সৌদি ছেড়ে কোথায় যাচ্ছেন রোনালদো? আলোচনায় নতুন গন্তব্য
Published: 20th, May 2025 GMT
এক সময় বলেছিলেন—সৌদি আরবে ক্যারিয়ারের শেষটা দেখতে চান। কিন্তু সময় বয়ে চলেছে অন্য সুরে। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে এখনো আগুন ঝরানো সেই রোনালদোই। কিন্তু দলীয় ব্যর্থতায় তার চোখে হতাশার ছায়া। ফুটবল বিশ্বের অন্যতম বড় নাম ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো কি তবে সৌদি ক্লাব আল নাসরের জার্সি খুলে ফেলতে চলেছেন?
চলমান মৌসুমে গোলের ফোয়ারা ছুটিয়েছেন পর্তুগিজ এই তারকা। সৌদি প্রো লিগে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সর্বোচ্চ গোলদাতা। ঘরে তুলেছেন গোল্ডেন বুট। অথচ ট্রফি শূন্যতায় বছর শেষ করেছেন রোনালদো। এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস লিগে থেমেছেন সেমিফাইনালে। লিগ টেবিলে দলটি চতুর্থস্থানে—তাও হাতে রয়েছে মাত্র দুটি ম্যাচ। এমন অবস্থায় ক্লাব বিশ্বকাপ বা এশিয়ার মঞ্চেও অনুপস্থিত থাকছে আল নাসর।
চুক্তির মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে আগামী ৩০ জুন। যদিও নতুন এক লোভনীয় চুক্তির প্রস্তাব রেখেছে ক্লাবটি। কিন্তু সাম্প্রতিক তথ্য বলছে—সেই আলোচনা আপাতত বন্ধ। এতে করেই গুঞ্জন জোরালো হচ্ছে যে, রোনালদো নতুন এক ঠিকানার খোঁজে আছেন।
আরো পড়ুন:
আনচেলত্তির স্বপ্নদল: ঘোষণার আগেই ১২ তারকার নাম ফাঁস
ফাইনালে রোনালদোর ছেলের জোড়া গোলে পর্তুগাল চ্যাম্পিয়ন
এবার আলোচনায় উঠে এসেছে এক চমকপ্রদ সম্ভাবনা, দক্ষিণ আমেরিকা! স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ জানিয়েছে, ব্রাজিলের একটি শীর্ষ ক্লাব রোনালদোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তাদের লক্ষ্য আসন্ন ক্লাব বিশ্বকাপকে সামনে রেখে দলে তারকা একজন স্ট্রাইকার যুক্ত করা। বোতাফাগো, ফ্লুমিনেন্স, পালমেইরাস কিংবা ফ্লামেঙ্গোর মধ্যে কোনো একটি ক্লাব রোনালদোকে প্রস্তাব পাঠিয়েছে বলে জোর আলোচনা চলছে।
তবে চুক্তির সময় ও ক্লাব বিশ্বকাপের সূচি বিষয়ক জটিলতা এখনো বড় প্রশ্নচিহ্ন হয়ে রয়েছে। জুনের ৩০ তারিখে যদি রোনালদো আল নাসর ছেড়েও দেন, ততক্ষণে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব শেষ হয়ে যাবে ২৭ জুনে। ফলে তার অংশগ্রহণ সম্ভব হবে কেবল যদি প্রস্তাব দেওয়া ক্লাবটি দ্বিতীয় রাউন্ডে পৌঁছে।
অন্যদিকে আরেকটি বড় বাস্তবতা হলো রোনালদোর বিশাল পারিশ্রমিক। ব্রাজিলিয়ান ক্লাবগুলো তাকে দলে নিতে চাইলে অর্থনৈতিক ছাড় দিতে হতে পারে রোনালদোকেই।
এই গুঞ্জন প্রসঙ্গে বোতাফাগো কোচ রেনাতো পাইভা বলেন, “বড়দিন বছরের শেষে আসে। কিন্তু যদি রোনালদো আসে, তাকে কেউ না বলবে না। সে এখনো বিশ্বমানের স্ট্রাইকার, যেকোনো আক্রমণভিত্তিক দলের জন্য পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।”
সব মিলিয়ে, ৪০ ছুঁইছুঁই বয়সেও রোনালদোর ভবিষ্যৎ ঘিরে উত্তেজনার পারদ চড়ছে। সৌদির মরুভূমি ছেড়ে কি তিনি ব্রাজিলের সবুজ মাঠে নামবেন, নাকি থেকে যাবেন আরও এক মৌসুম আল নাসরের হয়ে? উত্তর এখন সময়ই দেবে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ব শ বক প
এছাড়াও পড়ুন:
নুয়ে পড়া ধান নিয়ে বিপদে কৃষক
