কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবট দেবে ফিজিওথেরাপি
Published: 20th, May 2025 GMT
দেশে প্রথম রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার চালু হচ্ছে। বুধবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) সুপারস্পেশালাইজড হাসপাতালের বেজমেন্ট-১ এ নির্মিত কেন্দ্র উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। উপস্থিত থাকবেন ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
বিএমইউর একাধিক কর্মকর্তা ও চীনা দূতাবাস জানায়, চীনের সহায়তায় স্থাপিত রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে মিলবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগের বিশ্বমানের সেবা। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতরা প্রথমে বিনামূল্যে সেবা নেওয়ার সুযোগ পাবেন। কারও সহযোগিতা ছাড়াই রোগীর চাহিদা অনুযায়ী সেবা দিতে সক্ষম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন (এআই) ২২টি রোবট কেন্দ্রে স্থাপন করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, কেন্দ্রটি চালুর জন্য প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের যন্ত্রপাতি দিয়েছে চীন সরকার। মোট রোবট রয়েছে ৬২, যার মধ্যে ২২টি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন। কেন্দ্রে জুলাই গণঅভ্যুত্থানসহ যারা দীর্ঘমেয়াদে সমস্যায় ভুগছেন ও যাদের পুনবার্সন প্রয়োজন, তাদের সেবা দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে সাধারণ রোগীর জন্য উন্মুক্ত করা হবে। তবে কত টাকায় কী সেবা, সে তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।
কেন্দ্রের প্রধান অধ্যাপক ডা.
তিনি বলেন, ‘ফিজিক্যাল মেডিসিনের চিকিৎসকরা রোবটগুলো ডিল করবেন। এ জন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে চীনের কারিগরি দল। আগামী ১০ দিন প্রশিক্ষণ চলবে। কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হলে গড়ে দিনে ৩০০ রোগী থেরাপি নিতে পারবেন।’
গণঅভ্যুত্থান-সংক্রান্ত বিশেষ সেলের তথ্য, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ১১ হাজার ৩০৬ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুলিতে আহত ৮০ শতাংশের অবস্থা খুবই জটিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য ইতোমধ্যে ৪৭ জনকে বিদেশে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ১২ জনকে ব্যয়বহুল রোবটিক ফিজিওথেরাপি দেওয়া হচ্ছে।
বিএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলম জানান, যেসব রোগীর ফিজিক্যাল ও নিউরোলজিক্যাল ক্ষতি হয়েছে, কেন্দ্রে তাদের কার্যকরী চিকিৎসা মিলবে। মেরুদণ্ডের ইনজুরির কারণে পক্ষাঘাতগ্রস্তরা নিতে পারবেন বিশেষভাবে কাস্টমাইজড রোবটিক সেবা। দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ব বা নার্ভ ইনজুরিতে যারা ভুগছেন, তাদের জন্য রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি ফিজিক্যাল থেরাপির ব্যবস্থা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
শাবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর সেমিনার
জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের করা তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশের ওপর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটোরিয়ামে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
আরো পড়ুন:
শাকসুর নির্বাচন কমিশন ঘোষণা
শাকসুর রোডম্যাপের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি
অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) এবং সহযোগিতায় ছিলেন ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটরস অফিস (ইউএনআরসিও)।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএম সরওয়ার উদ্দিন চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইসমাইল হোসেন, রাজনৈতিক অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাবুল হক ও অধ্যাপক ড. দিলারা রহমান।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস অফিসার জাহিদুল হোসেন।
তিনি বলেন, “ইউএন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্টে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে মোট ৪৩টি সুপারিশ করেছি। এ সুপারিশগুলো সবার পড়া উচিত। পহেলা জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যা ঘটেছে, জাতিসংঘ সেটিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত করেছে।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা এই আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ে করছি, কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই রাষ্ট্রের মস্তিষ্ক। রাষ্ট্র হলো শরীর, আর ছাত্ররা দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। বাংলাদেশের দুই ধরনের অপরাধ আছে— দেওয়ানী ও ফৌজদারি। ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির সংঘাত মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, কিন্তু রাষ্ট্র যখন জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চালায়, তখনই মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটে। রাষ্ট্র যদি কোনো সিস্টেমকে দমন বা হরণ করে, তখন তা মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হয়।”
জাহিদুল হোসেন আরও বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হেলমেট বাহিনী যে সহিংসতা ঘটিয়েছে, তা ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয়, কারণ রাষ্ট্র তাদেরকে সহযোগিতা দিয়েছে। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট আকাশ থেকে পড়েনি—বাংলাদেশে যা ঘটেছে, সেটিই এখানে প্রতিফলিত হয়েছে। তাই এই রিপোর্ট সবাইকে পড়া উচিত।”
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এম. সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশে এক অদ্ভুত ধরনের সরকারের বিরুদ্ধে এই বিপ্লব হয়েছিল— আয়নাঘর সরকার, রাতের ভোটের সরকার। যারা এ সরকারের পতনে ভূমিকা রেখেছেন, তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। জুলাই চেতনা ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। শেখ হাসিনার ভুয়া ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে বেরিয়ে এসে সত্যিকার জনগণের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।”
এছাড়া অনুষ্ঠানে জুলাই বিপ্লবে শহীদ নয়া দিগন্তের সিলেট ব্যুরো প্রধান তুরাবের বড় ভাই আবদুল জাবের উপস্থিত থেকে স্মৃতিচারণ ও বক্তব্য রাখেন।
সেমিনার শেষে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্টভিত্তিক প্রকাশনা, মানবাধিকার সংক্রান্ত বই, নীতিমালা ও স্মারক টি-শার্ট বিতরণ করা হয়।
ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী