ভারতীয় বাংলা টেলিভিশন সিরিয়ালের জনপ্রিয় খলনায়িকা মিশমি দাস। ছোট পর্দায় নায়ক-নায়িকার মাঝে ঢুকে ঝামেলা বাঁধান তিনি। বাস্তব জীবনেও তার প্রেম ভেঙে গেছে। ফলে প্রেম নিয়ে তার তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। এবার এই অভিনেত্রী জানালেন— পুরুষরা অসংবেদনশীল, ওদের বোঝার ক্ষমতা কম। 

এ বিষয়ে মিশমি দাস বলেন, “ভগবান নারী আর পুরুষ বানিয়েছেন। এটা ভগবানের ভুল। পুরুষরা অসংবেদনশীল। ওদের বোঝার ক্ষমতা কম। এত বছর সিঙ্গেল থেকে অনুভব করেছি, ওদের বোঝার ক্ষমতা যখন কম, তখন ওদেরকে আমার চাই না।”

সংবেদনশীল কোনো পুরুষের জন্য ৭০ বছর বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজি মিশমি। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “সংবেদনশীল কাউকে ৬০ বছরে পেতে পারি বা ৭০ বছর বয়সেও পেতে পারি। সেই আশা আছে। কিন্তু এখন কাউকে খুঁজছি না। কাউকে জীবনে ঢুকতে দিতে চাই না। আমি হাল ছেড়ে দিয়েছি। সন্ন্যাসিনী হয়ে যাব বলে মনে হয়।”

আরো পড়ুন:

পোশাক নিয়ে তনুশ্রীকে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য

বিয়ে করতে যাচ্ছেন সিদ্দিকের প্রাক্তন স্ত্রী মারিয়া মিম

বিশাল ভনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন মিশমি। এ সম্পর্ক নিয়ে কখনো লুকোছাপা করেননি। কাজ থেকে বিরতি নিয়ে প্রিয় মানুষের সঙ্গে সময় কাটাতে গোয়ায় গিয়েছিলেন। মূলত, সেখানেই সম্পর্কের অবণতি ঘটে। সর্বশেষ যা বিচ্ছেদে রূপ নেয়। তবে কী কারণে এই সম্পর্ক ভেঙে যায় তা জানাতে নারাজ মিশমি। ২০২৩ সালে এ অভিনেত্রী বলেছিলেন, “অর্থ আর ভালোবাসার পেছনে ছুটে লাভ নেই।”

কেবল কথায় নয়, পোশাকেও সাহসী মিশমি দাস। এর আগে খোলামেলা পোশাকের পাশাপাশি বিকিনি পরেও আলোচনার জন্ম দিয়েছেন।

‘আমাদের এই পথ যদি না শেষ হয়’ ধারাবাহিকে অভিনয় করে দর্শক মনে আলাদা জায়গা করে নেন মিশমি। এই মুহূর্তে মিশমির ‘ফুলকি’ ধারাবাহিক চর্চায় রয়েছে। কিছুদিন আগে ৭০০ পর্ব পার করেছে এটি। এতে মিশমির চরিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক স ব দনশ ল

এছাড়াও পড়ুন:

একাই মাসে শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তৈয়বুর

সুনামগঞ্জে জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে যাঁদের নাম প্রথমেই মনে আসে, তাঁদের একজন তৈয়বুর রহমান (২৬)। তিনি নিজে নিয়মিত রক্ত দেন, রক্ত সংগ্রহ করে দেন এবং মানুষকে স্বেচ্ছায় রক্তদানে উৎসাহিত করেন। রক্তের টানে মানুষের পাশে দাঁড়ানোতেই তাঁর আনন্দ।

একটি বেসরকারি ব্যাংকে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রক্তদানের এই মানবিক কাজকে নিজের করে নিয়েছেন তিনি। কয়েক বছর আগে একাই মানুষের জন্য রক্ত জোগাড় করতেন। এখন তিনি ব্লাড লিংক সুনামগঞ্জ নামের স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। ফলে কাজের পরিধি বেড়েছে কয়েক গুণ। মাসে একাই শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। সংগঠনে যুক্ত হওয়ার পর থেকে আড়াই হাজারের বেশি রোগীর জন্য রক্ত জোগাড় করে দিয়েছেন। তাঁর কাছে আছে প্রায় এক হাজার রক্তদাতার ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ ও যোগাযোগের তালিকা। সুনামগঞ্জে স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী ও সংগঠকেরাও তাঁকে সহযোগিতা করেন।

তৈয়বুর রহমানের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষ্মণশ্রী ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে। তিনি ইসলামী ব্যাংক সুনামগঞ্জ শাখায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। রক্তের প্রয়োজনে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ, পরিবহন বা দৌড়ঝাঁপ—সবকিছুর ব্যয়ই মেটান নিজের স্বল্প বেতন থেকে।

রক্তদানের শুরুর স্মৃতি বলতে গিয়ে তৈয়বুর রহমান জানান, ২০২০ সালে তিনি তখন নারায়ণগঞ্জে কর্মরত ছিলেন। এক সহকর্মীর অনুরোধে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর জন্য রক্ত দিতে ছুটে যান চাষাড়া এলাকায়। কিন্তু ওজন কম থাকায় রক্ত দিতে পারেননি। পরে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এক শিশুর জন্য আবার হাসপাতালে যান এবং এবার রক্ত দিতে সক্ষম হন। প্রথমে কিছুটা ভয় ভয় ছিল তাঁর। পরে এটা কেটে যায়।

সুনামগঞ্জে বদলি হয়ে ফিরে এসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে মানুষের জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে থাকেন বলে জানান তৈয়বুর রহমান। নিজের এলাকায় রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার আয়োজন ও সচেতনতা ক্যাম্পেইনও করেছেন। এখন পর্যন্ত তিনি ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন। অধিকাংশই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য। ঈদের দিনও রক্ত দিয়েছেন তিনি। জেলা সদর হাসপাতাল ও শহরের সব বেসরকারি ক্লিনিকেই তাঁর নম্বর আছে। কোনো রোগীর জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে সেখান থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় ভূমিকা হলো রোগীর জন্য উপযুক্ত রক্তদাতা খুঁজে বের করা।

তৈয়বুর রহমান বলেন, রক্তদানের পর কিছু পরিবার এখনো তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখে, খবর নেয়। আবার কেউ কেউ রক্ত সংগ্রহে একটু দেরি হলে মনঃক্ষুণ্ন হন। কেউ রক্ত পেয়ে ধন্যবাদ দেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেন না। তবু মন খারাপ করেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে তাহিরপুর উপজেলার এক প্রসূতি বোনকে রক্ত দিয়েছিলাম। এখনো ওই পরিবার যোগাযোগ রাখে। সময়-অসময় খোঁজ নেয়। এটা ভালো লাগে, এটা অন্য রকম রক্তের সম্পর্ক। এই কাজ করে আনন্দ পাই, তৃপ্তি পাই। যত দিন পারি, এই কাজ করে যাব।’

এখন পর্যন্ত ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন তৈয়বুর রহমান

সম্পর্কিত নিবন্ধ