আইপিএল: প্লে-অফের লড়াইয়ে কারা এগিয়ে, কারা বাদ
Published: 7th, May 2025 GMT
মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের টানা ছয় ম্যাচের জয়রথ কাল থামিয়ে দিয়েছে গুজরাট টাইটানস। ওয়াংখেড়েতে বৃষ্টিবিঘ্নিত এক রোমাঞ্চকর ম্যাচে শেষ বলে ৩ উইকেটের জয় পায় গুজরাট। এই জয়ে প্লে-অফে পৌঁছানোর পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে শুবমান গিলের দল। তবে আইপিএল ২০২৫-এর লিগ পর্বে এখনো ১৪টি ম্যাচ বাকি, ফলে কোনো দলই এখনো নিশ্চিতভাবে প্লে-অফে পৌঁছায়নি। তবে এরই মধ্যে তিনটি দলের যে আর প্লে-অফে খেলার সুযোগ হচ্ছে না, সেটাও নিশ্চিত হয়ে গেছে। লিগ পর্ব থেকেই বাদ পড়ছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, রাজস্থান রয়্যালস ও চেন্নাই সুপার কিংস।
বাকি যে সাতটি দলের সুযোগ আছে সেরা চারে থেকে প্লে-অফ খেলার, তাদের মধ্যে কারা এগিয়ে, কারা পিছিয়ে—চলুন দেখা যাক।
পয়েন্ট তালিকাগুজরাট টাইটানসবাকি ম্যাচ: দিল্লি (অ্যাওয়ে), লক্ষ্ণৌ ও চেন্নাই (ঘরের মাঠে)
তাদের পয়েন্ট ১৬ এবং হাতে ৩টি ম্যাচ। এর মধ্যে দুটি ম্যাচ ঘরের মাঠে, ফর্মে না থাকা লক্ষ্ণৌ ও চেন্নাইয়ের বিপক্ষে। তিনটি ম্যাচই জিতলে গুজরাট নিশ্চিতভাবেই প্রথম দুইয়ে থাকবে। দুটি জিতলেও তাদের সুযোগ থাকবে, যদি পাঞ্জাব কিংস বা রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু একটি ম্যাচ হারে এবং তাদের নেট রান রেট গুজরাটের চেয়ে কম থাকে। একটি জয়ও গুজরাটের প্লে–অফ নিশ্চিত করতে পারে, তবে প্রথম দুইয়ে থাকার জন্য তাদের অন্য দলের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। এমনকি আর একটি ম্যাচ না জিতেও গুজরাট কোয়ালিফাই করতে পারে, সে ক্ষেত্রে অন্যান্য দলের ফল তাদের পক্ষে আসতে হবে। কারণ, এখনো ৫টি দল ১৬ পয়েন্টের বেশি পেতে পারে।
আরও পড়ুনভারতের হামলা: পাকিস্তানে থাকা রিশাদ–নাহিদকে নিয়ে চিন্তায় বিসিবি৩ ঘণ্টা আগেরয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুবাকি ম্যাচ: হায়দরাবাদ (ঘরে), রাজস্থান রয়্যালস (অ্যাওয়ে), কলকাতা (ঘরে)
বেঙ্গালুরুর প্লে-অফ নিশ্চিত করতে মাত্র একটি জয় দরকার। তবে, এই ১৬ পয়েন্টে থেকেই বেঙ্গালুরু প্লে-অফে উঠতে পারে, তখন অবশ্য অন্য ম্যাচগুলোর ফল তাদের পক্ষে যেতে হবে। আবার দুই ম্যাচ জিতে যদি ২০ পয়েন্টে পৌঁছায় বেঙ্গালুরু, তবু শীর্ষ দুইয়ে জায়গা নিশ্চিত হবে না, কারণ আরও ৩টি দল এখনো ২০ পয়েন্ট বা এর বেশি পেতে পারে।
বাকি ম্যাচ: দিল্লি (ঘরে), মুম্বাই (ঘরে), রাজস্থান (অ্যাওয়ে)
প্লে-অফ নিশ্চিত করতে পাঞ্জাব কিংসকে অন্তত দুটি ম্যাচ জিততেই হবে। এমনকি ১৫ পয়েন্টেও তারা উঠে যেতে পারে, যদি অন্য অনেক ম্যাচের ফল তাদের পক্ষে যায় এবং রান রেট ভালো থাকে। তবে বাকি তিনটির মধ্যে দুটি ম্যাচই শীর্ষ পাঁচের মধ্যে থাকা দলের বিপক্ষে।
আরও পড়ুনইন্টার পরীক্ষায় যেভাবে ফেল করল বার্সা৫ ঘণ্টা আগেমুম্বাই ইন্ডিয়ানসবাকি ম্যাচ: পাঞ্জাব (অ্যাওয়ে), দিল্লি (ঘরে)
ঘরের মাঠে গুজরাটের কাছে হেরে তাদের জয়রথ থেমেছে এবং প্রথম দুইয়ে থাকার স্বপ্নে বড় ধাক্কা লেগেছে। শুরুতে প্রথম পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটি হারায় মুম্বাইকে শেষ দিকে অনেক কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। বাকি দুটি ম্যাচ জিতলে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে তাদের প্লে–অফের টিকিট নিশ্চিত হবে, তবে শীর্ষ দুইয়ে থাকা নিশ্চিত হবে না। কারণ, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, গুজরাট টাইটানস ও পাঞ্জাব কিংস ১৮ পয়েন্টের বেশি পেতে পারে। একটি জয়ও তাদের প্লে–অফে নিয়ে যেতে পারে, তবে সে ক্ষেত্রে অন্যান্য দলের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে।
বাকি ম্যাচ: পাঞ্জাব (অ্যাওয়ে), গুজরাট (ঘরে), মুম্বাই (অ্যাওয়ে)
হায়দরাবাদের বিপক্ষে বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত ম্যাচ থেকে একটি লাকি পয়েন্ট পেয়ে দুই ম্যাচ হারের পর একটু স্বস্তি পেয়েছে দিল্লি। তবে প্লে-অফে উঠতে হলে এখনো কঠিন পথ বাকি। তিনটি ম্যাচেই জিতলে দিল্লির প্লে-অফে ওঠা নিশ্চিত হবে। যদিও শেষ পাঁচ ম্যাচে তাদের জয় মাত্র একটিতে।
বাকি ম্যাচ: বেঙ্গালুরু (ঘরে), গুজরাট (অ্যাওয়ে), হায়দরাবাদ (ঘরে)
টানা তিন ম্যাচে হার, সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই হার। সময়টা ভালো যাচ্ছে না লক্ষ্ণৌর। শেষ তিনটি ম্যাচ তাদের জিততেই হবে। যদি আর একটি ম্যাচও হারে, তাহলে প্লে-অফের দৌড় থেকে ছিটকে যাবে। তার ওপর, তাদের নেট রান রেট (-০.
বাকি ম্যাচ: চেন্নাই (ঘরে), হায়দরাবাদ ও বেঙ্গালুরু (অ্যাওয়ে)
দিল্লি ক্যাপিটালস ও রাজস্থান রয়্যালসকে হারিয়ে কলকাতা এই মৌসুমে প্রথমবার টানা দুটি ম্যাচ জিতেছে। তারা এই ছন্দ ধরে রাখতে চাইবে। তাদের সর্বোচ্চ পয়েন্ট হতে পারে ১৭, যা হয়তো প্লে–অফের জন্য যথেষ্ট না–ও হতে পারে, কারণ, চারটি দল এর বেশি পয়েন্ট পেতে পারে। তবে অন্যান্য দলের ফল তাদের পক্ষে গেলে ১৫ পয়েন্টেও তারা প্লে-অফে টিকে যেতে করতে পারে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন শ চ ত হব হ য দর ব দ লক ষ ণ ল র ফল প রথম র একট
এছাড়াও পড়ুন:
গরমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপদাহে চারদিক ওষ্ঠাগত। মাঝেমধ্যে কালবৈশাখীর হাওয়া আর বৃষ্টির ঝাপটায় কিছুটা স্বস্তি মিললেও সময়টা গরমের। গরমের এই আবহাওয়ায় দেখা দেয় বেশ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা, রোগ-জরা।
গরমের কারণে এমনিতে এই সময়ে পরিশ্রমের কাজ করতে ইচ্ছে করে না। গরম বেশি পড়লে ডায়াবেটিক রোগীরা নিয়মিত হাঁটতে চান না বা হাঁটতে পারেন না। আবার অতিরিক্ত গরমের ফলে অনেকে বিভিন্ন ধরনের জুস, শরবত খেয়ে থাকেন। ফলে ডায়াবেটিস হয়ে পড়ে অনিয়ন্ত্রিত। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে যে কোনো সাধারণ অসুখে রোগের তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে।
এই গরমে ঘামের কারণে পানির সঙ্গে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণ বেরিয়ে গিয়ে দেখা দেয় পানিস্বল্পতা। যে সব ডায়াবেটিক রোগীর কিডনি জটিলতা, উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগ রয়েছে বা ডায়ইউরেটিক্স জাতীয় ওষুধ সেবন করেন তাদের ক্ষেত্রে এই পানিস্বল্পতা ভয়ংকর হতে পারে। সমস্যা বেশি হলে রক্তচাপ কমে যায়, দুর্বল লাগে, মাথা ঝিমঝিম করে– এমনকি অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। গরমের