প্রায় ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে বিশাল গ্রহাণুর আঘাতে পৃথিবী থেকে হারিয়ে যায় ডাইনোসর। বিশালকার ডাইনোসর। বিজ্ঞানীদের ধারণা, পৃথিবীতে সে সময় গ্রহাণু আঘাত না হানলে ডাইনোসরের বিভিন্ন প্রজাতি এখনো টিকে থাকত। জীবাশ্ম বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিলুপ্তির আগে ডাইনোসরের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছিল না। তাদের সম্ভাব্য আবাসস্থল স্থিতিশীল ও বিলুপ্তির ঝুঁকি কম ছিল। ডাইনোসর নিয়ে নতুন এ গবেষণার ফলাফল কারেন্ট বায়োলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা ক্রিটেসিয়াস যুগের শেষ অর্থাৎ গ্রহাণুর আঘাতের আগের সময়কার আট হাজারের বেশি জীবাশ্মের তথ্য পরীক্ষা করেছেন। তবে গ্রহাণুর আঘাতের আগের সময় ডাইনোসরের জীবাশ্ম আবিষ্কারের সম্ভাবনা কম। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের বিজ্ঞানী ক্রিস ডিন বলেন, ‘অর্ধেক জীবাশ্ম উত্তর আমেরিকায় পাওয়া গেছে। আমাদের অনুসন্ধান বলছে, এই অঞ্চলে গ্রহাণু আঘাতের আগে ডাইনোসররা ভালোভাবে অবস্থান করছিল। বিভিন্ন শিলার রেকর্ড থেকে বেশি প্রজাতির বৈচিত্র্য দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন অঞ্চলে থাকা ডাইনোসরদের মধ্যে অনেক বৈচিত্র্য ছিল বলে মনে করছেন গবেষকেরা।’

আরও পড়ুনডাইনোসর ফিরিয়ে আনতে চান বিজ্ঞানীরা২৫ নভেম্বর ২০২৪

এ বিষয়ে বিজ্ঞানী আলেসান্দ্রো চিয়ারেনজা বলেন, মেসোজোয়িক সময়ের শেষ নাগাদ সম্ভবত ডাইনোসরের অনিবার্যভাবে বিলুপ্তির সুযোগ ছিল না। যদি সেই সময় গ্রহাণু আঘাত না করত, তাহলে তারা স্তন্যপায়ী বিভিন্ন প্রাণীর সঙ্গেই বসবাস করত।

সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট

আরও পড়ুনটি–রেক্সের দাদা-দাদি কারা ছিল১২ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত র আগ গ রহ ণ

এছাড়াও পড়ুন:

কোটি টাকার সেতুর ওপর ২২ বছরেও চলতে পারেনি গাড়ি

তিন দিকে নেই বাড়িঘর। একদিকে নিচু কাঁচা রাস্তার শেষ মাথায় একটি খাল। খালের অন্য পাশে রাস্তার কোনো অস্তিত্ব নেই। কিন্তু সেই খালের ওপর কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে পুতলাকান্দা সেতু। রাস্তা না থাকায় সেতুটি মানুষের কোনো কাজে আসছে না। সংযোগ সড়কবিহীন সেতুটির অবস্থান নান্দাইল উপজেলার দাতারাটিয়া গ্রামে।
নান্দাইল সদর ইউনিয়নের নান্দাইল-খালবলা পাকা সড়কে ডিমেরঘাট নামে একটি জায়গা রয়েছে। সেখান থেকে একটি সড়ক কাটলীপাড়া মহল্লার ভেতর দিয়ে বলদা বিলের কাছাকাছি দাতারাটিয়া (পুতলাকান্দা) গ্রামের নলা খালের পারে চলে গেছে। সড়কটির পৌরসভা অংশের এক কিলোমিটার পাকা হলেও বাকিটা কাঁচা। দেখলেই বোঝা যায় সেখানে লোক চলাচল কম। খালটি ঝালুয়া বাজারের পাশ দিয়ে লংগাড় পার হয়ে নরসুন্ধা নদীতে গিয়ে মিশেছে। বলদা বিলের পানি এই খাল দিয়েই নরসুন্ধা নদীতে যায়। খালের দক্ষিণ পাশে দাতারাটিয়া গ্রাম। সেখানে আঁকাবাঁকা আইলের মতো রেকর্ডের রাস্তা থাকলেও ছোটখাটো যানবাহন চলাচল দূরে থাক, হেঁটে যাতায়াতও কষ্টকর। অথচ এই পথেই আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা নান্দাইল উপজেলা সদরসহ ঝালুয়া বাজারের সঙ্গে খুব সহজে যোগাযোগ করতে পারেন।
গুরুত্ব বিবেচনা করে ২০০১ সালে নান্দাইল উপজেলা স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ওই খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণকাজ শুরু করে। প্রায় ৩৭ মিটার দৈর্ঘ্য ও তিন মিটার প্রশস্থ সেতুটি নির্মাণে কত টাকা বরাদ্দ ছিল তা জানা না গেলেও প্রায় কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের। কিন্তু কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতটিু রাস্তার অভাবে ২২ বছর ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, সেতুটির দক্ষিণ পাশ ছাড়া অন্য পাশে কাছাকাছি কোনো বসতি নেই। উত্তর পাশে নিচু মাটির রাস্তা থেকে সেতুটির অবস্থান অনেক ওপরে। সেতুর দক্ষিণ পাশে রাস্তার কোনো অস্তিত্ব নেই।
কাটলীপাড়া গ্রামের সেকান্দর আলী জানান, রাস্তা না থাকায় এ পথে লোকজন না এসে ভিন্নপথে চলাচল 
করেন। কখনও না জেনে সাইকেলে করে আইসক্রিম বিক্রেতারা এ পথে চলে এলে ছোট ছেলেমেয়েদের সহায়তা নিয়ে সেতুটি পার হতে হয়। এ কাজের জন্য আইসক্রিম ব্যয় করতে হয় তাদের।
দাতারাটিয়া গ্রামের সদুত মিয়া বলেন, সেতুর দক্ষিণ পাশে চলাচলের অনুপযোগী আঁকাবাঁকা আইলের মতো রেকর্ডের রাস্তা আছে। সেতু নির্মাণের সময় কথা ছিল সেগুলো সোজা করে প্রশস্থ রাস্তা তৈরি করা হবে। কিন্তু আশপাশের জমির মালিকরা জায়গা দিতে রাজি না হওয়ায় আর রাস্তা তৈরি করা যায়নি।
এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আব্দুল মালেক বিশ্বাস জানান, অনেক আগে নির্মিত সেতুটির কাগজপত্র জেলা অফিসে আছে। তাই কাগজপত্র না দেখে কিছু বলতে পারছেন না। তবে দু-এক দিনের মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে সড়ক নির্মাণের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