সীতাকুণ্ডে তেলের ডিপোতে ট্যাংক পরিষ্কার করতে গিয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ৩
Published: 22nd, May 2025 GMT
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের জলিলগেট এলাকায় একটি তেলের ডিপোতে ট্যাংকের বর্জ্য পরিষ্কার করতে গিয়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরও তিন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে জামাল কোম্পানি নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন ওই ডিপোতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে অচেতন অবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। আহত শ্রমিকেরা হলেন মীর আহমদ (২৮), মোহাম্মদ আরিফ (২৯), মোস্তফা কামাল (৩৫) ও পেয়ারু হাসান (৩৮)।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আজ রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, মীর আহমদ, মোস্তফা কামাল এবং আরও দুজন অজ্ঞাতপরিচয় শ্রমিককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তির পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, ওই ডিপোতে স্ক্র্যাপ জাহাজ থেকে সংগ্রহ করা পরিত্যক্ত কালো তেল আনা হয়। এসব তেল প্রক্রিয়াজাত করে মবিলসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে বাজারজাত করা হয়। তেল রাখার জন্য একটি সিলিন্ডার আকৃতির ট্যাংক ব্যবহার করা হয়। তেল প্রক্রিয়াজাতের পর ট্যাংকের নিচে জমে থাকা বর্জ্য (গাদ) শ্রমিকেরা পরিষ্কার করেন।
বৃহস্পতিবার রাতে একজন শ্রমিক ট্যাংকের ভেতর নেমে বর্জ্য পরিষ্কার করার সময় অক্সিজেনের অভাবে অচেতন হয়ে পড়েন। তাঁকে উদ্ধারে একে একে আরও তিনজন নামলে তাঁরাও অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে ডিপো কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসকে জানায়।
ফায়ার সার্ভিসের দল গিয়ে চারজনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান। শনিবার (১ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ঘোষিত চূড়ান্ত ফলে দেখা যায়, বুধবারের নির্বাচনে তিনি ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। খবর বিবিসির।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব এবং ব্যাপক অস্থিরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক দিনে সহিংসতায় কয়েক শ’ মানুষ নিহত ও বহু আহত হয়েছে। দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে নিহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকার সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্থিরতা দমনে দেশজুড়ে কারফিউও বাড়ানো হয়েছে।
ক্ষমতাসীন চামা চা মাপিন্দুজি (সিসিএম) দলের প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোটের আগে ভিন্নমত পোষণকারী ও বিরোধীদের ওপর কঠোর দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রধান দুই বিরোধী দলকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।
ফলে নির্বাচনের পরই বৃহত্তম নগরী দার-এস-সালাম ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। অস্থিরতা বন্ধ করার জন্য সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং অসংখ্য গাড়ি, পেট্রোল স্টেশন এবং থানায় আগুন দেয়।
বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারীরা, যারা নির্বাচনকে অন্যায্য বলে সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রধান বিরোধী নেতাদের দমন করে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করছে। প্রধান দুই বিরোধী নেতার মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন এবং অন্যজনকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিরোধী চাদেমা দলের একজন মুখপাত্র শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে তানজানিয়ার একটি কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫০০ জন মারা যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত এই সহিংসতাকে ‘এখানে-সেখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী খুব দ্রুত ও দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছে।”
প্রধান দুই বিরোধী দলীয় নেতার মধ্যে চাদেমা দলের টুন্ডু লিসুকে নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ আটক করা হয়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং এসিটি-ওয়াজালেনডো দলের নেতা লুহাগা এমপিনাকে আইনি কৌশল খাটিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
১৬টি প্রান্তিক দল, যাদের কারোরই ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন ছিল না, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
সামিয়ার ক্ষমতাসীন দল সিসিএম, দেশটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে কখনও কোনো নির্বাচনে সিসিএম হারেনি।
নির্বাচনের আগে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরোধী ব্যক্তিত্বদের জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের নিন্দা জানিয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তানজানিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামিয়া ক্ষমতায় আসেন।
ঢাকা/ফিরোজ