শুরুতে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। সাধারণত দূষিত পানি বা খোলা-বাসি খাবার থেকে ডায়রিয়া হয়ে থাকে। অতিরিক্ত পাতলা পায়খানা হলে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পানি ও ইলেকট্রোলাইট বের হয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে, কিডনি বৈকল্য দেখা দিতে পারে, এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকে। এ অবস্থায় রোগীকে খাবার স্যালাইন দিতে হবে। তবে বারবার বমি হলে, প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে, মুখ- জিহবা শুকিয়ে গেলে দেরি না করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। এছাড়া পানিবাহিত অন্যান্য রোগ যেমন টাইফয়েড, হেপাটাইটিস এগুলো হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
ঋতু পরিবর্তনের কারণে অনেকে জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হযন। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে সাধারণ এই সর্দি-জ্বর থেকে শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ, কানে ইনফেকশন, টনসিলাইটিস ও নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে। চিকিৎসা না হলে যা অনেক সময় মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
প্রখর রোদে ত্বকে ফোসকা পড়া, ত্বক বিবর্ণ হয়ে যাওয়া, ফাংগাসের সংক্রমণ, ঘামাচি ও চুলকানি দেখা দিতে পারে। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে এগুলো সংক্রমিত হয়ে ভোগান্তি বাড়াতে পারে।
ডায়াবেটিক রোগীর ওপর অতিরিক্ত তাপমাত্রার প্রভাব
l অতিরিক্ত গরমে ঘামের সঙ্গে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যাওয়ার ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে ঝুঁকি বাড়ায়।
l ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রণ থাকলে রক্তের ঘনত্ব এমনিতেই বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতা হলে এই ঘনত্ব আরও বাড়ে। এর ফলে হাইপার অসমোলার কোমার মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
lঅতিরিক্ত গরমে ডায়াবেটিসের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বাড়ে-কমে। রক্তে শর্করা কমানোর ওষুধ সেবনে গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
সমস্যা এড়াতে করণীয়
lপর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে ফলের রস, আখের রস, চিনি-গুড়ের তৈরি শরবত, কোমল পানীয় খাওয়া বাদ দিতে হবে।
l ডায়রিয়াসহ যেকোনো পানিশূন্যতায় পরিমাণ মতো স্যালাইন খেতে হবে।
l সন্ধ্যার পরে অথবা খুব ভোরে হাঁটার অভ্যাস করতে হবে।
lঅতিরিক্ত গরমে কায়িক পরিশ্রম থেকে যতটা সম্ভব বিরত থাকতে হবে।
lবাইরে বের হলে প্রয়োজনে টুপি বা ছাতা ব্যবহার করতে হবে।
l হালকা, ঢিলেঢালা, সুতির পোশাক পরতে হবে।
l নিয়মিত গোসল করতে হবে।
l চা, কফি, গুরুপাক খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
lনিয়মিত রক্তের শর্করা পরিমাপ করে ওষুধ বা ইনসুলিনের মাত্রা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হবে। v
[ডায়াবেটিস, থাইরয়েড ও হরমোন বিশেষজ্ঞ
কনসালট্যান্ট, ইমপালস হাসপাতাল, তেজগাঁও, ঢাকা।]