেতরে নির্বাচন করা উচিত। এটা সঠিকভাবেই বলেছেন। আরও অন্যান্য বিষয় তিনি উল্লেখ করেছেন যেমন, করিডর—এটা জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ে তো উনি কথা বলতেই পারেন। উনাদের মতামতটা নেওয়া আগেই উচিত ছিল। এখন খলিলুর রহমান নামে যে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিয়োগ হয়েছেন, ওনার বিভিন্ন পদক্ষেপে, কর্মকাণ্ডে জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে পড়েছে, আমরা এর প্রতিবাদ করেছি। আমরা বলেছি, এ বিষয়টা একটা নির্বাচিত সরকারের, এটা কোনো অস্থায়ী, অন্তর্বর্তী সরকারের ইস্যু হতে পারে না। বন্দর নিয়ে বলেছি, এটাও জাতীয় স্বার্থের বিষয়। এখন এই বক্তব্যগুলো যদি সেনাপ্রধানের বক্তব্যের সঙ্গে মিলে যায়, সেটা মিলে যেতে পারে। এগুলো সবই জাতীয় স্বার্থ।
এখন সারা জাতির জন্য প্রয়োজন হচ্ছে দেশে যাতে স্থিতিশীল পরিস্থিতি বজায় থাকে। সেটার লক্ষ্যে যদি রোডম্যাপ প্রদান করেন, তাহলে রাষ্ট্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ড সুচারুরূপে পরিচালনা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগসহ সর্বক্ষেত্রে একটা আস্থা ফিরে আসবে।
আমরা চাই, অবিলম্বে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সুস্পষ্টভাবে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা রোডম্যাপ প্রদান করবেন, জাতিকে আশ্বস্ত করবেন এবং দেশে স্থিতিশীলতা আনবেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ
স্থায়ী কমিটির সদস্য, বিএনপি
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন উপদ ষ ট র জন ত ক সরক র র বল ছ ন এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
টিকটকে পরিচয়ের পর আপত্তিকর ছবি লেনদেন, বিয়ের দাবিতে কলেজছাত্রীর অনশন
নড়াইলের লোহাগড়ায় সৌদি আরব প্রবাসী আশিকুর রহমান সাব্বিরকে (৩০) বিয়ের দাবিতে তার বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন এক কলেজছাত্রী। শুক্রবার (২৩ মে) বেলা ১১টা থেকে উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের চাপুলিয়া গ্রামে অনশন শুরু করেন ওই কলেজছাত্রী।
ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, ‘‘প্রায় আট মাস আগে সাব্বিরের সঙ্গে টিকটকে পরিচয় হয়। পরে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরপর সাব্বিরের সঙ্গে মাঝে মধ্য ভিডিও কলে কথা হতো। একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভনে ‘আপত্তিকর ছবি’ চায়। সরল মনে ছবি দিলে সেটা দিয়েই ব্লাকমেইল করার চেষ্টা করে। পরে তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিই।’’
তিনি বলেন, ‘‘হঠাৎ একদিন সাব্বির সেই আপত্তিকর ছবি আমার ভাইয়ের কাছে পাঠিয়ে দেয়। এরপর আত্মহত্যার চেষ্টা করি। কিন্তু, পরিবারের লোকজনের বাধায় তা করতে পারিনি। শুক্রবার সাব্বিরের বাড়িতে এসেছি। এখন ওকে বিয়ে না করা ছাড়া উপায় নেই। মরলে এই বাড়িতেই মরবো।’’
আরো পড়ুন:
বিয়ে বাড়ির খাবার গেল এতিমখানায়
বিয়ের দাবিতে ৩ সন্তানের মায়ের অনশন, শেকলে বেঁধে নির্যাতন
অভিযুক্ত সাব্বিরের বাবা হায়দার আলী বলেন, ‘‘মেয়েটির সাথে আমার ছেলের কোনো সম্পর্ক নেই। সে যেসব ছবি দেখাচ্ছে, ওগুলো এডিট করা মনে হচ্ছে।
তবে সাব্বিরের মা বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘‘ওই মেয়ের সঙ্গে আমার ছেলের সম্পর্ক আছে ঠিকই। তবে, মেয়েটি আমার ছেলের কাছ থেকে এক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।’’
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘গ্রামবাসী ছেলের বাবাকে মেয়েটিকে মেনে নেওয়ার জন্য বলেছিল। তবে, তারা সেই কথার গুরুত্ব দেয়নি।’’
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/শরিফুল/রাজীব