‘পুরুষরা অসংবেদনশীল, ওদের বোঝার ক্ষমতা কম’
Published: 23rd, May 2025 GMT
ভারতীয় বাংলা টেলিভিশন সিরিয়ালের জনপ্রিয় খলনায়িকা মিশমি দাস। ছোট পর্দায় নায়ক-নায়িকার মাঝে ঢুকে ঝামেলা বাঁধান তিনি। বাস্তব জীবনেও তার প্রেম ভেঙে গেছে। ফলে প্রেম নিয়ে তার তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। এবার এই অভিনেত্রী জানালেন— পুরুষরা অসংবেদনশীল, ওদের বোঝার ক্ষমতা কম।
এ বিষয়ে মিশমি দাস বলেন, “ভগবান নারী আর পুরুষ বানিয়েছেন। এটা ভগবানের ভুল। পুরুষরা অসংবেদনশীল। ওদের বোঝার ক্ষমতা কম। এত বছর সিঙ্গেল থেকে অনুভব করেছি, ওদের বোঝার ক্ষমতা যখন কম, তখন ওদেরকে আমার চাই না।”
সংবেদনশীল কোনো পুরুষের জন্য ৭০ বছর বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজি মিশমি। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “সংবেদনশীল কাউকে ৬০ বছরে পেতে পারি বা ৭০ বছর বয়সেও পেতে পারি। সেই আশা আছে। কিন্তু এখন কাউকে খুঁজছি না। কাউকে জীবনে ঢুকতে দিতে চাই না। আমি হাল ছেড়ে দিয়েছি। সন্ন্যাসিনী হয়ে যাব বলে মনে হয়।”
আরো পড়ুন:
পোশাক নিয়ে তনুশ্রীকে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য
বিয়ে করতে যাচ্ছেন সিদ্দিকের প্রাক্তন স্ত্রী মারিয়া মিম
বিশাল ভনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন মিশমি। এ সম্পর্ক নিয়ে কখনো লুকোছাপা করেননি। কাজ থেকে বিরতি নিয়ে প্রিয় মানুষের সঙ্গে সময় কাটাতে গোয়ায় গিয়েছিলেন। মূলত, সেখানেই সম্পর্কের অবণতি ঘটে। সর্বশেষ যা বিচ্ছেদে রূপ নেয়। তবে কী কারণে এই সম্পর্ক ভেঙে যায় তা জানাতে নারাজ মিশমি। ২০২৩ সালে এ অভিনেত্রী বলেছিলেন, “অর্থ আর ভালোবাসার পেছনে ছুটে লাভ নেই।”
কেবল কথায় নয়, পোশাকেও সাহসী মিশমি দাস। এর আগে খোলামেলা পোশাকের পাশাপাশি বিকিনি পরেও আলোচনার জন্ম দিয়েছেন।
‘আমাদের এই পথ যদি না শেষ হয়’ ধারাবাহিকে অভিনয় করে দর্শক মনে আলাদা জায়গা করে নেন মিশমি। এই মুহূর্তে মিশমির ‘ফুলকি’ ধারাবাহিক চর্চায় রয়েছে। কিছুদিন আগে ৭০০ পর্ব পার করেছে এটি। এতে মিশমির চরিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক স ব দনশ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সরকার জাতীয় সক্ষমতা না বাড়িয়ে বিকল্প খুঁজছে: আনু মুহাম্মদ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেছেন, বর্তমান সরকারের দায়িত্ব বৈষম্যহীন বাংলাদেশের পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য জাতীয় সক্ষমতা বাড়ানো। কিন্তু সরকার জাতীয় সক্ষমতা না বাড়িয়ে বিকল্প খুঁজছে।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে গণতান্ত্রিক নাগরিক কমিটি আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে কেমন বাজেট চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সভায় আগামী অর্থবছরের বিভিন্ন খাতের বাজেট নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশেষজ্ঞ আলোচকরা।
আনু মুহাম্মদ বলেন, বিকল্প হিসেবে বিদেশি কোম্পানিকে চট্টগ্রাম বন্দর না দিয়ে দেশের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতাগুলো দূর করে জাতীয় সক্ষমতা বাড়ানো যেতো। তাহলে এর প্রভাব ভবিষ্যতেও থাকতো।
তিনি বলেন, এই সরকার অস্থায়ী সরকার। যার স্থায়ী কোনো ম্যান্ডেট নেই। এই সরকার দীর্ঘদিন থাকবে না। সুতরাং তার পক্ষে অনেক কিছুই করা সম্ভব নয়। কিন্তু কিছু করণীয় সরকার খুব সহজেই করতে পারে। যেমন শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি। এটা বহু বছরের দাবি। আমরা চাই, সামনের বাজেটে যথাযথ কাজটি সরকার গ্রহণ করুক এবং বৈষম্যহীন বাংলাদেশের যাত্রাটা অগ্রসর হোক।
অর্থবছর পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, আমাদের অর্থবছর ব্রিটিশ আমলের মতো জুলাই-জুন থাকার কারণে দুর্নীতির একটি সুযোগ তৈরি হয়, অর্থেরও অপচয় হয়। এটাকে বাংলা বছর অনুযায়ী ১৪ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল অথবা ইংরেজি বছর অনুযায়ী ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর করা যেতে পারে।
শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ অন্যান্য খাতে দুর্নীতি, অপচয়, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, অপ্রয়োজনীয় বরাদ্দ, অপ্রয়োজনীয় বিদেশ সফর এবং অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ বন্ধ করার তাগিদ দেন আনু তিনি।
সভায় কৃষি বাজেট নিয়ে আলোচনায় শিক্ষক ও গবেষক মাহা মির্জা বলেন, কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধিতে কৃষকের উৎপাদন খরচ ক্রমাগত বাড়ছে। ফসল উৎপাদন করে কৃষক টিকতে পারছে না। সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএডিসির বীজের সরবরাহ বাড়ানোসহ কৃষি খাতের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে পাঁচটি সুপারিশ করেন তিনি।
জ্বালানি বাজেট নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা ঋতু বলেন, ক্ষমতাচ্যুত সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বাজেটে আমদানিতে ব্যয় বেশি এবং দেশীয় গ্যাস উৎপাদনকে অবহেলা করেছে। বর্তমান সরকারকে দেশি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিকল্পনা করতে হবে।
চিকিৎসা বাজেট নিয়ে আলোচনায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যাপক ডা. হারুন উর রশীদ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সংকট ও উত্তরণের পথ প্রসঙ্গে চিকিৎসক ১৬টি করণীয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যকে জনগণের মৌলিক অধিকার হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
গত দেড় দশকের বাজেটের প্রবণতা নিয়ে লেখক ও গবেষক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ১৫ বছরে জনপ্রশাসন খাতের ব্যয় ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় আমলা ও সচিবদের বরাদ্দ ক্রমাগত বেড়েছে, যেটা কাম্য নয়।
বাজেটে বৈষম্য ও সামাজিক নিরাপত্তা নিয়ে লেখক এবং গবেষক কল্লোল মোস্তফা বলেন, এ দেশের কর ব্যবস্থা বৈষম্যমূলক। সরকার ধনীদের কাছ থেকে কর আদায়ে জোর না দিয়ে জোর দেয় দরিদ্র-নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কাছ থেকে পরোক্ষ কর আদায়ে। যা অর্থনৈতিক বৈষম্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
শিক্ষা বাজেট নিয়ে আলোচনায় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিক বলেন, বাজেটে মোট জিডিপির ছয় ভাগ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ রাখতে হবে। বাজেটে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা এবং শিক্ষকদের যাবতীয় সংকট দূর করতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিতে হবে।
সংস্কৃতি বাজেট নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাতা সজীব তানভীর বলেন, সংস্কৃতি খাতকে একটি অলাভজনক খাত হিসেবে চিন্তা করার মানসিকতা পরিহার করতে হবে। প্রশাসননির্ভর শিল্পচর্চা ব্যয় কমিয়ে সর্বসাধারণের কাছে সহজলভ্য করার প্রকল্পে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।
‘শ্রীলঙ্কা থেকে কী শিখলাম’ বিষয়ে আলোচনায় লেখক কৌশিক আহমেদ বলেন, শ্রীলঙ্কার এনপিপির মতো একটি নীতিনিষ্ঠ ও অংশগ্রহণমূলক জোট তৈরি করে মানুষের অংশগ্রহণে ইশতেহার তৈরি করতে হবে। যেখানে থাকবে অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার, ধর্মনিরপেক্ষতা, পরিবেশ সচেতনতা ও লিঙ্গ সমতার নিশ্চয়তা, সত্যিকার অন্তর্ভুক্তি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা।
জেন্ডার বাজেট নিয়ে অ্যাকটিভিস্ট মারজিয়া প্রভা বলেন, এখনও পর্যন্ত রাষ্ট্র নারীর জন্য বিশেষায়িত বাজেট বরাদ্দকে জেন্ডার বাজেট হিসেবে দেখাতে চাচ্ছে। সেক্ষেত্রে কোন মন্ত্রণালয় কীভাবে তার প্রকল্পে নারীকে সুবিধাভোগীর জায়গায় রাখছে তা স্পষ্ট করতে হবে।