জ্যৈষ্ঠ মাসে ধান পাকতে শুরু করেছে। কোথাও কোথাও পাকা ধান কাটা শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় কৃষকদের মুখে হাসি থাকার কথা। এর বদলে শ্রমে-ঘামে ফলানো সোনার ধান নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তারা। টানা বৃষ্টির কারণে সিরাজগঞ্জের তাড়াশের চলনবিল অঞ্চলের বেশির ভাগ জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। নিমজ্জিত হয়েছে বেশ কিছু ক্ষেত। তিন-চার দিনের মধ্যে না কাটলে এ ধান থেকে কিছুই পাওয়া যাবে না বলছেন কৃষকরা।
জানা গেছে, ১৫ থেকে ২০ দিন আগেও চলনবিলে প্রতি বিঘা ধান কাটতে চার থেকে পাঁচজন শ্রমিক হলেই চলত। শ্রমিকরা দূরত্বভেদে প্রতি বিঘায় (মণপ্রতি ৫ থেকে ৮ কেজি ধান) ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছেন। বৃষ্টিতে ধান নুয়ে পড়ায় ১০ জন শ্রমিক মাঠে কাজ করছেন। তাদের পারিশ্রমিকও দিতে হচ্ছে দ্বিগুণ। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
তাড়াশের কুন্দইল গ্রামের কৃষক আবু হানিফ ১৬ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে পাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন। এখন বিপত্তি বেধেছে বৃষ্টিতে। গত বুধবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত দিনে ও রাতে থেমে থেমে ঝড়, বাতাস, বৃষ্টিতে পাকা ও আধপাকা ধান নুয়ে পড়েছে। জমিতে হারভেস্টার ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে কৃষি শ্রমিকের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। সুযোগ পেয়ে শ্রমিকরাও চড়া মজুরি চাইছেন।
আবু হানিফ বলেন, নুয়ে পড়া ধান কাটতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি শ্রমিক প্রয়োজন হয়। কষ্টও অনেক। এক বিঘা জমির ধান কাটতে শ্রমিকরা ১১-১২ কেজি ধান পারিশ্রমিক চাচ্ছেন। অনেক দরদাম করে ১১ কেজিতে রাজি করিয়েছি। ১৬ বিঘা জমির ধান কাটতে শ্রমিককে ৪ বিঘার ধান দিতে হচ্ছে।
একই অবস্থা মাকড়শোন এলাকার কৃষক আলেপ আলীর। প্রতি মণে কৃষককে ১০ কেজি করে ধান দিতে হচ্ছে তাঁকে। শুধু আবু হানিফ বা আলেপ আলীর না, চলনবিল এলাকার বেশির ভাগ কৃষককে অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দিয়ে ধান কাটাতে হচ্ছে।
রুহাই এলাকার কৃষক আয়নাল হোসেন জানান, সরিষা তোলার পর বোরো আবাদ করেছেন। নাবী জাতের ধান হওয়ায় ধান পাকতেও দেরি হচ্ছে। এর মধ্যে ঝড়, বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। এতে জমির ধান নুয়ে পড়ছে। জমিতে বৃষ্টির পানি জমে যাচ্ছে। আছে কাদাও। এ সুযোগে ধান কাটা শ্রমিকরা পারিশ্রমিক বাড়িয়ে দিয়েছেন। তারা দূরত্বভেদে প্রতি মণে ৭ থেকে ১১-১২ কেজির কমে ধান কাটতে চাচ্ছেন না।
বিপদ দেখে শ্রমিকরা মোট উৎপাদনের কমপক্ষে চার ভাগের এক ভাগ ধান নিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান ধাপতেঁতুলিয়া এলাকার কৃষক ফরহাদ আলী। আক্ষেপ করে বলেন, ১২ বিঘা জমির আংশিক ধান নুয়ে পড়েছে। এসব ধান কাটতে ৬০ থেকে ৬৫ মণ ধান শ্রমিকদের পারিশ্রমিক বাবদ দিতে হবে। তিন-চার সপ্তাহ ঝড়-বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পারিশ্রমিক আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বর্তমানে ধানের বাজারদর ভালো। তাই শ্রমিকের পারিশ্রমিক বাবদ একটু বেশি খরচ হলেও কৃষক পুষিয়ে নিতে পারবেন।