সারাদিনের কাজের চাপ,ব্যস্ততার কারণে শরীর ক্লান্ত লাগাটাই স্বাভাবিক। নিজেকে সুস্থ রাখতে তাই ব্যায়ামের পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসের দিকে নজর দেওয়া জরুরি। সেক্ষেত্রে খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন কিছু খাবার। এসব খাবার শরীরের ক্লান্তি দূর করে শক্তি জোগায়।যেমন-
গ্রিন টি : সারাদিন শক্তি পেতে, ক্লান্তি ভাব দূর করতে, একবার অন্তত গ্রিন টি খেতে পারেন। সকালে কফির বদলে এই চা রাখেন খাদ্যতালিকায়।
ওটস : কার্বোহাইড্রেট এবং ভিটামিন বি- এর পরিমাণ ওটসের মধ্যে প্রচুর। এই দুই উপকরণ শরীরে ভরপুর এনার্জির জোগান দেয়। সকালের নাশতায় তাই ওটস রাখা জরুরি।
ফাইবার সমৃদ্ধ ওটস অনেকক্ষণ পেটও ভরিয়ে রাখে। এতে বারবার খাওয়ার প্রবণতা কমে।
পালংশাক: এই শাকে থাকা আয়রন এবং ম্যাগনেসিয়াম শরীরের ক্লান্তি দূর করবে সহজেই। তাই খাদ্যতাীরকায় মাঝে মাঝে পালংশাকের রেসিপি রাখুন।তবে প্রতিদিন খেলে পেটে সমস্যা হতে পারে। এজন্য মাঝেমধ্যে খান। তবে কাঁচা না খাওয়াই ভালো।
কাঠবাদাম : সকালে খালি পেটে রোজ পানিতে ভেজানো কাঠবাদাম খান। তাহলে সারাদিনের শক্তি পাবেন। তবে প্রতিদিন খেলে তিন-চারটার বেশি খাওয়া ঠিক নয়। যেদিন খাবেন, তার আগের রাতে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন কাঠবাদাম। সকালে খোসা ছাড়িয়ে খেয়ে নিন।
কলা : প্রাকৃতিক গ্লুকোজ এবং পটাশিয়াম সমৃদ্ধ কলা খেলে তাৎক্ষণিক শক্তি মেলে। সকালের নাশতায় একটা কলা রাখুন। এতে পেট ভরবে, পুষ্টিও হবে। অন্যদিকে শরীরও শক্তি পাবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গবাদি পশুর খাদ্য সংগ্রহে হাওরপারে ব্যস্ত কৃষক
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো ধরনের দুর্যোগ-দুর্বিপাক ছাড়াই চলতি বোরো মৌসুমের ফসল ঘরে তুলতে পেরেছেন তাহিরপুরের কৃষকরা। এবার ভরা বর্ষার আগে গবাদি পশুর খাদ্য জোগানে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক বৈরিতা এবং ভূমি দখলের জেরে তাহিরপুরসহ সুনামগঞ্জ জেলার অনেক এলাকাতে কমে গেছে গোচারণভূমি। কান্দা নষ্ট হওয়ায় গবাদি পশুর খাদ্যের প্রাকৃতিক উৎসও নষ্ট হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় প্রতি মৌসুমে বোরো আবাদ ও ধান সংগ্রহের ব্যস্ততা শেষে গোখাদ্যের মজুত নিশ্চিত করতে খড়ের জোগান দেন স্থানীয় কৃষকরা। এর ওপরে নির্ভর করে বছরজুড়ে তাদের গবাদি পশু পালনের সাবলম্বিতা। ভরা বর্ষার আগে তাই পাকা ধান গাছ থেকে পাওয়া খড়ের মজুত নিশ্চিত করেন কৃষক।
বর্ষাকালে তাহিরপুর উপজেলাতে পানিতে ভরপুর থাকে। চারদিকে পানি থাকায় এ অঞ্চলের কোথাও গবাদি পশু চরানোর জন্য ভূমি পাওয়া যায় না। এমন সময় গবাদি পশুর যেন খাদ্য সংকট না হয় সেজন্য খড়ের মজুত জোগান দিতে হয় প্রান্তিক কৃষককে; যার কারণে বাড়িতে রেখে পশু পালন সহজ হয় তাদের জন্য।
গোখাদ্য হিসেবে পরিচিত কাটা ধান গাছের শুকনো খড় রোদে শুকিয়ে হাওর থেকে বাড়িতে এনে স্তূপ দিয়ে রাখা হয়। এ মৌসুমেও গোখাদ্যের সংকট মোকাবিলায় খড় সংগ্রহে ব্যস্ত হাওরাঞ্চলের কৃষক ও গেরস্ত।
হাওরে খড় সংগ্রহে ব্যস্ত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জান যায়, অনেক বছর পর হাওরপারে এমন বৈশাখ পেয়েছেন তারা। জমির ধান দুর্যোগে নষ্ট হয়নি। মাঝে পোকার আক্রমণ হলেও সময় মতো বৃষ্টি হওয়ায় বিশেষ ক্ষতি হয়নি। ফসলের বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ঝড়-বন্যার শঙ্কা কাটিয়ে গোলা ভরেছেন তারা। এখন ভরা বর্ষায় গবাদি পশু পালনের সবচেয়ে জরুরি কর্তব্য গোখাদ্যের মজুত নিশ্চিত করছেন।
শনির হাওরপার ভাটি তাহিরপুর গ্রামের পঙ্কজ রায় বলেন, তাঁর ৫টি গরু আছে। জমি চাষাবাদ করেন সোয়া দুই কিয়ার (৩০ শতকে এক কিয়ার)। এ জমি থেকে এবার ফসল পেয়েছেন প্রত্যাশিত। সেই সঙ্গে যে পরিমাণ খড় জোগান দিতে পেরেছেন তা এ পুরো বর্ষা নিশ্চিন্তে কেটে যাবে।
মাটিয়ান হাওরপারের আনন্দনগর গ্রামের কৃষক ওয়াসিম আহমদ জানান, বিগত বছরগুলোতে হাওরডুবি ও পরবর্তী সময়ে ভয়াবহ বন্যার কারণে গোখাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছিল। তখন তিনি ৭টি গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন। দেড় হাজার টাকা মণ খড় কিনতে বাধ্য হয়েছিলেন। এ বছর তাই পর্যাপ্ত মজুত নিশ্চিত করতে চান।
নোয়াল হাওরের কৃষক হুকুমপুর গ্রামের আবুল কালাম বলেন, এ বছর হাওরে বোর ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। ধান শুকিয়ে গোলায় তোলা শেষ। এখন গরুর খাবার জোগান দিতে ব্যস্ত।