চবিতে ছাত্রলীগ কর্মীকে ‘সহায়তা’ নিয়ে যা জানা যাচ্ছে
Published: 22nd, May 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের এক কর্মীকে ক্লাস করতে সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ আরিফের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানতে পেরে ছাত্রদলের আরেক পক্ষের কর্মীরা ওই ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক করে চাঁদা দাবি করেন। পরে তাকে মারধর করে প্রক্টরিয়াল বডির নিকট সোর্পদ করেন তারা।
বুধবার (২১ মে) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রলীগের ওই কর্মীর নাম ইমন চন্দ্র বর্মণ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা চালানোর অভিযোগে তাকে চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আরো পড়ুন:
ইবিতে পরীক্ষা দিতে এসে ছাত্রলীগ নেতা আটক
পাবিপ্রবিতে নিষিদ্ধ সংগঠনের ২ কর্মীকে পুলিশে সোপর্দ
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ আরিফ ইতিহাস বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিনের অনুসারী।
আরিফকে ম্যানেজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করতে আসেন ছাত্রলীগ কর্মী ইমন- এমন অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ক্লাস করে ক্যাম্পাস থেকে ফেরার পথে রেলওয়ে স্টেশনে ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুনুর রশীদ মামুনের কর্মীরা ইমনকে আটক করেন। এরপর সেখান থেকে বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় নিয়ে চড় থাপ্পড় ও জিজ্ঞাসাবাদ করার পর ইমনকে প্রক্টর কার্যালয়ে নিয়ে আসেন তারা। সেখানে বহিষ্কারের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তিনি ক্যাম্পাসে আসবেন না মর্মে মুচলেকা দেন। এরপর তাকে ছেড়ে দেয় প্রক্টরিয়াল বডি।
জিজ্ঞাসাবাদে ছাত্রলীগ কর্মী ইমন জানান, ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ আরিফকে ম্যানেজ করে তিনি ক্যাম্পাসে এসেছিলেন। ধরা পড়ার পর ইমন আরিফকে ফোন দেন। ফোনকলে ছাত্রদল নেতা আরিফ ছাত্রলীগ কর্মী ইমনকে বলেন, ‘যারা আটক করেছে, ফোনটা তাদের দাও।’ তখন ইমন বলেন, ‘ভাই ওরা কথা বলবে না।’ এটা শুনে আরিফ বলেন, ‘ওরা কারা?’ জবাবে ইমন বলেন, ‘আমি এদের চিনি না।’ তখন আরিফ বলেন, ‘যারা ধরেছে তাদের কী লাগবে, আমার সাথে কথা বলতে বল। আমি দিব, ডিল করব।’
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ আরিফ বলেন, “ইমন আমার বিভাগের জুনিয়র শিক্ষার্থী। তার কয়েকজন বন্ধু আমাকে কল দিয়ে বলল, ইমনকে নাকি কয়েকজন ছেলে কিডন্যাপ করেছে। ইমনের বন্ধুরা আমাকে বিষয়টি দেখতে বলে। পরে আমি ইমনকে কল দিলে সে জানায়, কিডন্যাপকারীরা নাকি তার থেকে চাঁদার দাবি করেছে। কিডন্যাপকারীরা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মামুনের অনুসারী। আমি ইমনকে বলি, তারা কী চাচ্ছে আমাকে বল, আমি ব্যবস্থা করে দেব। পরে তারা ইমনকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসে। সেখানে দেখেছি, তারা তাকে প্রচণ্ড মারধর করেছে।”
তিনি বলেন, “পরে জানতে পেরেছি, সে ছাত্রলীগের ছিল এবং ছাত্র আন্দোলনে হামলা চালানোর অভিযোগে তাকে ক্যাম্পাস থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে সে তো প্রতিদিন ক্লাস করছে। তাহলে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাকে কিছু বলছে না কেন? যদি তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ থাকত, তাহলে তো তার বন্ধুরা তাকে বয়কট করত।”
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রদল নেতা মামুনুর রশিদ বলেন, “বহিষ্কারাদেশ স্পষ্ট লেখা রয়েছে, বহিষ্কৃতদের কেউ ক্যাম্পাসে আসতে পারবেন না। এরপরও নিষিদ্ধঘোষিত দলের এক কর্মী ক্যাম্পাসে এসেছেন। আমাদের কাছে তথ্য ছিল, ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার জন্য নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীরা একত্র হচ্ছেন এবং নাশকতার পরিকল্পনা করছেন।”
তবে ছাত্রদল নেতাকে ম্যানেজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আসার বিষয়টি তিনি কৌশলে এডিয়ে যান।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন বলেন, “ইমন যদি বহিষ্কৃত হয়ে থাকে, তাহলে সে কীভাবে ক্লাস করছে, এটা একটা প্রশ্ন থাকে। আর চাঁদা দাবির সত্যতা সম্পর্কে আমার জানা নেই। ছাত্রদল তো এমন কোনকিছু প্রশ্রয় দেয় না। এরপরেও যদি সে অপরাধী হয়ে থাকে, প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নিবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক মো.
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত রদল ন ত ছ ত রদল র স ক ল স কর ন বল ন কর ম ক কর ম র
এছাড়াও পড়ুন:
যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা
রাজধানীতে হাত ও পা বেঁধে রড দিয়ে পিটিয়ে আনোয়ার হোসেন (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে যাত্রাবাড়ীর কাউন্সিল শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির একটি কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বিদ্যুৎমিস্ত্রি ছিলেন আনোয়ার হোসেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল পুরান ঢাকার সদরঘাটে। পারিবারিক সূত্র জানায়, আনোয়ার হোসেন স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে রাজধানীর মাতুয়াইলের মৃধাবাড়ি এলাকায় থাকতেন।
আনোয়ারের ভাই দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ভোরে আনোয়ার বাসা থেকে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বের হন। পরে খবর পান, তাঁর ভাইকে কাউন্সিল উত্তর শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির গ্যারেজে নিয়ে হাত–পা বেঁধে রাখা হয়েছে। এরপর সেখানে গিয়ে আনোয়ারের হাত–পা বাঁধা ও রক্তাক্ত মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান তাঁর মা।
লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়েছে বলে মৃত্যুর আগের তাঁর মাকে জানিয়েছিলেন আনোয়ার। তাঁর ভাই এ কথা জানিয়ে বলেন, এর কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলেই আনোয়ারের মৃত্যু হয়। এরপর যাত্রাবাড়ীর থানা-পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
গতকাল সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভোরে সঙ্গী সুমনকে নিয়ে আনোয়ার বাসের কাঠামো তৈরির কারখানায় চুরি করতে যান। এ সময় সেখানে থাকা লোকজন তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে। তাঁর সঙ্গী সুমন পালিয়ে যান।